বাণী

মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে বিদায় সন্ধ্যাবেলা –
আমি দাঁড়ায়ে রহিনু এপারে তুমি ওপারে ভাসালে ভেলা।।
সেই সে বিদায় ক্ষণে
শপথ করিলে বন্ধু আমার, রাখিবে আমারে মনে,
ফিরিয়া আসিবে খেলিবে আবার সেই পুরাতন খেলা।।
আজো আসিলে না হায়,
মোর অশ্রুর লিপি বনের বিহগী দিকে দিকে লয়ে যায়,
তোমারে খুঁজে না পায়।
মোর গানের পাপিয়া ঝুরে
গহন কাননে তব নাম লয়ে আজো পিয়া পিয়া সুরে;
গান থেমে যায়, হায় ফিরে আসে পাখী বুকে বিঁধে অবহেলা।।

বাণী

বেসুর বীণায়	ব্যথার সুরে বাঁধ্‌ব গো
পাষাণ-বুকে	নিঝর হয়ে কাঁদব গো।।
কুলের কাঁটায়	স্বর্ণলতার দুল্‌ব হার,
ফণীর ডেরায়	কেয়ার কানন ফাঁদ্‌ব গো।।
ব্যাধের হাতে	শুনব সাধের বঙশী-সুর,
আস্‌লে মরণ	চরণ ধ’রে সাধব গো।।

বাণী

রহি' রহি' কেন সে-মুখ পড়ে মনে
ফিরায়ে দিয়াছি যারে অনাদরে অকারণে।
উদাসী অলস দুপুরে
মন উড়ে' যেতে চায় সুদূরে
যে বন-পথে সে ভিখারির বেশে
করুণা জাগায়ে ছিল সকরুণ নয়নে।।
তার বুকে ছিল তৃষ্ণা মোর ঘটে ছিল বারি
পিয়াসি ফটিকজল জল পাইল না গো
ঢলিয়া পড়িল হায় জলদ নেহারি।
তার অহ্জলির ফুল পথ-ধূলিতে
ছড়ায়েছি-সেই ব্যথা নারি ভুলিতে
অন্তরালে যারে রাখিনু চিরদিন
অন্তর জুড়িয়া কেন কাঁদে সে গোপনে।।

বাণী

ওমা	তোর চরণে কি ফুল দিলে পূজা হবে বল।
	রক্ত-জবা অঞ্জলি মোর হ’লো যে বিফল।।
		বিশ্বে যাহা আছে মাগো
		তাতেও পূজা হবে নাকো,
	তাই তো দুঃখে নয়নে মোর শুধুই আসে জল।।
	মনের কোণে অর্ঘ্য রচি’ আঁধার ঘরে একা,
	ডাকলে তোরে সকল ভুলে দিবি না তুই দেখা।
		তখন কি মা দুঃখ-হরা
		শেষ হবে না অশ্রুধারা,
	কি ফুলে তোর পূজা হবে বল — কেন করিস্ ছল।।

বাণী

নতুন খেজুর রস এনেছি মেটে কলস ভ'রে
ভিন গাঁ হতে এনে গো রস-পিয়াসি
ও আমার রস-পিয়াসি রসিক জনের তরে।।
	মিঠে রোদে শীতের দিনে
	তরুণ-বঁধূ লও গো কিনে
ফাগুন-হাওয়া বইবে প্রাণে, ওগো হালকা নেশার ঘোরে।।
মলিন মুখে দিয়ে দেখ নলিন খেজুর-গুড়
বাহির-ভিতর হবে তাহার মিষ্টিতে ভরপুর
	ওগো মিষ্টিতে ভরপুর।
	মোর তনুর চেয়ে অনেক বেশি
	মধুর এ রস ও বিদেশি,
রস না পিয়েও ঝিমিয়ো না গো নেশায় অমন ক'রে।।

বাণী

তোমার নামে একি নেশা হে প্রিয় হজরত।
যত চাহি তত কাঁদি, আমার মেটে না হসরত।।
কোথায় আরব কোথায় এ হিন্দ্
নয়নে মোর নাই তবু নিন্দ
প্রাণে শুধু জাগে (তোমার) মদিনার ঐ পথ।।
কে বলে তুমি গেছ চলে হাজার বছর আগে
আছ লুকিয়ে তুমি প্রিয়তম আমার অনুরাগে।
মোর অন্তরের হেরা গুহায়
আজো তোমার ডাক শোনা যায়
জাগে আমার মনের কাবা ঘরে তোমারি সুরত —
	হজরত তোমারি সুরত।।
যারা দোজখ হতে ত্রাণের তরে তোমায় ভালোবাসে
আমার এ প্রেম দেখে তারা কেউ কাঁদে কেউ হাসে।
তুমি জান হে মোর স্বামী, শাফায়াৎ চাহি না আমি
আমি শুধু তোমায় চাহি তোমার মুহব্বত
	হজরত তোমার মুহব্বত।।