বাণী

দোলন চাঁপা বনে দোলে —
	দোল-পূর্ণিমা-রাতে চাঁদের সাথে।
শ্যাম পল্লব কোলে যেন দোলে রাধা
	লতার দোলনাতে॥
যেন দেব-কুমারীর শুভ্র হাসি
ফুল হয়ে দোলে ধরায় আসি’
আরতির মৃদু জ্যোতি প্রদীপ-কলি
	দোলে যেন দেউল-আঙিনাতে॥
বন-দেবীর ওকী রুপালি ঝুমকা
	চৈতি সমীরণে দোলে —
রাতের সলাজ আঁখি-তারা
	যেন তিমির আঁচলে।
ও যেন মুঠিভরা চন্দন-গন্ধ
দোলে রে গোপিনির গোপন আনন্দ,
ও কী রে চুরি করা শ্যামের নূপুর —
	চন্দ্র-যামিনীর মোহন হাতে॥

বাণী

আমার কালিবাঞ্ছা কল্পতরুর ছায়াতলে আয় রে,
এই তরুতলে যে যাহা চায় তখনি তা পায় রে॥
	তুই চতুর্বর্গ ফল কুড়াবি
	যোগ পাবি, ভোগ পাবি
এমন কল্পতরু থাকতে - কেন মরিস্ নিরাশায় রে॥
দস্যু ছেলের আবদারে সে সাজে ডাকাত কালির বেশে,
কত রামপ্রসাদের কন্যা হয়ে বেড়া বেঁধে যায় রে।
	ওরে পুত্র-কন্যা বিভব-রতন,
	চেয়ে নে যার ইচ্ছা যেমন,
ওরে আমার এ মন থাকে যেন বাঞ্ছাময়ীর পায় রে॥
	সে আর কিছু না চায়
	চেয়ে চেয়ে বাসনা তার শেষ হল না হায়!
এবার খালি হাতে তালি দিয়ে (আমি) চাইব কালিকায় রে॥

বাণী

ঝর্‌ল যে-ফুল ফোটার আগেই তারি তরে কাঁদি, হায়!
মুকুলে যার মুখের হাসি চোখের জলে নিভে যায়।।
হায় যে-বুলবুল গুল্‌বাগিচায় গোলাপ কুঁড়ির গাইত গান,
আকুল ঝড়ে আজ সে প'ড়ে পথের ধূলায় মূরছায়।।
সুখ-নদীর উপকূলে বাঁধিল যে সোনার ঘর,
আজ কাঁদে সে গৃহ-হারা বালুচরে নিরাশায়।।
যাবার যারা, যায় না তারা — থাকে কাঁটা, ঝরে ফুল।
শুকায় নদী মরুর বুকে, প্রভাত আলো মেঘে ছায়।।

বাণী

আর কত দুখ্ দেবে, বল মাধব বল বল মাধব বল।
দুখ্ দিয়ে যদি সুখ পাও তুমি কেন আঁখি ছলছল॥
	তব শ্রীচরণ তলে আমি চাহি ঠাঁই,
	তুমি কেন ঠেল বাহিরে সদাই;
আমি কি এতই ভার এ জগতে যে, পাষাণ তুমিও টল॥
ক্ষুদ্র মানুষ অপরাধ ভোলে তুমি নাকি ভগবান,
তোমার চেয়ে কি পাপ বেশি হ’ল (মোরে) দিলে না চরণে স্থান।
	হে নারায়ণ! আমি নারায়ণী সেনা,
	মোরে কুরুকুল দিতে ব্যথা কি বাজে না,
(যদি) চার হাতে মেরে সাধ নাহি মেটে দু’চরণ দিয়ে দ’ল॥

বাণী

নিশীথ-স্বপন তোর ভু’লে যা নিশি-শেষে।
বাদল-অবসানে আকাশ উঠেছে হেসে।।
চখার পাশে আসে বিরহ-রাতের চখি
আঁধার লুকাল ঐ দূর বনে এলোকেশে।।
শরম-রাঙা গালে জাগিল কুমারী ঊষা,
তরুণ অরুণ ঐ এসো রাঙা বর-বেশে।।

বাণী

বসিয়া নদী-কূলে,এলোচুলে			কে উদাসিনী
কে এলে, পথ ভুলে, এ অকূলে		বন-হরিণী।।
কলসে জল ভরিয়া চায় করুণায়		কুল-বধূরা,
কেঁদে যায় ফুলে, ফুলে, পদমূলে,		সাঁঝ-তটিনী।।
দলিয়া কত ভাঙা-মন, ও চরণ,		করেছ রাঙা
কাঁদায়ে কত না দিল, এলে নিখিল		মন-মোহিনী।।
হারালি গোধূলি-লগন কবি,			কোন নদী কিনারে,
একি সেই স্বপন-চাঁদ, পেতেছে ফাঁদ		প্রিয়ার সতিনী।।