বাণী

পুরবের তরুণ অরুণ পুরবে আস্‌লো ফিরে।
কাঁদায়ে মহাশ্বেতায় হিমানীর শৈল-শিরে।।
	কুহেলির পর্দা ডারি’
	ঘুমাত রূপ-কুমারী,
জাগালে স্বপনচারী — তাহারে নয়ন-নীরে।।
তোমার ঐ তরুণ গলার শুনি গান সিন্ধু-পারে,
দুলিছ মধ্যমণি সুরমার কণ্ঠ-হারে।
	ধেয়ানী দিলে ধরা
	হ’ল সুর স্বয়ম্বরা,
এলে কি পাগল-ঝোরা — পাষাণের বক্ষ চিরে’।

বাণী

শিউলি ফুলের মালা দোলে শারদ-রাতের বুকে ঐ
এমন রাতে একলা জাগি সাথে জাগার সাথি কই।
	বকুল বনে এক্‌লা পাখি,
	আকুল হ’ল ডাকি’ ডাকি’,
আমার প্রাণ থাকি’ থাকি’ তেমনি কেঁদে১ ওঠে সই।।
কবরীতে করবী ফুল পরিয়া প্রেমের গরবিনী
ঘুমায় বঁধু-বাহু পাশে, ঝিমায় দ্বারে নিশীথিনী।
ডাকে আমায় দূরের বাঁশি কেমনে আজ২ ঘরে রই।।

১. ডেকে, ২. আর

বাণী

ইয়া মোহাম্মদ, বেহেশেত্‌ হতে খোদায় পাওয়ার পথ দেখাও
এই দুনিয়ার দুঃখ থেকে এবার আমায় নাজাত দাও।।
পীর মুর্শীদ পাইনি আমি, তাই তোমায় ডাকি দিবস-যামী,
তোমারই নাম হউক হজরত আমার পরপারের নাও।।
অর্থ-বিভব-যশ-সম্মান চেয়ে চেয়ে নিশিদিন
দুঃখে শোকে জ্ব’লে মরি পরান কাঁদে শ্রান্তিহীন।
আল্লা ছাড়া ত্রিভুবনে, শান্তি পাওয়া যায় না মনে
কোথায় পাব সে আবহায়াত ইয়া নবীজী রাহ্‌ বাতাও।।

বাণী

সেদিন নিশীথে মোর কানে কানে যে কথাটি গেছ বলে
প্রথম মুকুল হয়ে সেই বাণী মালতী লতায় দোলে।।
	সে-কথাটি আবার শুনিবে বলিয়া
	আড়ি পাতে চাঁদ মেঘে লুকাইয়া
চাহে চুপি চুপি পিয়াসি পাপিয়া ঘন পল্লব তলে।।
বসে আছি সেই মালতী বিতানে আজ তুমি নাই কাছে —
ম্লান মুখে পথ চাহে ফুলগুলি আঁধার বকুল গাছে।
	দখিনা বাতাস করে হায় হায়
	ঝরিছে কুসুম শুকনো পাতায়
নিবু নিবু হল তোমার আশায় চাঁদের প্রদীপ জ্বলে।।

বাণী

শোন্ 	ও-সন্ধ্যা-মালতী, বালিকা তপতী
	বেলা শেষের বাঁশি বাজে, বাজে।
	শোনো মাধবী চাঁদের মধুর মিনতি
	উদাস আকাশ মাঝে।।
তব	মৌন ব্রত ভাঙ্গো কও কথা কও
মোর	নৃত্য আরতির সঙ্গিনী হও,
	মাধবী হেনা হের এলো বাহিরে —
	রসরাজে হেরি’ রাস-নৃত্যের সাজে।।
তুমি	যার লাগি’ সারাদিন, বিরহ ধ্যান-লীন একাকিনী কুঞ্জে।
	সুন্দর দাঁড়ায়ে তব দ্বারে আঁধারে
	মঞ্জরি-দীপ জ্বালো ডাকো তারে,
	বুকের চন্দন-সুরভি ঢালো —
	পাতার আঁচলে মুখ ঢেকো না লাজে।।

বাণী

রাখাল রাজ! কি সাজে সাজালে আমায় আজ!
আমার ঘরের ভূষণ কেড়ে নিয়ে দিলে চির-পথিক সাজ।।
তোমার পায়ের নূপুর আমায় দিয়ে ঘোরাও পথে-ঘাটে নিয়ে,
বেড়াই বাউল একতারা বাজিয়ে হে, (ও মরি হায় রে)
এই ভুবন-নাটে বেড়াই ভুলে শরম-ভরম-লাজ।।
তোমার নৃত্য-খেলার নিত্য-সাথি আনন্দেরি গোঠে হে,
জীবন-মরণ আমার সহজ চরণ-তলে লোটে হে।
আমার হাতে দিলে সর্বনাশী ঘর-ভোলানো তোমার বাঁশি,
কাজ ভুলাতে যখন তখন আসি হে’ (ও মরি হায় রে)
আমার ভবন কেড়ে — দিলে ছেড়ে বিশ্বভুবন-মাঝ।।