বাণী

আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে।
সকলি দিয়াছি মোর ঠাকুরের রাঙা চরণের তলে॥
		মোর দেহ-প্রাণ, জাতি কুল মান,
		লজ্জা ও গ্লানি আর অভিমান;
(আমি) দিছি চিরতরে জলাঞ্জলি গো কালো যমুনার জলে॥
মোরে যদি কেহ ভালোবাসে আজ জল আসে আঁখি ভ’রে।
মোর ছল ক’রে সে যে ভালোবাসে মোর শ্যামসুন্দরে।
মোরে		না বুঝিয়া কেহ করিলে আঘাত
		কেঁদে বলি, ওরে ক্ষমা করো নাথ্
বৃন্দাবনে যে প্রেম মধুর হয় আঘাত নিন্দাছলে॥

বাণী

এসো প্রিয়, মন রাঙায়ে ধীরে ধীরে ঘুম ভাঙায়ে
মন মাধবী বন দুলায়ে, দুলায়ে, দুলায়ে।।
শোন ‘পিউ পিউ’ ডাকে পাপিয়া
মোরে সেই সুরে ডাক ‘পিয়া, পিয়া’
তব আদর-পরশ বুলায়ে, বুলায়ে, বুলায়ে।।
	যদি আন কাজে ভুলে রহি
	চলে যেও না হে মোর বিরহী
দিও প্রিয়, কাজ ভুলায়ে, ভুলায়ে, ভুলায়ে।।

বাণী

বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে
তার বাঁশির সুর শুনি পবনে॥
	রাঙা সে চরণের নূপুর-রোলে রে
	আকুল এ হৃদয় পুলকে দোলে রে
সে নূপুর শুনি’ নাচে ময়ূর কদম তমাল-বনে॥
	বুঝি সেই শ্যামের পরশ লাগিল
	আমার চরণে তাই নাচন জাগিল —
ঘিরি শ্যামে দখিন-বামে নেচে বেড়াই আপন মনে॥
	এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায়
	জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায়
খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥

বাণী

প্রিয়	তব গলে দোলে যে হার কুড়িয়ে পাওয়া
সে যে	হার নহে, হৃদয় মোর হারিয়ে যাওয়া।।
	তোমারি মতন যেন কাহার সনে
	সেদিন পথে চোখাচোখি হল গোপনে
মন	চকিতে হরিল যে সেই চকিত চাওয়া।।
ছিল	চৈতালি সাঁঝ, তাহে পথ নিরালা
ছিনু	একেলা আমি, চলে একেলা বালা
বহে	ঝিরিঝিরি ধীরি-ধীরি চিতী হাওয়া
	চাহিল সে মুখে মোর ঘোমটা তুলে
তার	নয়নে ও ঘটে জল উঠিল দুলে
	চেয়ে দেখি মোর আঁখি সলিল ছাওয়া।।

বাণী

এ কি অপরূপ যুগল-মিলন হেরিনু নদীয়া ধামে
বিষ্ণুপ্রিয়া লক্ষী যেন রে গোলক-পতির বামে।।
	এ কি অতুলন যুগল-মূরতি
	যেন শিব-সতী হর-পার্বতী,
জনক-দুহিতা সীতাদেবী যেন বেড়িয়া রয়েছে রামে।।
	গৌরের বামে গৌর-মোহিণী
	(যেন) রতি ও মদন চন্দ্র-রোহিণী
(তোরা) দেখে যা রে আজ মিলন-রাসে যুগল রাধা-শ্যামে।।

নাটক: ‘বিষ্ণুপ্রিয়া’

বাণী

একি সুরে (কোন্ সুরে) তুমি গান শুনালে ভিনদেশি পাখি
এ যে সুর নহে, মদির সুরা, রে সুরের সাকি।।
		বসি’ মোর জানালা পাশে
		কেন বুক-ভাঙা নিরাশে
যাও ঘুম ভাঙায়ে নিতি সকরুণ সুরে ডাকি।।
তোর ও সুরে কাঁদছে ঊষা অস্ত চাঁদের গলা ধ’রে
ভোর-গগনের কপোল বেয়ে শিশির-অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
		আমি রইতে নারি ঘরে
		কেন প্রাণ কেমন করে
আমার মন লাগে না কাজে, আর জলে ভরে আঁখি।।