বাণী

মেঘ-মেদুর গগন কাঁদে হুতাশ পবন
কে বিরহী রহি’রহি’দ্বারে আঘাত হানো।
শাওন ঘন ঘোর ঝরিছে বারি অঝোর
কাঁপিছে কুটির মোর দীপ নেভানো।।
বজ্রে বাজিয়া ওঠে তব সঙ্গীত,
বিদ্যুতে ঝলকিছে আঁখি-ইঙ্গিত,
চাঁচর চিকুরে তব ঝড় দুলানো, ওগো মন ভুলানো।।
এক হাতে, সুন্দর, কুসুম ফোটাও!
আর হাতে নিষ্ঠুর মুকুল ঝরাও।
হে পথিক, তব সুর অশান্ত ব‍ায়
জন্মান্তর হতে যেন ভেসে আসে হায়!
বিজড়িত তব স্মৃতি চেনা অচেনায় প্রাণ কাঁদানো।।

বাণী

আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে।
সকলি দিয়াছি মোর ঠাকুরের রাঙা চরণের তলে॥
		মোর দেহ-প্রাণ, জাতি কুল মান,
		লজ্জা ও গ্লানি আর অভিমান;
(আমি) দিছি চিরতরে জলাঞ্জলি গো কালো যমুনার জলে॥
মোরে যদি কেহ ভালোবাসে আজ জল আসে আঁখি ভ’রে।
মোর ছল ক’রে সে যে ভালোবাসে মোর শ্যামসুন্দরে।
মোরে		না বুঝিয়া কেহ করিলে আঘাত
		কেঁদে বলি, ওরে ক্ষমা করো নাথ্
বৃন্দাবনে যে প্রেম মধুর হয় আঘাত নিন্দাছলে॥

বাণী

ফিরে এলো সেই কৃষ্ণাষ্টমী তিথি, হে শঙ্খচক্রধারী!
তোমার মাভৈঃ অভয় আকাশবাণী, কেন নাহি শুনি? হে মুরারি!!
	সেই ঘনঘটা দুর্যোগ-নিশি
	নিরাশা-আঁধারে ঢাকা দশদিশি;
গগনে তেমনি ঘোর দুন্দুভি বাজে, ঝরে তেমনি অশ্রু-বারি।।
আজো মানুষের আত্মা তেমনি কাঁদে আশা-যমুনার দুই পারে,
এ-পারে দেবকী ও-পারে যশোদা আজো ডাকে মুক্তির বিধাতারে।
	আবার প্রেমের বংশী বাজাও,
	এই হানাহানি হিংসা ভুলাও,
আর্ত-কলির গানের এ শেষ-কলি দাও শেষ করে ব্যথাহারী।।

বাণী

পুরুষ 	: 	বিদেশি অতিথি সিন্ধু পারে পথহারা ফিরি দ্বারে দ্বারে।
স্ত্রী 		: 	বাইরে হিম ঝরে ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বন্ধু এসো এপারে।।
পুরুষ 	: 	তোমারে বুঝি না বুঝি বা আধেক
স্ত্রী 		: 	নয়নের ভাষা বঁধু সব দেশে এক,
পুরুষ 	: 	তুমি ঊষা, ল’য়ে তুষার কর খেলা — ভোরবেলা।
স্ত্রী 		: 	পুবের তপন সম রাঙাও জীবন মম তোমার কিরণধারে।।
পুরুষ 	: 	তব কণ্ঠে সুর শুনি হায় সকরুণ স্মৃতি জাগায়,
স্ত্রী 		: 	বিদেশি চেরী-কুসুমের মালিকা লহ গলায়।
উভয়ে	:	চল যাই যেথা নাই দেশের বন্ধন
			নাহি গো ক্রন্দন,
			নিরুদ্দেশের পথে প্রেম অভিসারে।।

বাণী

নাচে গৌরীদিবা হিম-গিরি-দুহিতা।
নাচে দীপ্তিমতী নাচে উমা তপতী নাচে রে চির-আনন্দিতা।।
তার কিরণ-আচল দোলে ঝলমল
গিরি-পাষাণ অটল করে টলমল
গলিয়া তুষার ঝরে নির্ঝর জল
তার চরণ-ছন্দ-চকিতা।।
তার নাচের মায়ায় প্রাণ পায় জড় জীব
ভুলি’ বিরহ সতীর জাগে যোগীন্দ্র শিব,
জাগে কুসুম-কলি গাহে বিহগ-অলি,
তার রূপে ত্রিদিব হ’ল দীপন্বিতা।।

বাণী

তুমি	সারাজীবন দুঃখ দিলে, তব দুঃখ দেওয়া কি ফুরাবে না!
যে	ভালোবাসায় দুঃখে ভাসায় সে কি আশা পূরাবে না॥
মোর	জনম গেল ঝুরে ঝুরে - লোকে লোকে ঘুরে ঘুরে,
তব	স্নিগ্ধ পরশ দিয়ে কি, নাথ, দগ্ধ হিয়া জুড়াবে না॥
তুমি	অশ্রুতে যে-বুক ভাসালে —
সেই	বক্ষে এসো দিন ফুরালে
তুমি	আঘাত দিয়ে ফুল ঝরালে, হাত দিয়ে কি কুড়াবে না॥