বাণী

তুমি আমার সকালবেলার সুর
হৃদয় অলস–উদাস–করা অশ্রু ভারাতুর।।
ভোরের তারার মত তোমার সজল চাওয়ায়,
ভালোবাসার চেয়ে সে যে কান্না পাওয়ায়
রাত্রি–শেষের চাঁদ তুমি গো বিদায়–বিধুর।।
তুমি আমার ভোরের ঝরা ফুল
শিশির–নাওয়া শুভ্র–শুচি পূজারিণীর তুল।
অরুণ তুমি, তরুণ তুমি, করুণ তারো চেয়ে
হাসির দেশে তুমি যেন বিষাদ–লোকের মেয়ে
তুমিইন্দ্র–সভার মৌন–বীণা নীরব নূপুর।।

বাণী

কৃষ্ণ কৃষ্ণ বল্ রসনা রাধা রাধা বল্,
রাধাকৃষ্ণ রাধাকৃষ্ণ রাধাকৃষ্ণ বল্।।
যোগে খোঁজেন শিব কৃষ্ণ-গোবিন্দে
ব্রহ্মা পূজেন রাধা-চরণারবিন্দে,
অধরা যুগল চাঁদে ধরিল প্রেমের ফাঁদে গোপ গোপীদল।।
(মোর) শ্রীকৃষ্ণে থাকে যেন অটল মতি
সেই মতি দেন্ মোর রাধা শ্রীমতী,
মন-বৃন্দাবনে ফোটে কৃষ্ণ নামের ফুল —
ঝরায়ে সে-ফুল রাই দেন সবে প্রেম-ফল।।
রাধাকৃষ্ণ বল্ ওরে নর-নারী
সংসার বনে তোরা যেন শুক-শারি,
তার, পরানে নিত্য রাস-রসের উল্লাস —
যাহার হৃদয়ে দোলে মূরতি যুগল।।

বাণী

উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায় ওরে আমি কি তায় ভয় করি।
			ও ভাই আমি কি তায় ভয় করি।
পাক্কা ঈমান তক্তা দিয়ে গড়া যে আমার তরী।
			ও ভাই গড়া যে আমার তরী।।
‌‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু'র পাল তুলে,
ঘোর তুফানকে জয় ক'রে ভাই যাবই কূলে,
মোহাম্মদ মোস্তফা নামের (ও ভাই) গুণের রশি ধরি'।।
খোদার রাহে সঁপে দেওয়া ডুববে না মোর তরী,
সওদা ক'রে ভিড়বে তীরে সওয়াব-মাণিক ভরি'।
দাঁড় এ তরীর নামাজ, রোজা, হজ্ ও জাকাত,
উঠুক না মেঘ, আসুক বিপদ — যত বজ্রপাত,
আমি যাব বেহেশত্-বন্দরেতে রে এই সে কিশতিতে চড়ি'।।

বাণী

আও জীবন মরণ সাথী
তুমকো ঢুঁঢাতা হ্যায় দূর আকাশ মে
			মোহনী চাঁদনী রাতি।।
ঢুঁঢাতা প্রভাত নিত গোধূলি লগন মে
মেঘ হোকে ম্যয় ঢুঁঢাতা গগন মে।
ফিরত হুঁ রোকে শাওন পবন মে।
পাত্তে মে ঢুঁঢাতা তোড়ী পাপী
শ্যামা হোকে জ্বালা ম্যয় তোহারি আঁখমে
বুঝ গ্যয়া রাতকো হায় নিরাশ মে।
আভি ইয়ে জীবন হ্যায় তুমহারি পিয়াস মে।
গুল না হো যায়ে নয়ন কি বাতি।।

বাণী

কৃষ্ণ-প্রিয়া লো! কেমনে যাবি অভিসারে?
সে বিরহী রসে মানস সুরধুনী ’পারে।।
সে এ পারে রহে না
পারাপারের অতীত সে, এ পারে রহে না,
এ পারে না, ও পারেও রহে না, কোন পারে রহে না।।
গগনে গুরু গুরু মেঘ গরজে অবিরল বাদল ঝর ঝর ঝরে,
আঁখি-জলে আঁখি তোর টলমল সই অন্তর দুরুদুরু করে।
পথ দেখিবি কেমনে
আঁখি-জলে পিছল আঁখি, পথ দেখিবি কেমনে।
তোর আঁখি পিছল পথও পিছল পথে যাবি কেমনে,
তোর অন্তরে মেঘ, বাহিরে মেঘ পথ দেখিবি কেমনে।
একে কুহু-যামিনী তাহে কুল-কামিনী পথে পথে কালনাগিনী (লো),
আছে আড় পেতে শাশুড়ি ননদিনী লো।
তুই চাতকীর মত কেতকীর মত রাই
মেঘ দেখে মত্ত হইলি ভয় নাই,
যার প্রেমের পথে বাধা বিধির অভিশাপ — সাপেরে সে ভয় করে না।।

বাণী

জাগো যুবতী! আসে যুবরাজ।
অশোক-রাঙা বসনে সাজ।।
আসন-পাতা-বনে অঞ্চল আধো
বন্দনা-গীতি-ভাষা বাধো বাধো,
		কপোলে লাজ।।
উছলি’ ওঠে যৌবন আকুল তরঙ্গে,
খেলিছে অনঙ্গ নয়নে, বুকে, অঙ্গে আকুল তরঙ্গে।
আগমনী-ছন্দ মেঘ-মৃদঙ্গে
ভবন-শিখী গাহে বন-কুহু সঙ্গে,
বাজো হৃদি-অঙ্গনে বাঁশরি বাজো।।

নাটক : ‘আলেয়া’ (কাকলি ও বন্দিনীগণের গান)