বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এলো ঐ
বাণী
বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ, নবযুগ ঐ এলো ঐ এলো ঐ রক্ত যুগান্তর রে। বল জয় সত্যের জয় আসে ভৈরব বরাভয়, শোন অভয় ঐ রথ-ঘর্ঘর রে।। রে বধির! শোন পেতে কান ওঠে ঐ কোন মহাগান, হাঁকছে বিষাণ ডাকছে ভগবান রে। জগতে জাগলো সাড়া জেগে ওঠ উঠে দাঁড়া, ভাঙ্ পাহারা মায়ার কারা-ঘর রে। যা আছে যাক্ না চুলায় নেমে পড় পথের ধূলায়, নিশান দুলায় ঐ প্রলয়ের ঝড় রে।। সে ঝড়ের ঝাপটা লেগে ভীম আবেগে উঠনু জেগে পাষাণ ভেঙে প্রাণ-ঝরা নির্ঝর রে। ভুলেছি পর ও আপন ছিঁড়েছি ঘরের বাঁধন, স্বদেশ স্বজন স্বদেশ মোদের ঘর রে। যারা ভাই বদ্ধ কুয়ায় খেয়ে মার জীবন গোঁয়ায় তাদের শোনাই প্রাণ-জাগা মন্তর রে।। ঝড়ের ঝাঁটার ঝাণ্ডা নেড়ে মাভৈঃ বানীর ডঙ্কা মেরে শঙ্কা ছেড়ে হাঁক প্রলয়ঙ্কর রে। তোদের ঐ চরণ-চাপে যেন ভাই মরণ কাঁপে মিথ্যা পাপের কণ্ঠ চেপে ধর্ রে। শোনা তোর বুক-ভরা গান জাগা তোর দেশ-জোড়া প্রাণ, দে বলিদান প্রাণ ও আত্মপর রে।। মোরা ভাই বাউল চারণ মানি না শাসন বারণ, জীবন মরণ মোদের অনুচর রে। দেখে ঐ ভয়ের ফাঁসি হাসি জোর জয়ের হাসি, অ-বিনাশী নাইকো মোদের ডর রে, গেয়ে যাই গান গেয়ে যাই মরা প্রাণ উট্কে দেখাই, ছাই-চাপা ভাই অগ্নি ভয়ঙ্কর রে।। খুঁড়ব কবর তুড়ব শ্মশান মড়ার হাড়ে নাচাব প্রাণ, আনব বিধান নিদান কালের বর রে শুধু এই ভরসা রাখিস মরিস্নি ভির্মি গেছিস ঐ শুনেছিস ভারত বিধির স্বর রে। ধর্ হাত ওঠ্ রে আবার দুর্যোগের রাত্রি কাবার, ঐ হাসে মা'র মূর্তি মনোহর রে।।
নমস্তে বীণা পুস্তক হস্তে দেবী
বাণী
নমস্তে বীণা পুস্তক হস্তে দেবী বীণাপাণি। শতদল-বাসিনী সিদ্ধি-বিধায়িনী সরস্বতী বেদবাণী।। এসো আমল ধবল শুভ সাত্ত্বিকী বর্ণে, হংস-বাহনে লীলা উৎপল কর্ণে, এসো বিদ্যারূপিণী মা শারদা ভারতী এসো ভীতজনে বরাভয় দানি।। শুদ্ধ জ্ঞান দাও শুভ্র আলোক অজ্ঞান তিমির অপগত হোক। মৃতজনে সঙ্গীত-অমৃত দাও মা বীণাতে মাভৈঃ ঝঙ্কার হানি।
এ জনমে মোদের মিলন হবে না
বাণী
এ জনমে মোদের মিলন হবে না আর, জানি জানি। মাঝে সাগর, এপার ওপার করি মোরা কানাকানি।। দুজনে দুকূলে থাকি’ কাঁদি মোরা চখা-চখি, বিরহের রাত পোহায় না আর বুকে শুকায় বুকের বাণী।। মোদের পূজা আরতি হায় চোখের জলে, গহন ব্যথায়, মোদের বুকে বাজায় বীণা বেদনারি বীণাপাণি।। হেথায় মিলন-রাতের মালা ম্লান হয়ে যায় প্রভাত বেলা, সকালে যার তরে কাঁদি, বিকালে তায় হেলাফেলা। মোদের এ প্রেম-ফুল না শুকায় নিঠুর হাতে কঠোর ছোঁওয়ায়, ব্যথার মাঝে চির-অমর মোদের মিলন-কুসুমদানি।।
একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে
বাণী
একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে যেন কাহার ভাঙা কলস আকাশ গাঙে ভাসে।। সেই কলসি হতে ধরার ’পরে অঝোর ধারায় মধু ঝরে রে দলে দলে তাই কি তারার মৌমাছিরা আসে।। সেই মধু পিয়ে ঘুমের নেশায় ঝিমায় নিশীথ রাতি বন-বধূ সেই মধু ধরে ফুলের পাত্র পাতি’। সেই মধু এক বিন্দু পিয়ে সিন্ধু ওঠে ঝিলমিলিয়ে রে সেই চাঁদেরই আধখানা কি তোমার মুখে হাসে।।
গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে
বাণী
গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে – কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে। থির সৌদামিনী রাধিকা দোলে নবীন ঘনশ্যাম সনে; দোলে রাধা শ্যাম ঝুলন-দোলায় দোলে আজি শাওনে।। পরি’ ধানি রঙ ঘাঘরি, মেঘ রঙ ওড়না গাহে গান, দেয় দোল গোপীকা চল-চরণা, ময়ূর নাচে পেখম খুলি’ বন-ভবনে।। গুরু গম্ভীর মেঘ-মৃদঙ্গ বাজে আঁধার অশ্রুর তলে, হেরিছে ব্রজের রসলীলা অরুন লুকায়ে মেঘ-কোলে। মুঠি মুঠি বৃষ্টির ফুল ছুঁড়ে হাসে দেব-কুমারীরা হেরে অদূর আকাশে, জড়াজড়ি করি‘ নাচে, তরুলতা উতলা পবনে।।