বাণী

হার মানি ননদিনী
মুখর মুখের বাণী শুনি তোর লজ্জাও লাজ সখি ভোলে
			পুলকে প্রাণ মন দোলে দোলে।।
পলকের চাহনিতে কে জানে কেমনে
প্রাণে এলো এত মধু এত লাজ নয়নে
বাহিরে নীরব কথার কুহু অন্তরে মুহুমুহু বোলে বোলে
			মুহু মুহু কুহু কুহু বোলে।।
তোরি মত ছিনু সই বনের কুরঙ্গী
মানি নাই কোনদিন লাজের ভ্রুভঙ্গি।
মধুরা মুখরা ওলো! মিষ্টি মুখের তোর
সব মধু খেয়েছে কি ঠাকুর জামাই চোর?
তব অভিনব বাণী হিল্লোলে
গুন্ঠন আপনি খোলে পুলকে প্রাণ মন দোলে।।

নাটিকাঃ ‘প্রীতি উপহার’

বাণী

নাম মোহাম্মদ বোল রে মন নাম আহমদ বোল।
যে নাম নিয়ে চাঁদ-সেতারা আস্‌মানে খায় দোল।।
	পাতায় ফুলে যে নাম আঁকা
	ত্রিভুবনে যে নাম মাখা,
যে নাম নিতে হাসিন ঊষার রাঙে রে কপোল।।
	যে নাম গেয়ে ধায় রে নদী,
	যে নাম সদা গায় জলধি,
যে নাম বহে নিরবধি পবন হিল্লোল।।
	যে নাম রাজে মরু-সাহারায়,
	যে নাম বাজে শ্রাবণ-ধারায়,
যে নাম চাহে কাবার মসজিদ — মা আমিনার কোল।।

বাণী

চুরি ক’রে এনো গিরি, আমার উমার দুই কুমারে।
দেখ্‌ব তখন ভোলা মেয়ে কেমন ভু’লে থাকতে পারে॥
তার ছেলেরে আনলে হেথা, বুঝবে মেয়ে মায়ের ব্যথা;
(বিনা) সাধনাতে গৌরী তখন, আসবে ছুটে আমার দ্বারে॥
জামাই আমার শিব ভোলানাথ, ডাকিলেই সে আসিবে জানি
চাইবে নাকো আসতে শুধু, তোমার মেয়ে ঐ পাষাণী।
কুমার গণেশ তুমি আমি, শিব পূজিব দিবস যামী;
শৈব হ’লে শিবাণী মোর, রইতে নারে ছেড়ে তারে॥

বাণী

ভুল ক'রে যদি ভালোবেসে থাকি ক্ষমিও সে অপরাধ।
অসহায় মনে কেন জেগেছিল ভালবাসিবার সাধ।।
	কত জন আসে তব ফুলবন
	মলয়, ভ্রমর, চাঁদের কিরণ, —
তেমনি আমিও আসি অকারণ অপরূপ উন্মাদ।।
তোমার হৃদয়-শূন্যে জ্বলিছে কত রবি শশী তারা,
তারি মাঝে আমি ধূমকেতু সম এসেছিনু পথহারা।
	তবু জানি প্রিয় একদা নিশীথে
	মনে পড়ে যাবে আমারে চকিতে,
সহসা জাগিবে উৎসব-গীতে সকরুণ অবসাদ।।

বাণী

আমার সারা জনম কেঁদে গেল
	(কবে) শেষ হবে মোর কাঁদা।
পথে পথে ঘুরে মরি, পদে পদে বাধা।।
	বাঁচ্‌তে চাইরে যে ডাল ধরে’
	সে ডাল অম্‌নি ভেঙে পড়ে,
সুখের আশায় ছুটে ছুটে দুঃখ হ’ল সাধা।।
দুঃখী জনের বন্ধু কোথায় দীনের সহায় কোথা,
(নাই) অসহায়ের তরে বুঝি বিধাতারও ব্যথা।
	আকুল হয়ে কাঁদি যত
	বেড়ে ওঠে বোঝা তত,
আদায় ক’রে ফিরি যেন আমি দুখের চাঁদা।।

বাণী

এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো শিউলি বিছানো পথে।
এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো অরুণ-কিরণ-রথে।।
দলি, শাপলা শালুক শতদল এসো রাঙায়ে তোমার পদতল
নীল লাবনি ঝরায়ে চলচল এসো অরণ্য পর্বতে।।
এসো ভাদরের ভরা নদীতে ভাসায়েকেতকী পাতার তরণী
এসো বলাকার রঙ পালক কুড়ায়ে বাহি’ ছায়াপথ-সরণি।
শ্যাম শস্যে কুসুমে হাসিয়া এসো হিমেল হাওয়ায় ভাসিয়া
এসো ধরনীরে ভালোবাসিয়া দুর নন্দন-তীর হতে।।