বাণী

শুকনো পাতার নূপুর পায়ে
		নাচিছে ঘুর্ণিবায়
জল তরঙ্গে ঝিল্‌মিল্‌ ঝিল্‌মিল্‌
		ঢেউ তুলে সে যায়।।
দীঘির বুকে শতদল দলি’
ঝরায়ে বকুল–চাঁপার কলি
চঞ্চল ঝরনার জল ছল ছলি
		মাঠের পথে সে ধায়।।
বন–ফুল আভরণ খুলিয়া ফেলিয়া
আলুথালু এলোকেশ গগনে মেলিয়া
পাগলিনী নেচে যায় হেলিয়া দুলিয়া
		ধূলি–ধূসর কায়।।
ইরানি বালিকা যেন মরু–চারিণী
পল্লীর–প্রান্তর–বনমনোহারিণী
আসে ধেয়ে সহসা গৈরিক বরণী
		বালুকার উড়্‌নি গায়।।

বাণী

তোমার সজল চোখে লেখা মধুর গজল গান।
চেয়ে চেয়ে তাই দেখে গো আমার দু’নয়ান।।
	আমার পুঁথির আখর যত
	তোমার মালার মোতির মত,
তাই দেখি আর পাঠ ভুলে যাই, আকুল করে প্রাণ।।
যেমন	বুলবুলি আর রঙিন গোলাব
	লায়লী-মজনু দুইজনে ভাব,
ওদের প্রেমে ধূলির ধরা হল গুলিস্তান।।

নাটিকা: ‘লায়লী-মজনু’

বাণী

	চলো সাম্‌লে পিছল পথ গোরী।
	ভরা যৌবন তায় ভরা গাগরি।।
	নীর ভরণে এসে সখি নদী-তীর
	তীর খেয়ো না হৃদয়ে ডাগর আঁখির,
	জলে ভাসিবে নয়ন কিশোরী।।
	হৃদি নিঙাড়ি এ পথে প্রেমিক কত
সখি	করেছে রুধির-পিছল এ পথ,
	কেহ উঠিল না এ পথে পড়ি’।।
	তব ঘটের সলিল চাহিয়া সই
কত	তৃষ্ণা-আতুর পথিক দাঁড়ায়ে ঐ,
	মরুভূমে তুমি মেঘ-পরী।।

বাণী

ঘুমায়েছে ফুল পথের ধূলায় (ওগো)
	জাগিয়ো না উহারে ঘুমাইতে দাও।
বনের পাখী ধীরে গাহ গান
	দখিনা হাওয়া ধীরে ধীরে বয়ে যাও।।
এখনো শুকায়নি চোখে তারই জল
	এখনো আঁধারে হাসি ছলছল
প্রভাত রবি শুকায়ো না তায়
	ধীরে কিরণে তাহারি নয়নে চাও।।
সামলে পথিক ফেলিয়ো চরন
	ঝরেছে হেথায় ফুলেরও জীবন।
ভুলিয়া দল না ঝরা পাতাগুলি
	ফুল সমাধি থাকিতে পারে হেথাও।।

বাণী

কমলা রূপিণী, শক্তি-স্বরূপিণী
পতিব্রতা সতী ধর্ম-বিধায়িনী — সীতা, জয় সীতা।
জনক দুলারী রাজকুমারী
লব-কুশ-জননী, রাম-কী পিয়ারী — সীতা, জয় সীতা।।
	আওধ-প্রজাকুল শান্তি-বিধায়িনী
	পতি-অনুগামিনী, বন-বনচারিণী,
অশোক-কানন উজ্জ্বলকারিণী — সীতা, জয় সীতা।।
	বসুমতী-অঙ্ক সমুজ্জ্বল-কারিণী
	সতীকে তেজ-বল-অগ্নিনিবারণী,
সুখ-দুখমে পতি-চরম ভিখারিনী — সীতা, জয় সীতা।।

বাণী

মম মধুর মিনতি শোন ঘনশ্যাম গিরিধারী
কৃষ্ণমুরারী, আনন্দ ব্রজে তব সাথে মুরারি।।
যেন নিশিদিন মুরলী-ধ্বনি শুনি
উজান বহে প্রেম-যমুনারি বারি
নূপুর হয়ে যেন হে বনচারী
চরণ জড়ায়ে ধরে কাঁদিতে পারি।।