বাণী

থাক্ এ গৃহ ঘিরিয়া সদা মঙ্গল কল্যাণ হে ভগবান।
দাও পুত পবিত্রতা প্রশান্তি অফুরান, হে ভগবান॥
অন্তরে দেহে দাও বিমল্-জ্যোতি
কর্মে প্রেরণা দাও ধর্মে মতি;
এ গৃহের নারী হোক পুণ্যবতী
বীরত্বে ত্যাগে হোক পুরুষ মহান; হে ভগবান॥
এ গৃহের বারি হোক নির্মল সুশীতল হে ভগবান,
এ গৃহের আলো হোক পুণ্যে সমুজ্জ্বল হে ভগবান।
সকলের সাথে হেথা প্রীতি যেন রয়
যেন নাহি থাকে হেথা রোগ শোক ভয়;
দূর কর হিংসা পাপ সংশয়
সার তব পায়ে নিবেদিত সকলের মনপ্রাণ, হে ভগবান॥

বাণী

মালা যদি মোর ধূলায় মলিন হয়
ব'সে আছি তাই অঞ্চলে নিয়ে কুসুমেরি সঞ্চয়।।
	ফুলহার যদি কর অবহেলা
	তাই ভাবি আর ব'য়ে যায় বেলা
হৃদয়ে থাকুক লুকানো আমার হৃদয়ের পরিচয়।।
বিফল যদি গো হয় পূজা নিবেদন
মন্দির-দ্বারে দাঁড়াইয়া তাই পাষাণেরই নারায়ণ।।
	কেন কাছে আসি, এসে ফিরে যাই
	যদি ফেল জেনে ভয় মানি তাই
সকলি সহিব, সহিতে নারিব হৃদয়ের পরাজয়।।

বাণী

উভয়		:	মোর মন ছুটে যায় দ্বাপর যুগে দূর দ্বারকায় বৃন্দাবনে।
স্ত্রী+উভয়ে	:	মোর মন হ’তে চায় ব্রজের রাখাল খেলতে রাখাল-রাজার সনে॥
স্ত্রী		:	রূপ ধরে না বিশ্বে যাহার
			দেখতে সাধ যায় কিশোর-রূপ তার
পুরুষ		:	কেমন মানায় নরের রূপে অনন্ত সেই নারায়ণে॥
স্ত্রী		:	সাজ্‌ত কেমন শিখী-পাখা বাজ্‌ত কেমন নূপুর পায়ে,
পুরুষ		:	থির কেমনে থাক্‌ত ধরা নাচ্‌ত যখন তমাল-ছায়ে।
উভয়		:	মা যশোদা বাঁধ্‌ত যখন কাঁদ্‌ত ভগবান কেমনে॥
স্ত্রী		:	সাজ্‌ত কেমন বন-মালায় বিশ্ব যাহার অর্ঘ্য সাজায়;
পুরুষ		:	যোগী-ঋষি পায় না ধ্যানে গোপ-বালা কেমনে পায়।
উভয়		:	তেম্‌নি ক’রে কালার প্রেমে সব খোয়াব এই জীবনে॥

বাণী

জাগো যুবতী! আসে যুবরাজ।
অশোক-রাঙা বসনে সাজ।।
আসন-পাতা-বনে অঞ্চল আধো
বন্দনা-গীতি-ভাষা বাধো বাধো,
		কপোলে লাজ।।
উছলি’ ওঠে যৌবন আকুল তরঙ্গে,
খেলিছে অনঙ্গ নয়নে, বুকে, অঙ্গে আকুল তরঙ্গে।
আগমনী-ছন্দ মেঘ-মৃদঙ্গে
ভবন-শিখী গাহে বন-কুহু সঙ্গে,
বাজো হৃদি-অঙ্গনে বাঁশরি বাজো।।

নাটক : ‘আলেয়া’ (কাকলি ও বন্দিনীগণের গান)

বাণী

আজি মনে মনে লাগে হোরি
আজি বনে বনে জাগে হোরি।।
ঝাঁঝর করতাল খরতালে বাজে
বাজে কঙ্কন চুড়ি মৃদুল আওয়াজে
লচকিয়া আসে মুচকিয়া হাসে
প্রেম-উল্লাসে শ্যামল গোরী।।
কদম্ব তমাল রঙে লালে লাল
লাল হলো কৃষ্ঞ ভ্রমর ভ্রমরী
রঙের উজান চলে কালো যমুনা-জলে
আবির রাঙা হলো ময়ূর-ময়ূরী।।
মোর হৃদি-বৃন্দাবন যেন রাঙে
রাধা শ্যাম-যুগল চরণ-রাগে
ও চরণ-ধূলি যেন ফাগ হ’য়ে নিশিদিন
অন্তরে পড়ে মোর ঝরি’।।

বাণী

‘দেশপ্রিয় নাই’ শুনি ক্রন্দন সহসা প্রভাতে জাগি’।
আকাশে ললাট হানিয়া কাঁদিছে ভারত চির-অভাগী।।
দেশবন্ধুর পার্শ্বে জ্বলিছে দেশপ্রিয়ের চিতা
এতদিন পরে বক্ষে এসেছে দুঃখের সাথি মিতা,
বহিছে অশ্রুগঙ্গা, জ্বলিছে শোকের দীপাম্বিতা —
নিভে যাবে চিতা, রয়ে যাবে ধুম, চিরদিন বুকে জাগি’।।
তুমি এসেছিলে হিন্দু-মুসলমানের মিলন-হেতু
পদ্মা ও ভাগীরথীর মাঝারে তুমি বেঁধেছিলে সেতু,
অন্ধকারের বুকে ছিলে তুমি দীপ্ত চন্দ্র-কেতু —
বন্ধন হল নন্দন-ফুল-হার তোমার ছোয়া লাগি’।।

দ্বিতীয় খন্ড