বাণী

		কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন।
(তার)		রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব যার হাতে মরণ বাঁচন।।
			কালো মায়ের আঁধার কোলে
			শিশু রবি শশী দোলে
(মায়ের)	একটুখানি রূপের ঝলক স্নিগ্ধ বিরাট নীল–গগন।।
		পাগলী মেয়ে এলোকেশী নিশীথিনীর দুলিয়ে কেশ
		নেচে বেড়ায় দিনের চিতায় লীলার রে তার নাই কো শেষ।
			সিন্ধুতে মা’র বিন্দুখানিক
			ঠিকরে পড়ে রূপের মানিক
		বিশ্বে মায়ের রূপ ধরে না মা আমার তাই দিগ্‌–বসন।।

বাণী

আমি		কালি যদি পেতাম কালী রইত না এ মনে কালি।
মোর		সাদা মনের পদ্মপাতায় লিখ্তাম তোর শ্রীনাম খালি।।
		(মা)	কালী পেলে সকল কালো
			এই নিমিষে হ’ত আলো,
(মা)		কালো পাতার কোলে যেমন ফুটে থাকে ফুলের ডালি।।
(তোর)		কালো রূপের নীল যমুনা বইত যদি মনের মাঝে,
(শ্যামা!)		দেখ্‌তে পেত এই ত্রিভুবন, কোথায় শ্যামের বেণু বাজে।
		তোর কালো রূপের কৃষ্ণ আকাশ পেলে,
(আমি)		ময়ূর হয়ে নাচতাম মা তারার পেখম মেলে।
		দুঃখে কালো কপালে মোর হাস্‌ত শিশু-চাঁদের ফালি।।

বাণী

আমার দেওয়া ব্যথা ভোলো।
আজ যে যাবার সময় হলো।।
নিব্‌বে যখন আমার বাতি 
আসবে তোমার নূতন সাথি, 
আমার কথা তা'রে বলো।।
ব্যথা দেওয়ার কী যে ব্যথা 
জানি আমি, জানে দেবতা।
জানিলে না কী অভিমান 
করেছে হায় আমায় পাষাণ, 
দাও যেতে দাও, দুয়ার খোলো।।

