বাণী

এ ঘোর শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে।
রহি’ রহি’ সেই মুখ পড়িছে মনে।।
	বিজলিতে সেই আঁখি
	চমকিছে থাকি’ থাকি’
শিহরিত এমনি সে বাহু-বাঁধনে।।
শন শন বহে বায় সে কোথায় সে কোথায়
নাহি নাহি ধ্বনি শুনি উতল পবনে হায়
চরাচর দুলিছে অসীম রোদনে।।

বাণী

নিশি-ভোরে অশান্ত ধারায় ঝরঝর বারি ঝরে।
আকাশ-পারের বিরহীর বীণা যেন সুর ঝুরে আকুল স্বরে।।
কাহার মদির নিঃশ্বাস আসে
বকুলের বনে ঝরা ফুল বাসে
কর হানি দ্বারে যেন বারে বারে
খোল দুয়ার বলি ডাকে ঘুমঘোরে।।
ডাকে কেয়া বনে ডাহুক কেকা
বিরহের ভার বহি কত আর একা
ম্লান হয়ে এলো চোখে কাজলের লেখা অশ্রু-লোরে।।

বাণী

ওগো সুন্দর! তুমি আসিবে বলিয়া বনপথে পড়ে ঝরি’
				(রাঙা) অশোকের মঞ্জরি।
হাসে বনদেবী বেণীতে জড়ায়ে মালতীর বল্লরী,
				নব কিশলয় পরি’।।
	কুমুদী-কলিকা ঈষৎ হেলিয়া
	চাঁদেরে নেহারি হাস মুচিকিয়া,
মহুয়ার বনে ভ্রম-ভ্রমরী ফিরিতেছে গুঞ্জরি’।।
যাহা কিছু হেরি ভাল লাগে আজ লুকাইতে নারি হাসি,
কাজ করি আর শুনি যেন কানে মিঠে পাহাড়িয়া বাঁশি।
	এক শাড়ি খুলে পরি’ আর শাড়ি
	বারে বারে মুখ মুকুরে নেহারি,
দুরু দুরু হিয়া উঠে চমকিয়া, অকারণে লাজে মরি।।

বাণী

ওহে রসিক রসাল কদলী।
ভাবুকের তুমি ভাবের আধার পেটুকের প্রাণ-পুতলী।।
আহা, তুমি যুগে যুগে বর্তমান
বৃন্দাবনে মোহন বাঁশি বাঙলায় মর্তমান।
বহুরূপী তুমি বহুনামধারী চম্প বীচে কাঁঠালি।।
তোমার কাঁচকলা রূপের উপাসক পেট-রোগা যত ভক্ত,
ঝোলে কি ভাজায় তোমারে সাজায় (তুমি) মজাও পলতা শুক্ত।
নৈবেদ্যে ও আদ্য শ্রাদ্ধে দয়াময়, জগতের যত নর-বানর
তোমার কৃপার কাঙালি।।

কৌতুক নাটিকা : ‘পণ্ডিত মশায়ের ব্যাঘ্র শিকার’

বাণী

এলো ঐ শারদ রাতি!
শেফালি-সুগন্ধে ভরিয়া পবনে, জ্বালায়ে চাঁদের বাতি।।
বরষার জলধারা ত্যাজিল সে-খরবেগ
ঝরঝর ঝরণে রিক্ত হইল মেঘ,
শ্বেত-হংস খেলে, সারঙ্ সুরে মাতি’।।
আবরণ-হীনা মেঘ ভেসে যায় বাতাসে
কাহার আগমনী প্রকাশে আভাসে,
কদম্ব রেণু মাখি’, এসো প্রিয় সাথি।।

বাণী

পথিক ওগো চল্‌তে পথে
	তোমায় আমায় পথের দেখা।
ঐ দেখাতে দুইটি হিয়ায়
	জাগ্‌ল প্রেমের গভীর রেখা।।
এই যে দেখা শরৎ-শেষে
পথের মাঝে অচিন্‌ দেশে,
কে জানে ভাই কখন কে সে
	চল্‌ব আবার পথটি একা।।
এই যে মোদের একটু চেনার
	আবছায়াতেই বেদন জাগে
ফাগুন হাওয়ার মদির ছোঁওয়া
	পূবের হাওয়ার কাঁপন লাগে।
হয়ত মোদের শেষ দেখা এই
এম্‌নি ক’রে পথের বাঁকেই
রইল স্মৃতি চারটি আঁখেই
	চেনার বেদন নিবি লেখা।।