যে অবহেলা দিয়ে মোরে করিল পাষাণ।
সখি কেন কেঁদে ওঠে তারি তরে মোর প্রাণ।।
যে ফুল ফুটায়ে তার মধু নিল না
মোরে ধরার ধূলিতে এনে ধরা দিল না,
কেন তার তরে বুকে এত জাগে অভিমান।।
মোর প্রেম-অঞ্জলি সে যত যায় দলি’
তারে তত জড়াতে চাই, শ্যাম-সুন্দর বলি’,
চাঁদ সে যে আকাশের সে ধরা দেয় না
তবু চকোরীর ভুল হয় নাকো অবসান।।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া!
ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।।
হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি — ভাব্লি এতেই জাতির জান,
তাইত বেকুব, করলি তোরা এক জাতিকে একশ’-খান।
এখন দেখিস ভারত জোড়া পঁচে আছিস বাসি মড়া,
মানুষ নাই আজ, আছে শুধু জাত-শেয়ালের হুক্কাহুয়া।।
জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্ম সম সহন-শীল,
তাকে কি ভাই ভাঙ্তে পারে ছোঁয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল!
যে জাত-ধর্ম ঠুন্কো এত, আজ নয় কা’ল ভাঙবে সে ত,
যাক্ না সে জাত জাহান্নামে, রইবে মানুষ, নাই পরোয়া।।
বলতে পারিস, বিশ্ব-পিতা ভগবানের কোন সে জাত?
কোন্ ছেলের তার লাগলে ছোঁয়া অশুচি হন জগন্নাথ?
ভগবানের জাত যদি নাই তোদের কেন জাতের বালাই?
ছেলের মুখে থুথু দিয়ে মার মুখে দিস ধূপের ধোঁয়া।।
ওগো পূজার থালায় আছে আমার ব্যথার শতদল।
হে দেবতা রাখ সেথা তোমার পদতল।।
নিবেদনের কুসুম সহ
লহ হে নাথ, আমায় লহ
যে আগুনে আমায় দহ সেই আগুনে
আরতি-দীপ জ্বেলেছি উজল।।
যে নয়নের জ্যোতি নিলে কাঁদিয়ে পলে পলে,
মঙ্গল-ঘট ভরেছি নাথ, সেই নয়নের জলে।
যে চরণে করো আঘাত
প্রণাম লহ সেই পায়ে নাথ
রিক্ত তুমি করলে যে হাত, হে দেবতা!
লও সে হাতে অর্ঘ্য-সুমঙ্গল।।