বাণী

আজ্‌কা হইবো মোর বিয়া কাল্‌কা আইমু বউ লইয়া,
থাইগ্‌বা তোমরা ফ্যাল-ফ্যালাইয়া বুঝ্‌ল্যা গোপ্‌লা মুকুন্দ্যা।।
তাইরে নাইরে নাইরে না, রইমু ঘরে বাইরে না
হকাল হইন্ধ্যা দুপইত্‌ত্যা চইল্যা যাইবো কোহান্ দ্যা।।
[আরে ও পরামানিকের পো, ক্ষুরবার লইয়া যাইতাছো কই?
আমারে বর কামান কামাইয়া দিয়া যাওছ্যান!
আইজগ্যা যে আমার বিয়া হইবো! [হ আরে আহো! আহো]
তাইরে নাইরে নাইরে না, রইমু ঘরে বাইরে না
হকাল হইন্ধ্যা দুপইত্‌ত্যা চইল্যা যাইবো কোহান্ দ্যা।।
[হউর হাউরী পাইমু কাল্‌, হুমুন্দী, আর হালার পাল
কইবো মোরে, হুনত্যাছ? ও-জামাই, কড়াকড়ির কী কাম আছে,
আর দুইডা দিন থাইক্যা যাও না ক্যা? অ্যা!]
আরে আমি উঠ্‌মু কি গাছত্ গিয়া, উৎকা মাইর্যা  ফাল দিয়া,
ভাইরে, হালার পরান ডা, (ভাইরে) নাইচ্যা উঠ্‌ছে এ্যাহন্ থ্যা।
তাইরে নাইরে নাইরে না, রইমু ঘরে বাইরে না
হকাল হইন্ধ্যা দুপইত্‌ত্যা চইল্যা যাইবো কোহান্ দ্যা।।
[আরে ও মুখুজ্যা ভাই, মুখুজ্যা ভাই, আরে যাও কই, হুইনা যাও।
হুইনা যাও। হক্‌কল দিনই তো বলদ লইয়া মাঠে চরাইবার যাও।
আজকা আমারে লইয়া মাইয়ার বাড়ি যাওন লাগ্‌বো,
খাওন-দাওন আছে খাওন-দাওন আছে! ঠইগ্‌বা না, ঠইগ্‌বা না!]
তাইরে নাইরে নাইরে না, রইমু ঘরে বাইরে না
হকাল হইন্ধ্যা দুপইত্‌ত্যা চইল্যা যাইবো কোহান্ দ্যা।।
[খাইমু কি কি আরে হুনছ — গোপ্‌লা, ও মুকুন্দ্যা!
আরে, মুকুন্দ্যা ঐ খানে যাইয়া খারাইয়া আছত্ কিল্ল্যাইগ্যা? আহো, হুনো!
মাংস খাইমু, লুচি খাইমু, পাত্‌ক্ষীর খাইমু, আর দইও খাইমু। আর তোমরা
অভাগ্যা, অভাগ্যার পাল! তোমরা তো খাইবা না, তোমরা চাইটবা! চুকা কাসুন্দ্যা চাইটবা।]
ফুচ্‌কি দিয়া তোমরা চোর, দেখ্‌বার চাইবা বউরে মোর,
রাখুম তারে লুকাইয়া, হোগলার বস্তা চাপুনদ্যা।।
তাইরে নাইরে নাইরে তাই, বউরে ছাইর্যা  যাইরে ভাই
থাক্‌তে পরান অসুম্ না, (ভাই) পইচ্যা হইমু ফাপুন্দ্যা।।
[আরে গোরা-চাঁন যে, অকালের গাড়িতে আইল্যা বুঝি?
তোমরা দুই ভাইয়েই তো কোলকাতায় আষ্ট বছর কাল
ঘরজামাই হইয়া আছো। বউর লগে ভাব ক্যামুন। চালতাছে ক্যামন? অ্যা?]

বাণী

তুমি	এলে কে গো চির-সাথী অবেলাতে
যবে	ঝুরিছে সন্ধ্যামণি আঙিনাতে।
ওগো	কে এলে গো চির-সাথী অবেলাতে।।
	রোদের দাহে এলে স্নিগ্ধ-বাস ফুল-রেণু
	নিঝুম প্রাণে এলে বাজায়ে ব্যাকুল বেণু
ওগো	চাঁদের তিলক এলে আঁধার রাতে।
ওগো	কে এলে গো চির-সাথী অবেলাতে।।
	ফুল ঝরার বেলা এলে মোর শেষ অতিথি
	কাঁদে হা হা স্বরে রিক্ত কানন-বীথি।
	এলে রে মরুভূমে পিয়াসি চকোর মোর
	শুক্লাতিথির শেষে কাঁদিতে এলে চকোর।
(তুমি)	আসিলে জীবন-সাঁঝে ঘুম ভাঙাতে।
ওগো	কে এলে গো চির সাথী অবেলাতে।।

বাণী

চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়
আজিকে যে রাজাধিরাজ কা'ল সে ভিক্ষা চায়।।
অবতার শ্রীরামচন্দ্র যে জানকীর পতি
তারও হলো বনবাস রাবণ করে দুর্গতি।
আগুনেও পুড়িল না ললাটের লেখা হায়।।
স্বামী পঞ্চ পাণ্ডব, সখা কৃষ্ণ ভগবান
দুঃশাসন করে তবু দ্রৌপদীর অপমান
পুত্র তার হলো হত যদুপতি যার সহায়।।
মহারাজ হরিশচন্দ্র, রাজ্য দান ক'রে শেষ
শ্মশান-রক্ষী হয়ে লভিল চণ্ডাল-বেশ
বিষ্ণু-বুকে চরণ-চিহ্ন, ললাট-লেখা কে খণ্ডায়।।