বাণী

দ্বৈত	:	ওগো নন্দ দুলাল নাচে ছন্দতালে
স্ত্রী	:	মধু মঞ্জির বোলে মণি কুন্তল দোলে
পুরুষ	:	চন্দন লেখা শোভে চারুভালে॥
স্ত্রী	:	রস যমুনায় জাগে ঢেউ উতরোল
পুরুষ	:	ব্রজগোপিকার প্রাণে লাগে তারি হিল্লোল
দ্বৈত	:	রাস পূর্ণিমা রাতে শিখী নাচে সাথে সাথে
		ফুল দোলে কুঞ্জেরই বকুল ডালে॥
স্ত্রী	:	নাচে নন্দ দুলাল বাজে মোহন বেণূ
পুরুষ	:	অঙ্গের লাবনিতে আলো করে অবনিতে
দ্বৈত	:	হাসিতে ঝরায় ফুল পরাগ রেণু।
স্ত্রী	:	রাঙা পায়ে রুমুঝুমু বাজে মধুর
পুরুষ	:	জীবন মরণ তার যুগল নূপুর
দ্বৈত	:	মুগ্ধ তারকা শশী রাতের দেউলে বসি
		আরতি প্রদীপ শিখা নিত্য জ্বালে॥

বাণী

তব	চঞ্চল আঁখি কেন ছলছল হে।
	হেরি মোরা অবিরল জলে ভাসে কমল
	হেরি আজি কমলে উথলে জল হে।।
	চিরদিন কাঁদায়েছে যে জল নিঠুর
আজি	অশ্রু করেছে তারে একি সুমধুর
বঁধু	সাধ যায় ধরি তব সমুখে মুকুর
যেন	বরষিছে চাঁদ মুকুতাদল হে।
কোন	অকরুণা ভাঙিল হে পাষাণের বাঁধ
তব	কলঙ্ক লেখা গেল ধুয়ে যে হে চাঁদ।
	কাঁদ কাঁদ হে বঁধু তবে বুঝিবে মনে
কত	বেদনা পেলে জল ঝরে নয়নে
আজি	কাঁদিয়া শ্যামল হ'লে নির্মল হে।।

বাণী

আমার সকল আকাশ ভ'রলো তোমার তনুর কমল-গন্ধে
আমার বন-ভবন ঘিরল মধুর কৃষ্ণ-মকরন্দে।।
	এলামেলো মলয় বহে
	বন্ধু এলো, এলো কহে
উজ্জ্বল হ'ল আমার ভুবন তোমার মুখ-চন্ধে।।
আমার দেহ-বীণায় বাজে তোমার চরণ-নূপুর-ছন্দ
সকল কাজে জাগে শুধু অধীর আনন্দ।
	আমার বুকের সুখের মাঝে
	তোমার উদাস বেণু বাজে
তোমার ছোওয়ায় আবেশ জাগে ব্যাকুল বেণীর বন্ধে।।

বাণী

বেণুকা ও-কে বাজায় মহুয়া বনে।
কেন ঝড় তোলে তার সুর আমার মনে।।
বলে আয় সে দুরন্তে সখি
আমারে কাঁদাবে সারা জনম ও-কি,
সে কি ভুলিতে তারে দেবে না জীবনে।।
সখি, ভাল ছিল তার তীর-ধনুক নিঠুর,
বাজে আরো সকরুণ তা’র বেণুকার সুর।
সখি, কেন সে বন-বিলাসী
আমারই ঘরের পাশে বাজায় বাঁশি,
আছে আরো কত দেশ, কত নারী ভুবনে।।

বাণী

বনে যায় আনন্দ-দুলাল
বাজে চরণে নূপুরের রুনুঝুনু তাল
বনে যায় গোঠে যায়।
ও কি নন্দ-দুলাল, ও কি ছন্দ-দুলাল
ও কি নন্দন-পথ, ভোলা নৃত্য-গোপাল।।
বেণু-রবে ধেনুগণ আগে যেতে পিছে চায়
ভক্তের প্রাণ গ'লে উজান বহিয়া যায়
লুকিয়ে দেখিতে এলো দেবতারি দল (তায়)
হয়ে কদম তমাল-
ব্রজ-গোপিকার প্রাণ তার চরণে নূপুর
শ্রীমতী রাধিকা তার বাশরির সুর।
সে যে ত্রিলোকের স্বামী তাই ত্রিভঙ্গ-রূপ
করে বিশ্বের রাখালি সে চির-রাখাল।।

বাণী

টিকি আর টুপিতে লেগেছে দ্বন্দ্ব বচন যুদ্ধ ঘোর
কে বড় কে ছোট চাই মীমাংসা, কার আছে কর-জোর॥
টিকি বলে শিরে আমি বিরাজিলে হয় আহা কিবা শোভা।
যেন প্রকান্ড কুষ্মান্ডের বৃন্তটি মনোলোভা।
এ যে চতুর্বর্গ ফলেরি বোঁটা।
শুনে টুপি ফিক্ ক’রে হেসে বল্লেঃ ‘ভায়া, শিরে বিরাজ করবার
শোভার কথা যদি বল তো ও বড়াই আমারি মুখে মানায়,
ও বড়াই আমার মুখে মানায়।’
আমি বাঁকা হয়ে যবে শিরে বসি, দেখে বিবিরা মূর্ছা যায়॥
টিকি বলে, মোরে বলে চৈতন্ কভু বা আর্কফলা
আর আমারি প্রসাদে প্রণামীটা মেলে দুটি বেলা চাল-কলা॥
(মেলে দাদা) দুটি বেলা চাল-কলা॥
[শুনে বাদশাহী চালে টুপি বল্লেঃ ‘আরে তোবা তোবা
চাল আর কলা? ওসব আবার খাদ্য নাকি হে? এ্যাঁ?]
বাদশাহী চালে টুপি বলে ওসব খাদ্য নাকি?
দেখো, আমারি দোয়ায়, আহা তোফা জুটে যায়, গোস্ত ও রামপাখি।
টিকি বলে মিয়া, আমার কৃপায় স্বর্গে free pass মেলে
(আর) আমারঃ through দিয়ে মগজে বুদ্ধি electricity খেলে
মিয়া আমার কৃপায় স্বর্গে free pass মেলে।
এ যে পারে যাবার টিকিট - শুধু টিকিট নয়।
[শুনে টুপি রেগে কাঁই, বল্লেঃ]
বেহেশ্‌তে মোর একচেটে অধিকার
কাফেরের তরে no admission খোদার ইস্তাহার।
(এই রূপে) ক্রমশঃ তর্ক বাড়িল ভীষণ বচনে বেজায় দড়,
এ উহারে কয় মোর ঠাঁই উঁচু তুমি বাপু স’রে পড়॥
সহসা মুন্ড ছিন্ন হইল শক্র কৃপাণ ঘায়।
টুপি আর টিকি একই সঙ্গে ভূঁয়ে গড়াগড়ি যায়॥