আমি কলহেরি তরে কলহ করেছি
বাণী
আমি কলহেরি তরে কলহ করেছি বোঝনি কি রসিক বঁধূ। তুমি মন বোঝ মনোচোর মান বোঝ নাকি হে — তুমি ফুল চেন, চেন নাকি মধু? তুমি যে মধুবনের মধুকর, তুমি মধুরম মধুরম মধুময় মনোহর কলহেরি কূলে রহে অভিমান-মধু যে, চেন নাকি বঁধু হে — রাগের মাঝে রহে অনুরাগ-মধু যে, দেখ নাকি বঁধু হে — কলঙ্কী বলে গগনের চাঁদ প্রতি দিন ক্ষয় হয় তুমি নিত্য পূর্ণ চাঁদ সম প্রিয়তম চির অক্ষয় এ চাঁদে একাদশী নাই হে — শুধু রাধা একা দোষী হলো নিত্য কেন পায় না মোর কৃষ্ণ চাঁদে যে একাদশী নাই হে — সেই ব্রজগোপীদের ঘর আছে পর আছে কৃষ্ণ বিনা নাই রাধার কেহ আমিও জানি যেন আমাও শ্রীকৃষ্ণ কেবল রাধাময় দেহ। সে রাধা প্রেমে বাঁধা সে রাধা ছাড়া জানে না, রাধাময় দেহ সে রাধা প্রেমে বাঁধা।
জাগো নারী জাগো বহ্নি-শিখা
বাণী
জাগো নারী জাগো বহ্নি-শিখা। জাগো স্বাহা সীমন্তে রক্ত-টিকা।। দিকে দিকে মেলি’ তব লেলিহান রসনা, নেচে চল উন্মাদিনী দিগ্বসনা, জাগো হতভাগিনী ধর্ষিতা নাগিনী, বিশ্ব-দাহন তেজে জাগো দাহিকা।। ধূ ধূ জ্ব’লে ওঠ ধূমায়িত অগ্নি, জাগো মাতা, কন্যা, বধূ, জায়া, ভগ্নী! পতিতোদ্ধারিণী স্বর্গ-স্খলিতা জাহ্নবী সম বেগে জাগো পদ-দলিতা, মেঘে আনো বালা বজ্রের জ্বালা চির-বিজয়িনী জাগো জয়ন্তিকা।।
আমার কালিবাঞ্ছা কল্পতরুর ছায়াতলে আয় রে
বাণী
আমার কালিবাঞ্ছা কল্পতরুর ছায়াতলে আয় রে, এই তরুতলে যে যাহা চায় তখনি তা পায় রে॥ তুই চতুর্বর্গ ফল কুড়াবি যোগ পাবি, ভোগ পাবি এমন কল্পতরু থাকতে - কেন মরিস্ নিরাশায় রে॥ দস্যু ছেলের আবদারে সে সাজে ডাকাত কালির বেশে, কত রামপ্রসাদের কন্যা হয়ে বেড়া বেঁধে যায় রে। ওরে পুত্র-কন্যা বিভব-রতন, চেয়ে নে যার ইচ্ছা যেমন, ওরে আমার এ মন থাকে যেন বাঞ্ছাময়ীর পায় রে॥ সে আর কিছু না চায় চেয়ে চেয়ে বাসনা তার শেষ হল না হায়! এবার খালি হাতে তালি দিয়ে (আমি) চাইব কালিকায় রে॥
যে ব্যথায় এ অন্তর-তল নিশিদিন উঠিছে দুলে
বাণী
যে ব্যথায় এ অন্তর-তল নিশিদিন উঠিছে দুলে'। তারি ঢেউ এ সঙ্গীতে মোর মুরছায় সুরের কূলে।। ভালোবাসা তোমরা যারে দু'দিনেই ভোলো গো তারে (হায়) শরতের সজল মেঘ-প্রায় কেঁদে যাও নিমেষে ভুলে।। কঠিন পুরুষেরি মন গলিয়া বহে গো যখন বহে সে নদীর মতন চিরদিন পাষাণ-মূলে।। আলোর লাগি' জাগে ফুল, নদী ধায় সাগরে যেমন, চকোর চায় চাঁদ, চাতক মেঘ, যারে চায় তায় চাহে এই রে মন। নিয়ে যায় সুদূর অমরায় পূজে তায় বাণী-দেউলে।।
এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো
বাণী
এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো শিউলি বিছানো পথে। এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো অরুণ-কিরণ-রথে।। দলি, শাপলা শালুক শতদল এসো রাঙায়ে তোমার পদতল নীল লাবনি ঝরায়ে চলচল এসো অরণ্য পর্বতে।। এসো ভাদরের ভরা নদীতে ভাসায়েকেতকী পাতার তরণী এসো বলাকার রঙ পালক কুড়ায়ে বাহি’ ছায়াপথ-সরণি। শ্যাম শস্যে কুসুমে হাসিয়া এসো হিমেল হাওয়ায় ভাসিয়া এসো ধরনীরে ভালোবাসিয়া দুর নন্দন-তীর হতে।।