বাণী

এত কথা কি গো কহিতে জানে
		চঞ্চল ঐ আঁখি
নীরব ভাষায় কি যে ক'য়ে যায়
	ও সে মনের বনের পাখি।।
বুঝিতে পারি না ঐ আঁখির ভাষা
জলে ডুবে তবু মেটে না পিপাসা,
আদর সোহাগ প্রেম ভালোবাসা
	অভিমান মাখামাখি।।
মুদিত কমলে ভ্রমরেরি প্রায়
বন্দী হইয়া কাঁদিয়া বেড়ায়
চাহিয়া চাহিয়া মিনতি জানায়
	সুনীল আকাশে ডাকি'।।

বাণী

(প্রভু)		রাখ এ মিনতি ত্রিভুবন-পতি তব পদে মতি।
		আঁখির আগে যেন সদা জাগে তব ধ্রুব-জ্যোতি।।
			সংসার মরুমাঝে তুমি মেঘ-মায়া,
			বিষাদ-শোক তাপে তুমি তরু-ছায়া,
		সান্ত্বনা দাতা তুমি দুঃখ ত্রাতা অগতির গতি।।
		জননীর মত আছ ঊর্ধ্বে জাগি
		জলে স্থলে শূন্যে অগণিত তব দান মোদের লাগি১।
			ঝঞ্ঝার মাঝে তব বিষাণ বাজে,
			সহসা ঢলি পড় বনে ফুল-সাজে,
		কোমলে কঠোরে হে প্রভু বিরাজে তব মহাশক্তি।।

১. দোলে কালো নিশার কোলে / আলো-উষসী / তিমির তলে তব তিলক জ্বলে / ঐ পূর্ণ শশী।

বাণী

ধানের ক্ষেতের ঢেউ লেগে আজ প্রাণের বাঁধন ভাঙল রে!
আমার মনের পুঞ্জিত মেঘ অরুণ-রঙে রাঙল রে।।
	নাচ ভুলেছে বনের কেকা
	দ্বন্দ ভুলে’ হলাম একা,
ময়ূরকণ্ঠী শুভ্র-হংস-মালার পরশ লাগল রে।।
মেহেদি ফুলের মঞ্জরি মোর মন কেবলি রঙ লুকায়,
শিলায় দলি’ রূপের কলি, আল্‌তা হবো তাহার পায়।
	জ্বাল দীপালি খোল রে দুয়ার
	আসে শারদ-জ্যোতির জোয়ার,
আবার আনন্দিনীর আগমনের কৃপার আশা জাগল রে।।

বাণী

মীরা		:	আমার হৃদয়-বৃন্দাবনে নাচেরে গিরিধারী বনমালিয়া।
			সব সংশয়-ভঞ্জন নিতি মম চিত-রঞ্জন নবীন বারিদ গঞ্জন-কালিয়া।।
শ্রীকৃষ্ণ		:	তুমি এমন ক’রে আমায় ধ’রে রাখলে চিরদিন
			আমি এমনি ক’রে যুগে যুগে শুধছি প্রেমের ঋণ,
			তাই নেমে ধরায় নয়ন ধারায় ভাসায়েছি নদীয়া।।
মীরা		:	চির উজ্জ্বল হিয়া তলে
			হে নাথ আসিবে ব’লে
			রেখেছি প্রেমের শিখা জ্বালিয়া।।
শ্রীকৃষ্ণ		:	আমারে কাঁদালে আপনি কাঁদিয়া
মীরা		:	এসো নাথ এসো নাথ
			ধোয়াব রাতুল চরণ যুগল নয়ন সলিল ঢালিয়া।।

নাটিকা : ‘মীরাবাঈ’

বাণী

এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
			কৃষ্ণ কানাইয়া হরি।
মাখি’গোখুর ধূলিরেণু গোঠে চরাইয়া ধেনু
			বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।।
গোপী চন্দন চর্চিত অঙ্গে
প্রাণ মাতাইয়া প্রেম তরঙ্গে
বামে হেলায়ে ময়ুর পাখা দুলায়ে তমাল শাখা
			দীপবনে, দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গে।
এসো লয়ে সেই শ্যাম-শোভা ব্রজ বধু মনোলোভা
			সেই পীত বসন পরি’।।
এসো গগনে ফেলি নীল ছায়া
আনো পিপাসিত চোখে মেঘ মায়া।
এসো মাধব মাধবী তলে
এসো বনমালী বন-মালা গলে
এসো ভক্তিতে প্রেমে আঁখি জলে
এসো তিলক লাঞ্ছিত সুর নর বাঞ্ছিত
			বামে লয়ে রাই কিশোরী।।

বাণী

আকুল হলি কেন বকুল বনের পাখি।
দেখেছিস তুইও নাকি প্রিয়ার ডাগর আঁখি।।
	মধু ও বিষ মেশা
	সেই সে আঁখির নেশা
তোরে ক’রেছে পাগল, তাই কি এ ডাকাডাকি।।
চোখে পড়িলে বালি জ্বালাতে জ্বলিয়া মরি,
চোখে যাহার পড়েছে চোখ, সে বাঁচে কেমন করি’।
	ফিরাই আঁখি যেদিক পানে
	তারি আঁখি মনে আনে,
বলিস্ পাখি দেখা হ’লে প্রাণ শুধু আছে বাকি।।