বাণী

মা! আমি তোর অন্ধ ছেলে হাত ধ’রে মোর নিয়ে যা মা।
পথ নাহি পাই যেদিকে চাই দেখি আঁধার ঘোর ত্রিযামা।।
	আমি নিজে পথ চলিতে যাই
	বারে বারে পথ ভুলি মা তাই
মায়া-কূপে পড়ে কাঁদি কোথায় দয়াময়ী শ্যামা।।
মা তুই যবে হাত ধ’রে চলিস্ রয় না পতন-ভয়,
তুই যবে পথ দেখাস্ মা গো সে পথ জ্যোতির্ময়।
	কি হবে জ্ঞান-প্রদীপ নিয়ে সাথে
	বৃথা এ দীপ জন্মান্ধের হাতে
তুই যদি হ’স নির্ভর মোর পথের ভয় আর রবে না মা।।

বাণী

পেয়ে কেন নাহি পাই হৃদয়ে মম
হে চির-সুদূর প্রিয়তম॥
		তুমি আকাশের চাঁদ
আমি	পাতিয়া সরসী-ফাঁদ
জনম	জনম কাঁদি কুমুদীর সম॥
		নিখিলের রূপে রূপে
		দেখা দাও চুপে চুপে
এলে না মূরতি ধরি তুমি নিরুপম॥

বাণী

	পরো সখি মধুর বধূ-বেশ
	বাঁধো আকুল চাঁচর কেশ।।
বাঁকা ভুরুর মাঝে পর খয়েরি টিপ বকুল-বেলার হার,
ছাড় মলিন বাস শাড়ি চাঁপা রং পর পর আবার।
অধর রাঙাও সলাজ হাসিতে মোছ নয়ন-ধার —
বিদেশী বন্ধু তোমারে স্মরিয়া ফিরে এলো নিজ দেশ।।
মিলন-দিনে আর সাজে না মুখ-ভার ভোলো ভোলো অভিমান,
মধুরে ডাক কাছে তায়, জুড়াও তাপিত প্রাণ।
অরুণ-রাঙা হোক অনুরাগের রঙে করুণ সজল নয়ান —
মরম বীণায় উঠুক বাজিয়া মিলন-মধুর রেশ।।

বাণী

ক্ষীণ তনু যৌবন ভার বইতে নারি
ধীরে চল গোরী ধীরে ধীরে
টলে চিকন কাঁখে ভরা গাগরি
	ভরে তায় ঘাঘরি।
দেহ টুটে না যায় যেন নাগরি
	নীল চোলি ভিজিয়া না যায় নীরে।।
কঠিন ধরা হানে বেদনা কোমল পায়ে
মুছায়ে দিব ব্যথা ব’স এ বকুল ছায়ে
‘না’বলি মুচকিয়া হেসো না ফিরে ফিরে।।
দাঁড়ায়ে কত পথিক বহিতে সই ভার তব
যদি চাহ গো সখি ভার তব আমি লব
দাও আমারে ঠাঁই, তব ঐ তনুর তীরে।।

বাণী

বদ্না গাড়ুতে বসে মুখোমুখী দিব্বি হয়েছে ভাব!
বদনা চাহিছে শুক্তুনী আর – চাহিছে গাড়ু কাবাব।।
গাড়ু বলে এসো বদনা ভাইটি হোক শুভ চোখাচোখি।
তুমি মোর হাতে পেঁয়াজ দাও আর আমি দিই হরতকি।।
[শুনে বদনা ভাবে গদগদ হয়ে বলছেন
‘গাড়ুদাদা দাড়িতে একবার টিকিতে বুলাও না’]
ও গাড়ু দাদা দাড়িতে বুলাও টিকি –
ছুরি ও নাদ্না রাখি দোঁহে এসো আস্‌নাই করা শিখি।।
[গাড়ু তখন ভাব জমিয়ে বলছেন]
পাখিদের মাঝে বামুন যে রাম পাখি।
কেননা মাথায় উহার জবা-ফুল বাঁধা টিকি
দেখ নাকি তাহা দেখ নাকি?
[বদনা তখন বদন ব্যাদন করে বলছেন]
ও তো টিকি নয় দাদা ও যে তুর্কী ফেজ্।
পাখিদের মাঝে উনি মোল্লাজী হ্যাঁদু নয় হরগেজ।।
[গাড়ু তখন বদনার পিঠে নল বুলিয়ে বলছেন]
হাতে দিব ক্ষীর নাড়ু ভাই, ছেড়ে দাও খাওয়া ঐ বড়টা।
[শুনে বদনা অবাক – বল্লে]
রে মদনা তাহলে কি দিয়ে খাইব পরটা?
গাড়ু বলে, আহা দোস্তীর তরে ছাড়িতে হয়।
এসা দাদা এসো জড়াজড়ি করি বদ্না গড়ায়ে কয়।।
জড়াজড়ি থেকে গড়াগড়ি দুই নলে প্রেমবারি ঝরে।
সেই ভাব দেখে বিদেশী কেটলী রাগে টগবগ করে।।

‘ভাই ভাই এক-ঠাঁই’

বাণী

ও কে উদাসী আমায় হায়
ডাকে আয় আয়
	গোধূলি-বেলায় বাজায়ে বাঁশরি।
তা’র পাহাড়ি সুরে
মোর নয়ন ঝুরে
	মম কুল-লাজ গৃহ-কাজ যাই পাশরি’।।
তা’র সুরের মায়ায় আকাশ ঝিমায়,
	চাঁদের চোখে তিমির ঘনায় —
তা’র বিরহে মধুর মোহে জীবন মরণ পলকে বিসরি।।