ফিরে ফিরে দ্বারে আসে যায়
বাণী
ফিরে ফিরে দ্বারে আসে যায় কে নিতি। তার অধরে হাসি আর নয়নে প্রীতি।। দোদুল্ তাহার কায়া ঘনায় চোখে মায়া, জেগে ওঠে দেখে তা’য় পুরানো স্মৃতি।। তাহার চরণ-পাতে তাহার সাথে সাথে, আসে আঁধার রাতে শুক্লা চাঁদের তিথি।। গেলে মন দিতে চাহে না সে নিতে, ধরিতে গেলে চোখে সে কী তার ভীতি।। ডাকি প্রিয় ব’লে তবু যায় সে চ’লে, পায়ে পায়ে দ’লে হৃদয় ফুল-বীথি।।
গোধূলির শুভ লগন এনে
বাণী
গোধূলির শুভ লগন এনে সে কেন বিদায়ের বাঁশি বাজায়। ওর মিলনের মালা ভালো লাগে না বুঝি গো, ও-শুধু বিরহের অশ্রু চায়।। কে জানিত ও-বিরহ-বিলাসী সকালের ফুল চায়, সন্ধ্যায় উদাসী, দিনে যে ধরা দেয় দীনের মতন রাতে সে শূন্যে কেন মিশে যায়।। ঘরে এনে কেন ভোলাতে চায় ঘর আত্মা জড়ায়ে কাঁদে, আত্মীয়ে করে পর, প্রেম-কৃপা-ঘন সে নাকি সুন্দর — কেন তবে অসহ দুঃখ দিয়ে কাঁদায়।।
আমি রবি-ফুলের ভ্রমর
বাণী
আমি রবি-ফুলের ভ্রমর। তা’র আলোক-মধু প্রিয়ে আমি আলোর মধুপ অমর।। ঐ শ্বেত-শতদল ফুটলো যেদিন গভীর গগন নীল সায়রে তা’র আলোর শিখা আকাশ ছেপে ছড়িয়ে গেল বিশ্ব ‘পরে — স্তরে স্তরে, সেই বহ্নি-নলের পরাগ-রেণু আমিই যেন প্রথম পেনু, প্রথম পেনু গো তাই বাহির পানে ধেয়ে এনু গেয়ে আকুল স্বরে। আজ জাগো জগৎ! ঘুম টুটেছে বিশ্বে নিবিড় তমোর।। তাঁ’র জাগরণীর অরুণ কিরণ — গন্ধ যেদিন নিশি-শেষে এই অন্ধ জগৎ জাগিয়ে গেল আকাশ-পথের হাওয়ায় ভেসে — হঠাৎ এসে; আমি ঘুম-চোখে মোর পেনু আভাস, ঘরের বাহির করা সে-বাস ভাঙলে আবাস মোর।। তাই কূজন-বেণু বাজায়ে চলি আলোর দেশের শেষে যথা সহস্রদল কমল, আনন জাগ্ছে প্রিয়তমর।। যেন এ শ্বেত-সরোজ-সরোদ বাঁধা সপ্ত সুরের রঙিন তারে রচ্ছে সুরের ইন্দ্রধনু গগন-সীমায় তোরণ-দ্বারে তমোর ‘পারে, তার সে-সুর বাজি’ আমার পাখায় গহন-গহন শাখায় শাখায় তারায় কাঁপায় গো। জাগে ঐ কমলে পরশ প্রিয়ার চরণ নিরুপমর।।
দোলে বন-তমালের ঝুলনাতে
বাণী
দোলে বন-তমালের ঝুলনাতে কিশোরী-কিশোর চাহে দুঁহু দোঁহার মুখপানে চন্দ্র ও চকোর, যেন চন্দ্র ও চকোর প্রেম-আবেশে বিভোর।। মেঘ-মৃদঙ বাজে সেই ঝুলনের ছন্দে রিম ঝিম বারিধারা ঝরে আনন্দে হেরিতে যুগল শ্রীমুখ চন্দে গগনে ঘেরিয়া এলো ঘন-ঘটা ঘোর।। নব নীরদ দরশনে চাতকিনী প্রায় ব্রজ-গোপিনী শ্যামরূপে তৃষ্ণা মিটায় গাহে বন্দনা-গান দেব-দেবী অলকায় ঝরে বৃষ্টিতে সৃষ্টির প্রেমাশ্রু-লোর।।
আহার দেবেন তিনি রে মন
বাণী
আহার দেবেন তিনি রে মন জিভ দিয়াছেন যিনি। তোরে সৃষ্টি ক'রে তোর কাছে যে আছেন তিনি ঋণী।। সারা জীবন চেষ্টা ক'রে,ভিক্ষা-মুষ্টি আনলি ঘরে (ও মন) তাঁর কাছে তুই হাত পেতে দেখ কি দান দেন তিনি।। না চাইতে ক্ষেতের ফসল পায় বৃষ্টির জল তুই যে পেলি পুত্র-কন্যা তোরে কে দিল তা বল। যাঁর করুণায় এত পেলি,তাঁরেই কেবল ভুলে গেলি (তোর) ভাবনার ভার দিয়ে তাঁকে ডাক রে নিশিদিন-ই।।