বাণী

কেন দিলে এ কাঁটা যদি গো কুসুম দিলে
ফুটিত না কি কমল ও কাঁটা না বিঁধিলে।।
	কেন এ আঁখি-কূলে
	বিধুর অশ্রু দুলে
কেন দিলে এ হৃদি যদি না হৃদয় মিলে।।
	কেন কামনা-ফাঁদে
	রূপ-পিপাসা কাঁদে
শোভিত না কি কপোল ও কালো তিল নহিলে।।
	কাঁটা-নিকুঞ্জে কবি
	এঁকে যা সুখের ছবি
নিজে তুই গোপন রবি তোরি আঁখির সলিলে।।

বাণী

আমি হব মাটির বুকে ফুল
প্রভাত বেলা হয়ত পাব তোমার চরণ মূল।।
	ঠাঁই পাব গো তোমার থালায়
	রইব তোমার গলার মালায়
সুগন্ধ মোর মিশবে হাওয়ায় আনন্দ আকুল।।
আমার রঙে রঙিন হবে বন
পাখির কণ্ঠে আনব আমি গানের হরষণ।
	নাই যদি নাও তোমার গলে
	তোমার পূজা বেদীর তলে
শুকাবে গো সেই হবে মোর মরণ অতুল।।

বাণী

শোনো লো বাঁশিতে ডাকে আমারে শ্যাম।
গুমরিয়া কাঁদে বাঁশি ল’য়ে ‘রাধা রাধা’ নাম।।
	পিঞ্জরে পাখি যেন
	লুটাইয়া কাঁদে মন,
আশে পাশে গুরুজন বাম।।

বাণী

যখন আমার কুসুম ঝরার বেলা তখন তুমি এলে
ভাটির স্রোতে ভাসলো যখন ভেলা পারের পথিক এলে।।
	আঁধার যখন ছাইল বনতল
	পথ হারিয়ে এলে হে চঞ্চল
দীপ নিভাতে এলে হে বাদল ঝড়ের পাখা মেলে।।
শূন্য যখন নিবেদনের থালা তখন তুমি এলে
শুকিয়ে যখন ঝরল বরণ-মালা তখন তুমি এলে।
	নিরশ্রু এই নয়ন পাতে
	শেষ পূজা মোর আজকে রাতে
নিবু নিবু প্রাণ শিখাতে আরতি দীপ জ্বেলে।।

বাণী

এসো এসো বন ঝরনা উচ্ছল-চল-চরণা।
সর্পিল ভঙ্গে লুটায়ে তরঙ্গে ফেন-শুভ্র-ওড়না।।
	পাষাণ জাগায়ে এসো নির্ঝরিণী
	এসো প্রাণ-চঞ্চলা জল-হরিণী
মরু-তৃষিতের বুকে ঢালো ধারা জল-শ্যাম মেঘ-বরণা।।
এসো বুনো পথ বেয়ে অকারণ গান গেয়ে,
গভীর অরণ্যের মৌনব্রত ভেঙে ভয়হীন পাহাড়ি মেয়ে।
	নৃত্য পরা পায়ে ছন্দ আনো
	আনন্দ আনো মৃত প্রাণ জাগানো,
অনাবিল হাসির ঝরাফুল ছড়ায়ে এসো মঞ্জুলা মনোহরণা।।

বাণী

	মোরা ছিনু একেলা, হইনু দু’জন।
	সুন্দরতর হ’ল নিখিল ভুবন।।
আজি	কপোত-কপোতী শ্রবণে কুহরে,
	বীণা বেণু বাজে বন-মর্মরে।
	নির্ঝর-ধারে সুধা চোখে মুখে ঝরে,
	নূতন জগৎ মোরা করেছি সৃজন।।
	মরিতে চাহি না, পেয়ে জীবন-অমিয়া!
	আসিব এ কুটিরে আবার জনমিয়া।
	আরো চাই আরো চাই অশেষ জীবন।।
আজি	প্রদীপ-বন্দিনী আলোক-কন্যা,
	লক্ষ্মীর শ্রী লয়ে আসিল অরণ্যা,
	মঙ্গল-ঘটে এলো নদীজল-বন্যা,
	পার্বতী পরিয়াছে গৌরী-ভূষণ।।