বাণী

ব্যথার উপরে বঁধু ব্যথা দিও না
দলিত এ হৃদি মম দ’লে যেয়ো না ॥
		ল’য়ে কত সাধ আশা
		তোমার দুয়ারে আসা
(বঁধু) দিলে যদি আলোবাসা ফিরে নিয়ো না॥
স্রোতের কুসুম প্রায় ভাসিতাম অসহায়
তুলে নিয়ে বুকে তারে ফেলে দিলে পুনরায়।
		নিরদয় এ কি খেলা
		প্রাণ নিয়ে হেলাফেলা
খেলার লাগিয়া ভালবাসিও না॥

বাণী

তুমি অনেক দিলে খোদা, দিলে অশেষ নিয়ামত —
আমি লোভী, তাইতো আমার মেটে না হসরত।।
কেবলই পাপ করি আমি — মাফ করিতে তাই, হে স্বামী,
দয়া করে শ্রেষ্ঠ নবীর করিলে উম্মত।
তুমি নানান ছলে করছ পূরণ ক্ষতির খেসারত।।
মায়ের বুকে স্তন্য দিলে, পিতার বুকে স্মেহ;
মাঠে শস্য ফসল দিলে আরাম লাগি' গেহ।  
ঈদের চাঁদের রং মশালে রঙীন বেহেশ্‌ত পথ দেখালে
আখেরেরই সহায় দিলে আখেরী হজরত।
তুমি আজান দিলে না ভুলিতে মসজিদেরই পথ।।

বাণী

(হায় গো) 	ভালোবেসে অবশেষে কেঁদে দিন গেল।
		ফুল-শয্যা বাসি হল, বঁধূ না এলো।।
		শুকাইল পানের খিলি বাঁটাতে ভরা,
		এ পান আমি কারে দিব সে বঁধূ ছাড়া।
(হায় গো) 	নীলাম্বরী শাড়ি ছি ছি পরলেম মিছে লো।।
		এবার ধ’রে দিস্ যদি তায়
		রাখ্‌ব বেঁধে বিনোদ খোঁপায়,
		কাঙালে পাইলে রতন রাখে যেমন লো।।
		সোঁদা-মাখা নিস্‌নে কেশে, গন্ধে যে লো তার
		মনে আনে চন্দন-গন্ধ সোনার বঁধূয়ার।
		এত দুঃখ ছিল আমার এই বয়সে লো।।

বাউল

বাণী

শোনো লো বাঁশিতে ডাকে আমারে শ্যাম।
গুমরিয়া কাঁদে বাঁশি ল’য়ে ‘রাধা রাধা’ নাম।।
	পিঞ্জরে পাখি যেন
	লুটাইয়া কাঁদে মন,
আশে পাশে গুরুজন বাম।।

বাণী

যদি আমি তোমায় হারাই, তুমি যেয়ো না নাথ হারিয়ে।
আমি পথ হারালে ধ’রো আমায় আঁধারে হাত বাড়িয়ে।।১
	ঝড়-বাদলে নিশীথ-রাতে
	লুকিয়ে চ’লো আমার সাথে,
ফুলের কাছে নিয়ে যেয়ো কাঁটার বাধা ছাড়িয়ে।।
তোমায় দেওয়া এ প্রাণ যদি অন্যে চাহি দানিতে,
তুমি যেন ‘না’ বোলো না কঠোর আঘাত হানিতে।
	চঞ্চল মোর চিত্ত যেন
	তোমার পায়ে টেনে এনো
তোমার পূজা শিখায়ো নাথ তুমিই পাশে দাঁড়িয়ে।।

১. অন্ধকারে ধরো আমায় সহসা হাত বাড়িয়ে।।

বাণী

আমার ঘরের পাশ দিয়ে সে চলতো নিতুই সকাল-সাঁঝে।
আর এ পথে চলবে না সে, সেই ব্যথা হায় বক্ষে বাজে।।
আমার দ্বারের কাছটিতে তার ফুটতো লালী গালের টোলে,
টলতো চরণ, চাউনি বিবশ, কাঁপতো নয়ন-পাতার কোলে —
					কুঁড়ি যেমন খোলে গো!
কেউ কখনো কইনি কথা, কেবল নিবিড় নীরবতা
সুর বাজাতো অনাহতা গোপন মরম-বীণার মাঝে।।
মূক পথের আজ বুক ফেটে যায় স্মরি’
	তারি পায়ের পরশ বুক-খসা তার আঁচর-চুমু,
রঙিন ধুলো পাংশু হ’ল, ঘাস শুকোলো যেচে’
	বাচাল যোড়-পায়েলার রুমু-ঝুমু।
আজো আমার কাটবে গো দিন রোজই যেমন কাটতো বেলা,
একলা ব’সে শূন্য ঘরে — তেমনি ঘাটে ভাসবে ভেলা —
					অবহেলা হেলা-ফেলায় গো!
	শুধু সে আর তেমন ক’রে
	মন র’বে না নেশায় ভ’রে
আসার আশায় সে কার তরে সজাগ হ’য়ে সকল কাজে।
ডুকরে কাঁদে মন-কপোতী ‘কোথায় সাথির কূজন বাজে?
					সে-পার ভাষা কোথায় রাজে।।