বাণী

নূরজাহান, নূরজাহান!
সিন্ধু নদীতে ভেসে,
এলে মেঘলামতীর দেশে, ইরানি গুলিস্তান।।
নার্গিস লালা গোলাপ আঙ্গুর–লতা
শিঁরি ফরহাদ সিরাজের উপকথা
এনেছিলে তুমি তনুর পেয়ালা ভরি’
বুলবুলি দিলরুবা রবাবের গান।।
তব প্রেমে উন্মাদ ভুলিল সেলিম, সে যে রাজাধিরাজ –
চন্দন সম মাখিল অঙ্গে কলঙ্ক লোক–লাজ।
যে কলঙ্ক লয়ে হাসে চাঁদ নীল আকাশে,
যাহা লেখা থাকে শুধু প্রেমিকের ইতিহাসে,
দেবে চিরদিন নন্দন–লোক–চারী
তব সেই কলঙ্ক সে প্রেমের সম্মান।।

সঙ্গীতালেখ্য : ‌‘পঞ্চাঙ্গনা’

বাণী

এলো ঐ		পূর্ণ শশী		ফুল-জাগানো
বহে বায়		বকুল-বনে	ঘুম-ভাঙানো।।
লাগিল		জাফরানি-রঙ	শিউলি-ফুলে
ফুটিল		প্রেমের কুঁড়ি	পাপড়ি খুলে,
খুশির আজ	আমেজ জাগে	মন-রাঙানো।।
চাঁদিনী		ঝিলমিলায়	ঝিলের জলে,
আবেশে		শাপলা ফুলের	মৃণাল টলে,
জাগে ঢেউ	দীঘির বুকে	দোল-লাগানো।।
এসো আজ	স্বপন-কুমার	নিরিবিলি
খুলিয়া		গোপন প্রাণের	ঝিলিমিলি,
এসো মোর	হতাশ প্রাণে	ভুল-ভাঙানো।।

বাণী

ইরানের বুলবুলি কি এলে পথ ভুলে
গোলাপের স্বপ্ন ল’য়ে সিন্ধু নদী-কূলে।
চন্দনের গন্ধে কবি মিশালে হেনার সুরভি
তোমার গানে মরুভূমির দীর্ঘশ্বাস দুলে।।
কোন সাকির আঁখির করুণা নাহি পেয়ে
মরুচারী হে বিরহী, এলে মেঘের দেশে ধেয়ে।
	হেথা 	কাজল আঁখি নিরখি’
		তৃষ্ণা তব জুড়াল কি,
লালা ফুলের বেদনা ভুলিবে কি পলাশ ফুলে।।

বাণী

যে	অবহেলা দিয়ে মোরে করিল পাষাণ।
সখি	কেন কেঁদে ওঠে তারি তরে মোর প্রাণ।।
	যে ফুল ফুটায়ে তার মধু নিল না
মোরে	ধরার ধূলিতে এনে ধরা দিল না,
কেন	তার তরে বুকে এত জাগে অভিমান।।
মোর	প্রেম-অঞ্জলি সে যত যায় দলি’
তারে	তত জড়াতে চাই, শ্যাম-সুন্দর বলি’,
	চাঁদ সে যে আকাশের সে ধরা দেয় না
তবু	চকোরীর ভুল হয় নাকো অবসান।।

বাণী

অধীর অম্বরে গুরু গরজন মৃদঙ বাজে।
রুমু রুমু ঝুম্ মঞ্জীর-মালা চরণে আজ উতলা যে॥
এলোচুলে দু’লে দু’লে বন-পথে চল আলি,
মরা গাঙে বালুচরে কাঁদে যথা বন্-মরালী।
		উগারি’ গাগরি ঝারি
		দে লো দে করুণা ডারি
ঘুঙট উতারি’ বারি ছিটা লো গুমোট সাঁঝে॥
তালীবন হানে তালি, ময়ুরী ইশারা হানে,
আসন পেতেছে ধরা মাঠে মাঠে চারা-ধানে।
মুকুলে ঝরিয়া পড়ি’ আকুতি জানায় যূথী
ডাকিছে বিরস শাখে তাপিতা চন্দনা-তুতি।
		কাজল-আঁখি রসিলি
		চাহে খুলি ঝিলিমিলি,
চল, লো চল সেহেলি, নিয়ে মেঘ-নটরাজে॥

নাটকঃ ‘সেতুবন্ধ’

বাণী

মদির আবেশে কে চলে ঢুলুঢুলু আঁখি।
			মদির কার আঁখি
হেরিয়া পাপিয়া উঠিছে পিউ পিউ ডাকি’।।
আল্‌তা-রাঙা পায়ে আল্পনা আঁকে,
পথের যত ধূলি তাই বুক পেতে থাকে,
দু’ধারে তরুলতা দেয় চরণ ফুলে ফুলে ঢাকি’।।
তা’রি চোখের চাওয়ায় গো দেলা লাগে হাওয়ায়,
তালীবন তাল দিয়ে যায় তাল-ফের্‌তায় দোলা লাগে হাওয়ায়।
আকুল তানে গাহে বকুল-বনের পাখি।।
তারি মুখ-মদের ছিটে যোগায় ফুলে মধু মিঠে
চাঁদের জৌলুসে তাহারি রওশন্‌ মাখি’।।