বাণী

ঐ জল্‌কে চলে লো কার ঝিয়ারি। 
রূপ চাপে না তার নীল শাড়ি।। 
এমন মিঠি বিজলি দিঠি শেখালে তায় কে গো? 
রূপে ডুবু ডুবু রবির রঙ-ভরা ছবির, ছোঁয়াচ লেগেছে গো। 
মন মানে না, আর কি করি ! 
চলে পিছনে ছুটে’ তারি।। 
নাচে বুলবুলি ফিঙে ঢেউয়ে নাচে ডিঙে 
মাঠে নাচে খঞ্জন; 
তার দু’টি আঁখি-তারা নেচে হতো সারা —
দেখেছে বল কোন জন? 
আঁখি নিল যে মোর মন্‌ কাড়ি’ —
ঘরে থাকিতে আর নারি লো।। 
গোলাপ বেলী যুঁই-চামেলি - কোন্‌ ফুল তারি তুল্‌ গো
তার যৌবন-নদী বয় নিরবধি ভাসায়ে দু’ কূল গো 
নিল ভাসায়ে প্রাণ আমারি 
রূপে দু’কূল–ছাপা গাঙ্‌ তারি।।

বাণী

আবার কেন আগের মত অমন চোখে চাও
যে বিরহ গেছি ভুলে’, ভুলতে তারে দাও।।
	শান্ত উদাস আমার আকাশ
	নাই সেথা আর মেঘের আভাস,
নির্মল সে-আকাশ কেন বাদল-মেঘে ছাও।।
	বিপুল ধরার দূর নিরালায়
	একটুখানি পেয়েছি ঠাঁই,
নিঠুর, তুমি আবার আগুন জ্বেলো না সেথাও।।

বাণী

আমার পায়ের বেড়ি এই সোনার পুরী ভেঙে।
যাও গো নিয়ে তোমার দেশে (তোমায়) পাব সেথায় জেগে।।
এই যে সাগর এই যে কুমার এই যে তোমার আমি
এই যে তুমি স্বপ্নে-পাওয়া মধুমালার স্বামী,
(এবার) তোমার হাসির রঙে, আঁধার পুরী উঠুক রেঙে।।

নাটক : 'মধুমালা'

বাণী

কে পাঠালে লিপির দূতী গোপন লোকের বন্ধু গোপন।
চিন্‌তে নারি হাতের লেখা মনের লেখা চেনে গো মন।।
	গান গেয়ে যাই আপন মনে
	সুরের পাখি গহন বনে,
সে সুর বেঁধে কার নয়নে — জানে শুধু তা’রি নয়ন।।
	কে গো তুমি গন্ধ-কুসুম
	গান গেয়ে কি ভেঙেছি ঘুম,
তোমার ব্যথার নিশীথ নিঝুম — হেরে’ কি মোর গানের স্বপন।।
	নাই ঠিকানা নাই পরিচয়
	কে জানে ও-মনে কি ভয়,
গানের কমল ও-চরণ ছোঁয় — তাইতে মানি ধন্য জীবন।।
	সুরের গোপন বাসর-ঘরে
	গানের মালা বদল করে,
সকল আঁখির অগোচরে — না দেখাতে মোদের মিলন।।

বাণী

আমার হাতে কালি মুখে কালি, মা 
আমার কালিমাখা মুখ দেখে মা 
পাড়ার লোকে হাসে খালি।। 
মোর লেখাপড়া হ’ল না মা, 
আমি ‘ম’ দেখিতেই দেখি শ্যামা, 
আমি ‘ক’ দেখতেই কালী ব’লে 
নাচি দিয়ে করতালি।। 
কালো আঁক দেখে মা ধারাপাতের 
ধারা নামে আঁখি পাতে, 
আমার বর্ণ পরিচয় হ’লো না মা 
তোর বর্ণ বিনা কালী। 
যা লিখিস মা বনের পাতায় 
সাগর জলে আকাশ খাতায়, 
আমি সে লেখা তো পড়তে পারি 
মূর্খ বলে দিক্‌ না গালি মা, 
লোকে মূর্খ ব’লে দিক্‌ না গালি।। 

বাণী

আমি গত জনমে, হে প্রিয়, যত কথা বলেছিনু তব কাছে।
ফুল হয়ে সেই কথা আজ পৃথিবীতে ফুটিয়াছে।।
	কাঁদিয়া কাঁদিয়া যত আঁখি মম
	নিভিয়া গিয়াছে ওগো প্রিয়তম
তারা হয়ে সেই আঁখিগুলি মোর তব পথ চেয়ে আছে।।
যত দীপ জ্বেলে নিশি জেগেছিনু একা বাতায়ন তলে,
কমল কুমুদ হয়ে সেই দীপ ফুটেছে সায়র জলে।
	চকোরিনী হয়ে অপূর্ণ সাধ
	আজো কেঁদে যায় ওগো মোর চাঁদ,
চাতকিনী হয়ে আজো মোর প্রাণ তৃষ্ণার জল যাচে।।