তোমার বাণীরে করিনি গ্রহণ
বাণী
তোমার বাণীরে করিনি গ্রহণ ক্ষমা কর হজরত। মোরা ভুলিয়া গিয়াছি তব আদর্শ, তোমারি দেখানো পথ ॥ বিলাস-বিভব দলিয়াছ পায় ধূলি সম তুমি, প্রভু, তুমি চাহ নাই আমরা হইব বাদশা-নবাব কভু। এই ধরণীর ধন-সম্ভার - সকলেরি তাহে সম অধিকার; তুমি বলেছিলে ধরণীতে সবে সমান পুত্র-বৎ ॥ প্রভু তোমার ধর্মে অবিশ্বাসীরে তুমি ঘৃণা নাহি ক’রে আপনি তাদের করিয়াছ সেবা ঠাঁই দিয়ে নিজ ঘরে। ভিন্ ধর্মীর পূজা-মন্দির, ভাঙিতে আদেশ দাওনি, হে বীর, প্রভু আমরা আজিকে সহ্য করিতে পারিনে’ক পর-মত ॥ তুমি চাহ নাই ধর্মের নামে গ্লানিকর হানাহানি, তলোয়ার তুমি দাও নাই হাতে, দিয়াছ অমর বাণী। মোরা ভুলে গিয়ে তব উদারতা সার করিয়াছি ধর্মন্ধতা, বেহেশ্ত্ হ’তে ঝরে নাকো আর তাই তব রহমত ॥
ওরে গো-রাখা রাখাল তুই কোথা হতে এলিরে
বাণী
ওরে গো-রাখা রাখাল তুই কোথা হতে এলিরে আষাঢ় মাসের মেঘের বরণ কেমন ক'রে পেলি রে।। কে দিয়েছে আলতা মেখে পা'য় চলতে গেলে নূপুর বেজে যায় রে; নূপুর বেজে' যায়। তোর আদুল গায়ে বাঁধা কেন গাঁদা রঙের চেলি রে।। তোর ঢলঢলে দুই চোখে যেন নীল শালুকের কুঁড়ি রে তোরে দেখে কেন হাসে যত গোপ-কিশোরী রে। তোর গলার মালার গন্ধে আমার মন গুনগুনিয়ে বেড়ায় রে মৌমাছি যেমন রে; তুই ঘর-সংসার ভুলালি কোন মায়াতে ফেলি' রে।।
করুণ কেন অরুণ আঁখি
বাণী
করুণ কেন অরুণ আঁখি দাও গো সাকি দাও শারাব হায় সাকি এ আঙ্গুরী খুন নয় ও হিয়ার খুন–খারাব।। আর সহে না দিল্ নিয়ে এই দিল–দরদির দিল্লাগী, তাইতে চালাই নীল পিয়ালায় লাল শিরাজি বে–হিসাব।। হারাম কি এই রঙিন পানি আর হালাল এই জল চোখের? নরক আমার হউক মঞ্জুর বিদায় বন্ধু!লও আদাব।। দেখ্ রে কবি, প্রিয়ার ছবি এই শারাবের আর্শিতে, লাল গেলাসের কাঁচ্–মহলার পার হ’তে তার শোন্ জবাব্।।
আমায় নহে গো ভালবাস শুধু
বাণী
আমায় নহে গো – ভালবাস শুধু ভালবাস মোর গান। বনের পাখিরে কে চিনে রাখে গান হ’লে অবসান।। চাঁদেরে কে চায় – জোছনা সবাই যাচে, গীত শেষে বীণা প’ড়ে থাকে ধূলি মাঝে; তুমি বুঝিবে না বুঝিবে না — আলো দিতে পোড়ে কত প্রদীপের প্রাণ।। যে কাঁটা-লতার আঁখি-জল, হায়, ফুল হ’য়ে ওঠে ফুটে — ফুল নিয়ে তায় দিয়েছ কি কিছু শূন্য পত্র-পুটে! সবাই তৃষ্ণা মিটায় নদীর জলে, কী তৃষা জাগে সে নদীর হিয়া-তলে — বেদনার মহাসাগরের কাছে কর সন্ধান।।