বাণী

গভীর নিশীথে জাগি’ খুঁজি তোমারে।
দূর গগনে প্রিয় তিমির-‘পারে।।
জেগে যবে দেখি হায় তুমি নাই কাছে
আঙিনাতে ফুটে’ ফুল ঝ’রে পড়ে আছে,
বাণ-বেঁধা পাখি সম আহত এ প্রাণ মম —
লুটায়ে লুটায়ে কাঁদে অন্ধকারে।।
মৌন নিঝুম ধরা, ঘুমায়েছে সবে,
এসো প্রিয়, এই বেলা বক্ষে নীরবে।
কত কথা কাঁটা হ’য়ে বুকে আছে বিঁধে
কত আভিমান কত জ্বালা এই হৃদে,
দেখে যাও এসো প্রিয় কত সাধ ঝ’রে গেল —
কত আশা ম’রে গেল হাহাকারে।।

বাণী

মজনু		:	আবার কেন বাতায়নে দীপ জ্বালিলে, হায়!
			আমার যে প্রাণ-পতঙ্গ ওই প্রদীপ পানেই ধায়॥
লায়লী	:	আমার প্রেম যে অনল শিখা জ্বলে তিমির রাতে
			পতঙ্গরে পোড়াই আমি নিজেও পুড়ি সাথে।
মজনু		:	একি ব্যথা একি নেশা 
			এই কি গো প্রেম গরল-মেশা!
লায়লী	:	তত আলো দান করে সে যত সে জ্বালায়॥

রেকর্ড-নাটিকাঃ ‘লায়লী মজনু’

বাণী

তোমার নামে একি নেশা হে প্রিয় হজরত।
যত চাহি তত কাঁদি, আমার মেটে না হসরত।।
কোথায় আরব কোথায় এ হিন্দ্
নয়নে মোর নাই তবু নিন্দ
প্রাণে শুধু জাগে (তোমার) মদিনার ঐ পথ।।
কে বলে তুমি গেছ চলে হাজার বছর আগে
আছ লুকিয়ে তুমি প্রিয়তম আমার অনুরাগে।
মোর অন্তরের হেরা গুহায়
আজো তোমার ডাক শোনা যায়
জাগে আমার মনের কাবা ঘরে তোমারি সুরত —
	হজরত তোমারি সুরত।।
যারা দোজখ হতে ত্রাণের তরে তোমায় ভালোবাসে
আমার এ প্রেম দেখে তারা কেউ কাঁদে কেউ হাসে।
তুমি জান হে মোর স্বামী, শাফায়াৎ চাহি না আমি
আমি শুধু তোমায় চাহি তোমার মুহব্বত
	হজরত তোমার মুহব্বত।।

বাণী

লক্ষ্মী মা তুই ওঠ্ গো আবার সাগর জলে সিনান করি’।
হাতে ল’য়ে সোনার ঝাঁপি, সুধার পাত্রে সুধা ভরি’।।
আন্ মা আবার আঁচলে তোর নবীন ধানের মঞ্জরি সে,
টুনটুনিতে ধান খেয়েছে, খাজনা মাগো দিব কিসে।
ডুবে গেছে সপ্ত-ডিঙা, রত্ন বোঝাই সোনার তরী।।
ক্ষীরোদ-সাগর-কন্যা যে তুই, খেতে দে ক্ষীর সর মা আবার,
পান্তা লবণ পায় না ছেলে, জননী তোর এ কোন বিচার?
কার কাছে মা নালিশ করি, অনন্ত শয়নে হরি।।
তোরও কি মা ধর্‌ল ঘুমে নারায়ণের ছোঁয়াচ লেগে,
বর্গী এল দেশে মাগো, খোকারা তোর কাঁদে জেগে।
এসে এবার ঘুম পাড়া মা, মাগো ভয়ে ক্ষিদেয় মরি।।
কোন্‌ দুখে তুই রইলি ভুলে বাপের বাড়ি অতল-তুলে,
ব্যথার সিন্ধু মন্থন শেষ, ভ’রল যে দেশ হলাহলে।
অমৃত এনে সন্তানে তোর, বাঁচা মা, তোর পায়ে ধরি।।

বাণী

আমি আলোর শিখা
ফুটাই আঁধার ভবনে দীপ-কলিকা।।
নিশ্চল পথে আমি আনন্দ-ছন্দ
অন্ধ আকাশে আমি রবি-তারা-চন্দ
আমি ম্লান মুখে আনি রূপ-কণিকা।।

নাটকঃ ‌‘সিরাজদ্দৌলা’

বাণী

আমার	দুখের বন্ধু, তোমার কাছে চাইনি ত’ এ সুখ।
আমি	জানিনি ত বুকে পেয়েও কাঁদবে এ মন বুক।।
		আমার শাখায় যবে ফোটেনি ফুল
		আমি চেয়েছি পথ আশায় আকুল,
আজ	ফোটা ফুলে কাঁদে কেন কুসুম ঝরার দুখ।।
প্রিয়	মিলন-আশায় ছিনু সুখে ছিলে যবে দূর,
আজ	কাছে পেয়ে পরান কাঁদে বিদায়-ভয়াতুর।
		এ যে অমৃতে গরল মিশা
		প্রাণে কেবলি বাড়িছে তৃষা,
আমার	স্বর্গে কেন মলিন ধরার বেদন জাগরূক।।