বাণী

নৃত্যকালী শঙ্কর সঙ্গে নাচে অতি রুদ্র-বিহঙ্গে।
ছন্দ ঝরে ঝর্ঝর ধারায় মন্দাকিনী গঙ্গা তরঙ্গে।।
মুক্তবেণী ধূর্জটি-জটা বিধূনিত অম্বরে দোলে
সসাগরা ভীতা পৃথ্বী কাঁপে মহাবিষ্ণুর কোলে,
বাজে ঘোর ডম্বরু শিঙ্গা উল্কা ছোটে ভ্রুকুটি ভঙ্গে।।
মৃত্যু-ক্ষুধা জাগিল একি রে, সৃষ্টি-স্থিতি সংহার মানসে।
পঞ্চভূত চিত্ত অহঙ্কার ব্রহ্মা-হরি লয় হ’ল ব্রহ্মে
উগ্র তারা রুদ্রেরে আবরি’ নাচে একা উন্মাদ দম্ভে,
একি হেরি মূর্ছিতা শক্তি সোহম্ শিব আমারি অঙ্গে।।

বাণী

নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া কে এলো মক্কায় আমিনার কোলে
ফাগুন-পূর্ণিমা-নিশীথে যেমন আস্‌মানের কোলে রাঙা চাঁদ দোলে।।
	কে এলো কে এলো গাহে কোয়েলিয়া,
	পাপিয়া বুল্‌বুল্‌ উঠিল মাতিয়া,
গ্রহতারা ঝুঁকে করিছে কুর্নিশ হুরপরী হেসে পড়িছে ঢ’লে।।
	জিন্নাতের আজ খোলা দরওয়াজা পেয়ে
	ফেরেশ্‌তা আম্বিয়া এসেছে ধেঁয়ে
	তাহ্‌রীমা বেঁধে ঘোরে দরুদ গেয়ে
	দুনিয়া টলমল্‌, খোদার আরশ টলে।।
	এলো রে চির-চাওয়া এলো আখেরি নবী
	সৈয়দে মক্কী মদনী আল্‌-আরবি,
	নাজেল হয়ে সে যে ইয়াকুত-রাঙা ঠোঁটে
	শাহ্‌দতের বাণী আধো আধো বোলে।।

বাণী

আল্লাকে যে পাইতে চায় হজরতকে ভালবেসে।
আরশ্‌ কুরসি লওহ কালাম, না চাহিতেই পেয়েছে সে।।
রসুল নামের রশি ধ’রে যেতে হবে খোদার ঘরে,
নদী-তরঙ্গে যে পড়েছে ভাই, দরিয়াতে সে আপনি মেশে।।
তর্ক ক’রে দুঃখ ছাড়া কি পেয়েছিস্‌ অবিশ্বাসী,
কি পাওয়া যায় দেখ্‌ না বারেক হজরতে মোর ভালবাসি’।
এই দুনিয়ায় দিবা-রাতি ঈদ্‌ হবে তোর নিত্য সাথী,
তুই যা চাস্‌ তাই পাবি রে ভাই আহমদ চান যদি হেসে।।

বাণী

সুদূর মক্কা মদিনার পথে আমি রাহি মুসাফির,
বিরাজে রওজা মোবারক যথা মোর প্রিয় নবীজীর।।
	বাতাসে যেখানে বাজে অবিরাম
	তওহিদ বাণী খোদার কালাম, 
জিয়ারতে যথা আসে ফেরেশ্‌তা শত আউলিয়া পীর।।
মা ফাতেমা আর হাসান হোসেন খেলেছেন পথে যার, 
কদমের ধূলি পড়েছে যথায় হাজারো আম্বিয়ার।
	সুরমা করিয়া কবে সেই ধূলি
	মাখিব নয়নে দুই হাতে তুলি',
কবে এ দুনিয়া হ’তে যাবার আগে রে কা'বাতে লুটাব শির।।

বাণী

কার মঞ্জির রিনিঝিনি বাজে — চিনি চিনি।
প্রাণের মাঝে সদা বাজে তারি রাগিণী।।
বন-শিরিষের জিরিজিরি পাতায়
ধীরি ধীরি ঝিরি ঝিরি নূপুর বাজায়,
তমাল-ছায়ায় বেড়ায় ঘুরে মায়া-হরিণী।।
আমার গানে তারি চরণের অনুরণনে
ছন্দ জাগে গন্ধে রসে রূপে বরণে। 
কান পেতে রই দুয়ার পাশে —
তারি আসার আভাস আসে,
ঝঙ্কার তোলে মনের বীণায় বীণ-বাদিনী।।

বাণী

আনন্দ রে আনন্দ, আনন্দ আনন্দ,
দশ হাতে ঐ দশ দিকে মা ছড়িয়ে এলো আনন্দ।
ঘরে ফেরার বাজল বাঁশি, বইছে বাতাস সুমন্দ॥
আমার মায়ের মুখে হাসি, শরত-আলোর কিরণরাশি,
কমল বনে উঠছে ভাসি, মায়ের গায়ের সুগন্ধ॥
উঠলো বেজে দিগ্বিদিকে ছুটির মাদল মৃদঙ্গ,
মনের আজি নাই ঠিকানা, যেন বনের কুরঙ্গ।
দেশান্তরী ছেলেমেয়ে, মায়ের কোলে এলো ধেয়ে,
শিশির নীরে এলো নেয়ে স্নিগ্ধ অকাল বসন্ত॥