বাণী

আমার সারা জনম কেঁদে গেল
	(কবে) শেষ হবে মোর কাঁদা।
পথে পথে ঘুরে মরি, পদে পদে বাধা।।
	বাঁচ্‌তে চাইরে যে ডাল ধরে’
	সে ডাল অম্‌নি ভেঙে পড়ে,
সুখের আশায় ছুটে ছুটে দুঃখ হ’ল সাধা।।
দুঃখী জনের বন্ধু কোথায় দীনের সহায় কোথা,
(নাই) অসহায়ের তরে বুঝি বিধাতারও ব্যথা।
	আকুল হয়ে কাঁদি যত
	বেড়ে ওঠে বোঝা তত,
আদায় ক’রে ফিরি যেন আমি দুখের চাঁদা।।

বাণী

বাগিচায়		বুলবুলি তুই ফুল শাখাতে দিসনে আজি দোল
আজো তার		ফুল কলিদের ঘুম টুটেনি তন্দ্রাতে বিলোল।।
আজো হায়		রিক্ত শাখায় উত্তরী বায় ঝুরছে নিশি-দিন
আসেনি		দখনে হাওয়া গজল গাওয়া মোমাছি বিভোল।।
কবে সে		ফুল কুমারী ঘোমটা চিরি', আসবে বাহিরে (রে)
শিশিরের		স্পর্শ-সুখে ভাঙবে রে ঘুম রাঙবে রে কপোল।
ফাগুনের		মুকুল-জাগা দু'কূল ভাঙা আসবে ফুলেল বান
কুঁড়িদের		ওষ্ঠ পুটে লুটবে হাসি ফুটবে গালে টোল।।
কবি তুই		গন্ধে ভুলে ' ডুবলি জলে কূল পেলিনে আর
ফুলে তোর		বুক ভ'রেছিস আজকে জলে ভররে আঁখির কোল।।

বাণী

ঝরাফুল-বিছানো পথে এসো বিজন-বাসিনী।
জোছনায় ছড়ায়ে হাসি এসো সুচারু-হাসিনী।।
	এসো জড়ায়ে তব তনুতে
	গোধূলী রামধনুতে,
পাপিয়া-পিক-কূজনে গাহিয়া মধু-ভাষিণী।।
	ছন্দ-দোদুল্ গতি
	এসো নোটন্ কপোতী,
বহায়ে মনের মরুতে আনন্দ-মন্দাকিনী।।

বাণী

জগতের নাথ কর পার হে
মায়া-তরঙ্গে টলমল তরণী অকুল ভব পারাবার হে।।
নাহি কাণ্ডারি ভাঙা মোর তরী আশা নাই কুলে উঠিবার
আমি গুণহীন ব'লে করো যদি হেলা শরণ লইব তবে কার।।
সঙসারেরি এই ঘোর পাথারে ছিল যারা প্রিয় সাথি
একে একে তারা ছাড়িয়া গেল হায় ঘনাইল যেই দুখ-রাতি।
	ধ্রুবতারা হয়ে তুমি জ্বালো
	অসীম আঁধারে প্রভু আশারই আলো
তোমার করুণা বিনা হে দীনবন্ধু, পারের আশা নাহি আর।।

বাণী

তরুণ প্রেমিক প্রণয় বেদন জানাও জানাও বেদিল প্রিয়ায়।
ওগো বিজয়ী নিখিল হৃদয় কর কর জয় মোহন মায়ায়।।
নহে ঐ এক হিয়ার সমান হাজার কাবা হাজার মস্‌জিদ;
কি হবে তোর কাবার খোঁজে, আশয় খোঁজ তোর হৃদয় ছায়ায়।।
প্রেমের আলোয় যে দিল্‌ রোশন, যেথায় থাকুক সমান তাহার —
খোদার মস্‌জিদ মুরত–মন্দির ঈসাই–দেউল ইহুদ–খানায়।।
অমর তার নাম প্রেমের খাতায় জ্যোতির্লেখায় রবে লেখা,
দোজখের ভয় করে না সে, থাকে না সে বেহেশ্‌ত্‌ আশায়।।

বাণী

নৃত্যকালী শঙ্কর সঙ্গে নাচে অতি রুদ্র-বিহঙ্গে।
ছন্দ ঝরে ঝর্ঝর ধারায় মন্দাকিনী গঙ্গা তরঙ্গে।।
মুক্তবেণী ধূর্জটি-জটা বিধূনিত অম্বরে দোলে
সসাগরা ভীতা পৃথ্বী কাঁপে মহাবিষ্ণুর কোলে,
বাজে ঘোর ডম্বরু শিঙ্গা উল্কা ছোটে ভ্রুকুটি ভঙ্গে।।
মৃত্যু-ক্ষুধা জাগিল একি রে, সৃষ্টি-স্থিতি সংহার মানসে।
পঞ্চভূত চিত্ত অহঙ্কার ব্রহ্মা-হরি লয় হ’ল ব্রহ্মে
উগ্র তারা রুদ্রেরে আবরি’ নাচে একা উন্মাদ দম্ভে,
একি হেরি মূর্ছিতা শক্তি সোহম্ শিব আমারি অঙ্গে।।