বাণী

আমার হৃদয়-শামাদানে জ্বালি’ মোমের বাতি।
নবীজী গো! জেগে’ আমি কাঁদি সারা রাতি।।
	আস্‌মানেরই চাঁদোয়া-তলে
	চাঁদ-সেতারার পিদিম১ জ্বলে,
ওরাও যেন খোঁজে তোমায় আমার দুঃখের সাথি২।।
দিনের কাজে পাই না সময় যাই নিরালা রাতে,
তোমায় পাওয়ার পথ খুঁজি গো কোরানের আয়াতে।
	তোমায় পেলে পাব খোদায়
	তাই শরণ যাচি তোমারি পায়,
পাওয়ার আশে জেগে থাকি প্রেমের শয্যা পাতি’।।
	ঝর্‌লে পাতা, ডাক্‌লে পাখি,
	চম্‌কে ভাবি, তুমি নাকি?
মস্‌জিদে যাই গভীর রাতে খুঁজি আঁতিপাঁতি।।
রোজ-হাশরে দেখা পাব মোরে সবাই বলে;
তোমার বিহনে আমার ঘুম নাই নয়নে,
মোর জীবনে রোজ-কিয়ামত আসে প্রতি পলে।
বিষের সমান লাগে আমার দুনিয়ার যশ-খ্যাতি।।

১. চেরাগ ২. ওরা আমার দুখের সাথি

বাণী

নিশীথ রাতে ডাক্‌লে আমায়, কে গো তুমি কে?
কাঁদিয়ে গেলে আমার মনের বনভূমিকে,
		কে গো তুমি কে।।
	তোমার আকুল করুণ স্বরে
	আজকে তা’রেই মনে পড়ে,
এম্‌নি রাতে হারিয়েছি যে হৃদয়-মণিকে।।
দুয়ার খু’লে চেয়ে আছি১ তারার পানে দূরে,
আর একটিবার ডাকো ডাকো তেম্‌নি করুণ সুরে।
	একটি কথা শুন্‌ব ব’লে
	রাত কেটে যায় চোখের জলে,
দাও সাড়া দাও, জাগিয়ে তোলো আঁধার পুরীকে।।

১. থাকি

বাণী

এখনো ওঠেনি চাঁদ এখনো ফোটেনি তারা
এখনো দিনের কাজ হয়নি যে মোর সারা —
		হে পথিক যাও ফিরে।।
এখনো বাঁধিনি বেণী, তুলিনি এখনো ফুল
জ্বালি নাই মণিদীপ মম মন–মন্দিরে —
		হে পথিক যাও ফিরে।।
পল্লব–গুণ্ঠনে নিশি–গন্ধার কলি
চাহিতে পারে না লাজে দিবস যায়নি বলি’।
এখনো ওঠেনি ঢেউ থির সারসির নীরে —
		হে পথিক যাও ফিরে।।
যবে ঝিমাইবে চাঁদ ঘুমে তখন তোমার লাগি’
র’ব একা পথ চেয়ে বাতায়ন–পাশে জাগি’
কবরীর মালা খুলে ফেলে দেব ধীরে ধীরে —
		হে পথিক যাও ফিরে।।

বাণী

আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে কৃষ্ণ কানাই খেলে হোলি।
হোরির মাতনে চুড়ি ও কাঁকনে উঠিছে কল-কাকলি।।
শ্যামল তনু হ’ল রাঙা আবিরে রেঙে,
ইন্দ্রধনু-ছটা যেন কাজল মেঘে,
				রাঙিল রঙে নীল চোলি।।
লহু লহু হাসে মুহু মুহু ভাসে রাঙা কুঙ্কুম ফাগের রাগে,
দোঁহে দুহু ধরি’ মারে পিচকারি চাঁদ-মুখে কলঙ্ক জাগে।
অঙ্গে অপাঙ্গে অনঙ্গ-রঙ্গিমা ইঙ্গিতে উঠিছে উছলি’।।

বাণী

ব্রজবাসী মোরা এসেছি মথুরা, দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।
মথুরার রাজা হ’য়েছে মোদের কানাই গোঠ বিহারী।।
[মথুরার রাজা হয়েছে হায় তোমাদের রাজা হয়েছে ভাই —
কানাই গোঠ বিহারী, দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।]*
রাজ-দণ্ড কেমন মানায় শোভিত যে হাতে বাঁশি
[শোভিত যে হাতে বাঁশি]*
মুকুট মাথায় কেমন দেখায় শিরে শিখী-পাখা ধারী।।
[সে শিরে শিখী-পাখা ধারী
দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।]*
শ্যামলী ধেনুর দুগ্ধের ক্ষীর এনেছি কানুর লাগিয়া
পাঠায়েছে তারে মথিয়া নবনী, যশোদা-নিশীথ জাগিয়া,
বনমালী লাগি নব-নীপ-মালা আনিয়াছি হের [মোরা] গাঁথিয়া,
কুড়ায়ে এনেছি ফেলে এসেছিল যে বাঁশরি বনচারী।।
ব্রজের দুলাল রাখাল ব’সেছে রাজার আসন ’পরে,
সারা গোকুলের এনেছি আশিস তাই রে তাহার তরে।
পাঠায়েছে গোপী-চন্দন তাই রাই অনুরাগ ভরে
(পাঠায়েছে রাই অনুরাগ ভরা গোপী চন্দন,
পাঠায়েছে রাই [তাই] হরির লাগিয়া হরি চন্দন।)
নয়ন-যমুনা ছানিয়া এনেছি আকুল অশ্রুবারি।।
[দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।।]*

* রেকর্ডে গীত

বাণী

মাকে আমার দেখেছে যে ভাইকে সে কি ঘৃণা করে।
ত্রিলোক-বাসী প্রিয় তাহার পরান কাঁদে সবার তরে॥
নাই জাতি ভেদ উচ্চ-নীচের জ্ঞান
তাহার কাছে সকলে সমান,
দেখলে গুহক চন্ডালে সে রামের মত বক্ষে ধরে॥
মা আমাদের মহামায়া পরমা প্রকৃতি
পিতা মোদের পরমাত্মা রে তাই সবার সাথে প্রীতি
মোদের সবার সাথে প্রীতি।
সন্তানে তাঁর ঘৃণা করে মাকে করে পূজা
সে পূজা তার নেয় না কভু, নেয় না দশভূজা।১
(মোরা) এই ভেদ-জ্ঞান ভুলব যেদিন
মা সেই দিন আসবে ঘরে॥

১. সে পূজা তার নেয় না চতুর্ভুজা, ওরে নেয় না দশভুজা