পুঁথির বিধান যাক পুড়ে তোর, বিধির বিধান সত্য হোক!
(এই) খোদার উপর খোদকারী তোর মানবে না আর সর্বলোক।।
নানান মুনির নানান মত্ যে, মানবি বল্ সে কার শাসন?
কয়জনার বা রাখবি মন?
একজনকে মানলে করবে আর এক সমাজ নির্বাসন, চারদিকে শৃঙ্খল বাঁধন!
সকল পথে লক্ষ্য যিনি চোখ পুরে নে তাঁর আলোক।।
জাতের চেয়ে মানুষ সত্য, অধিক সত্য প্রাণের টান
প্রাণ-ঘরে সব এক সমান।
বিশ্ব-পিতার সিংহ-আসল প্রাণ বেদীতেই অধিষ্ঠান,
আত্মার আসন তাইত প্রাণ।
জাত-সমাজের নাই সেথা ঠাই জগন্নাথের সাম্য লোক
জগন্নাথের তীর্থ লোক।।
চিনেছিলেন খ্রিষ্ট, বুদ্ধ, কৃষ্ণ, মোহাম্মদ ও রাম
মানুষ কী আর কী তার দাম!
(তাই) মানুষ যাদের করত ঘৃণা, তাদের বুকে দিলেন স্থান,
গান্ধী আবার গান সে-গান।
(তোরা) মানব-শত্রু, তোদেরই হায় ফুটল না সেই জ্ঞানের চোখ।।
উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায় ওরে আমি কি তায় ভয় করি।
ও ভাই আমি কি তায় ভয় করি।
পাক্কা ঈমান তক্তা দিয়ে গড়া যে আমার তরী।
ও ভাই গড়া যে আমার তরী।।
‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু'র পাল তুলে,
ঘোর তুফানকে জয় ক'রে ভাই যাবই কূলে,
মোহাম্মদ মোস্তফা নামের (ও ভাই) গুণের রশি ধরি'।।
খোদার রাহে সঁপে দেওয়া ডুববে না মোর তরী,
সওদা ক'রে ভিড়বে তীরে সওয়াব-মাণিক ভরি'।
দাঁড় এ তরীর নামাজ, রোজা, হজ্ ও জাকাত,
উঠুক না মেঘ, আসুক বিপদ — যত বজ্রপাত,
আমি যাব বেহেশত্-বন্দরেতে রে এই সে কিশতিতে চড়ি'।।
তুমি সুন্দর কপট হে নাথ! মায়াতে রাখ বিভোর।
তোমার ছলনা যে বোঝে না নাথ সেই সে দুঃখী ঘোর।।
কত শত রূপে নিঠুর আঘাতে
তুমি চাও নাথ তোমারে ভোলাতে
তবু যে তোমারে ভুলিতে পারে না ধরা দাও তারে চোর।।
কাঁদাও তাহারে নিশিদিন তুমি যপে যে তোমার নাম
তোমারে যে চাহে শত বন্ধনে বাঁধ তারে অবিরাম।
সাগরে মিশাতে চায় বলে নদী
জনম গোঁয়ায় কেঁদে নিরবধি
ভক্তে তেমনি দিয়াছ যে নাথ অসীম আঁখি - লোর।।