বাণী

হেলে দুলে চলে বন-মালা গলে গোঠ-বিহারী বনে বনমালী সাজে।
বঙ্কিম শিখী পাখা শোভিত অলক চন্দন তিলক ললাটে রাজে।।
	পথের ধুলি হরি চরণ পরশে
	হল সুরভিত হরি-চন্দন হরষে,
নিখিল-ভক্ত-প্রাণ চরণে নূপুর হয়ে রুমু ঝুমু বাজে।।
	তৃণ নাহি পরশে উচাটন ধেনু সব
	বংশী-বট-তলে শোনে শ্যাম বেণুরব,
অপরূপ অভিনব প্রেম অনুভব, জাগে ব্রজ-গোপীকার প্রাণের মাঝে।।

বাণী

বেদনার বেদীতলে পেতেছি আসন, হে দেবতা!
সেথা আর কেহ নাই আমরা দু’জন, কহিব কথা।।
	বাহির ভুবনে তব কত পূজারি
	সেথায় মনের কথা কহিতে নারি,
তাই হৃদয় দেউলে রেখে’ দিয়েছি আগল —
সেথা তোমার চরণ-তলে জানাব গোপন প্রাণের ব্যথা।।
	পূজা-মন্দির হ’তে এসে চুপে চুপে
	হে দেবতা! সাজায়েছি প্রিয় রূপে!
সবার সমুখে তাই মালা দিতে লাজ পাই —
প্রেমের বাসর ঘরে পরাব বরণ-মালা, হব প্রণতা।।

বাণী

বঁধু	আমি ছিনু বুঝি বৃন্দাবনের রাধিকার আঁখি-জলে।
	বাদল সাঁঝের যুঁই ফুল হয়ে আসিয়াছি ধরাতলে।।
তাই	যেমনি মিলন সাধ ওঠে জেগে
তুমি	লুকাও হে চাঁদ বিরহের মেঘে,
আমি	পূবালী পবনে ঝরে যাই বনে দলগুলি যেই খোলে।।
বঁধু	এই বুঝি হায় নিয়তির লেখা মিলন আমার নহে —
	ক্ষনিকের শুভ-দৃষ্টি লভিয়া কাঁদিব পরম বিরহে।
			বুঝি মিলন আমার নহে —
		আসিব না আমি মাধবী নিশীথে
		বরষায় শুধু আসিব ঝুরিতে,
	অসহায় ধারা-স্রোতে ভেসে যাব, মালা হব নাকো গলে।।

বাণী

জাগো বিরাট ভৈরব যোগ সমাধি মগ্ন।
ভুবনে আনো নব দিনের শুভ প্রভাত লগ্ন।।
	অনন্ত শয্যা ছাড়ি’ অলখ লোকে
	এসো জ্যোতির পথে,
দেব-লোকের তিমির-কারা-প্রাচীর কর ভগ্ন।।
ভয়হীন, দ্বিধাহীন উদার আনন্দে,
তোমার আবির্ভাব হোক প্রবল ছন্দে।
হোক মানব স্বপ্রাকশ আপন স্বরূপে
বিরাট রূপে, সফল কর আমার সোহং স্বপ্ন।।

সঙ্গীতালেখ্য : ‘ষট ভৈরব’

বাণী

কিশোর রাখাল বেশে মেষ চারণে যায় নবী
নীল রেশমি রুমাল বেঁধে তার চারু-চাঁচর কেশে।
তাঁর রাঙা পদতলে পুলকে ধরা টলে
তাঁর রূপ -লাবনির ঢলে মরুভূমি গেল ভেসে।।
তাঁর মুখে রহে চাহি মেষ-শিশু তৃণ ভুলি‌'
বিশ্বের শাহানশাহ আজ মাখে গোঠের ধূলি,
তাঁর চরণ-নখরে কোটি চাঁদ কেঁদে মরে
তাঁর ছায়া ক'রে চলে আকাশে মেঘ এসে।।
কিশোর নবী গোঠে চলে
তাঁর চরণ-ছোঁয়ায় পথের পাথর মোম হয়ে যায় গ'লে
তসলিম জানায় পাহাড় চরণে ঝুকে তাঁহার।
নারাঙ্গি,আঙুর,খরজুর,পায়ে নজরানা দেয় হেসে।।

বাণী

(মম)	প্রাণ নিয়ে নিঠুর খেল এ কি খেলা (হায়)।
	ক্ষণে ভালোবাসা হায় ক্ষণে অবহেলা।।
	সকালে গাঁথিয়া মালা পায়ে দল বিকালে তায়।
	তেমনি দলিতে চাহ আমার পরান কি হায়।
	সহিতে পারি না আর এই হেলাফেলা।।
	জলরূপী একি কোন্ মরীচিকা তুমি কি গো।
	ডেকে এনে মরুভূমে বধিবে এ বনমৃগ।
	বুঝিয়াছি কখন হায় ফুরায়েছে বেলা।।