বাণী

রাধা	:	ঐ শ্যাম মুরলী বাজায়।
কৃষ্ণ	:	রাধা রাধা বলে ডাকো বাঁশি রাধিকায়।।
রাধা	:	এসেছি রাঙ্গা পায় বড় সাধ মনে বাঁশি শিখিব শ্যামরায়।
		যে বাঁশির সুরে হরি কুল ভোলে ব্রজনারী
		বাজাতে তেমনি বাঁশি শিখাও হে রাধিকায়।।
কৃষ্ণ	:	তবে অধরে ধর বাঁশি রাই।
রাধা	:	যে সুরে হে শ্যামরায় যমুনা উজান যায় ভোলে রাধা কুলমান লাজ,
		শুনি যে মোহন বেণু তৃণ নাহি খায় ধেনু সে সুর শিখাও ব্রজরাজ,
কৃষ্ণ	:	বাঁশি রাধা নামে সাধা ব’লে শুধু রাধা শ্যাম-নাম কহিতে না জানে’
		যতই ডাকিবে শ্যামে ততই সে রাধা নামে ফুকারিবে সুমধুর তানে।।
রাধা	:	তাহে নাই নাই হরি বাধা, আজ আমি শ্যাম তুমি রাধা
কৃষ্ণ	:	মুরলী হইল শেখা ঐ ডাকে কুহু কেকা
		রাই এসো নাচি দুঁহু আনন্দে নূপুর মধুর ছন্দে।।

‘শ্রীমতীর মুরলী শিক্ষা’

বাণী

উদার অম্বর দরবারে তোরই প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।
শতদল-শ্রভ্রা পদতল-লীনা, প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।।
	সহস্র কিরণ-তারে হানি’ ঝঙ্কার
	ধ্বনি তোলে অনাহত গভীর ওঙ্কার,
সেই সুরে উদাসীন, পরমা প্রকৃতি ধ্যান-নিমগ্না মহাযোগাসীনা।।
	আনন্দ-হংস বিমুগ্ধ গতিহীন
	স্থির হ’য়ে ব্যোমে শোনে সে জ্যোতির্বীণ,
ঝরা ফুল-অঞ্জলি তা’রি চরণে প্রণতা ধরণী বাণী-বিহীনা।।

বাণী

	ত্রিজগত আলো করে আছে কালো মেয়ের পায়ের শোভা।
	মহাভাবে বিভোর শঙ্কর, ঐ পা জড়িয়ে মনোলোভা।।
	দলে দলে গগন বেয়ে গ্রহ তারা এলো ধেয়ে,
ঐ	চরণ শোভা দেখবে বলে, ঐ পায়ের নূপুর হওয়ার ছলে
সেই	শোভা কেমন বলতে গিয়ে ব্রহ্ম হলো চিরমৌনী বোবা।।
ঐ	চরণ শোভা দেখার তরে, যোগী থাকেন ধেয়ান ধ'রে
	ত্রিভুবন ভুলে অনন্তকাল যোগী থাকেন ধেয়ান ধ'রে।
	ও শুধু চরণ শোভা নয়, ঐ যে পরব্রহ্ম জ্যোতি
	শ্রী চণ্ডী বেদ পুরাণে ওরই প্রেম-আরতি
মা	দেখ্‌ত যদি নিজের চরণ নিজেই দিত বিল্বজবা
	আপনার ঐ রাঙা পায়ে নিজেই দিত বিল্বজবা।।

বাণী

মদির আঁখির সুধায় সাকি		ডুবাও আমার এ তনু মন
আজিকে তোমায় ও আমায়		বেদনার বাসর জাগরণ।
মঙ্গালস ও আঁখি তব,			সাকি, দিল দোলা প্রাণে।।
বাদল-ছাওয়া এ গুল-বাগিচায়	বুলবুল কাঁদে গজল গানে।।
গোলাবী গুলের নেশা			ছিল মোর ফুলেল ফাগুনে।
শুকায়ে গিয়াছে ফুলবন,		নাই গোলাব গুলিস্তানে।।
শুনি, সাকি তোমার কাছে		ব্যথা ভোলার দারু আছে —
হিয়া কোন অমিয়া যাচে		জান তুমি, খোদা জানে।।
দুখের পশরা লয়ে			বিফল কাঁদিয়া বৃথা (সাকি)।
সকলি গিয়াছে যখন			যাক ঈমান শ্যরাব পানে।।

বাণী

আমি	কালী নামের ফুলের ডালি এনেছি গো মাথায় ক’রে।
	দুখের সাগর পার হয়ে যায় এ ফুল যে বুকে ধ’রে।।
	(এই)	প্রসাদী ফুল দিবস-যামী
		ফিরি ক’রে ফিরি আমি,
(এই)	ফুল নিলে তার ভুলের আড়াল চিরতরে যায় গো স’রে।।

বাণী

আমার হাতে কালি মুখে কালি, মা 
আমার কালিমাখা মুখ দেখে মা 
পাড়ার লোকে হাসে খালি।। 
মোর লেখাপড়া হ’ল না মা, 
আমি ‘ম’ দেখিতেই দেখি শ্যামা, 
আমি ‘ক’ দেখতেই কালী ব’লে 
নাচি দিয়ে করতালি।। 
কালো আঁক দেখে মা ধারাপাতের 
ধারা নামে আঁখি পাতে, 
আমার বর্ণ পরিচয় হ’লো না মা 
তোর বর্ণ বিনা কালী। 
যা লিখিস মা বনের পাতায় 
সাগর জলে আকাশ খাতায়, 
আমি সে লেখা তো পড়তে পারি 
মূর্খ বলে দিক্‌ না গালি মা, 
লোকে মূর্খ ব’লে দিক্‌ না গালি।।