বাণী

ভারত আজিও ভোলেনি বিরাট মহাভারতের ধ্যান।
দেশ হারায়েছে — হারায়নি তা’র আত্মা ও ভগবান।।
তাহার ক্ষাত্রশক্তি গিয়াছে
প্রেম ও ভক্তি আজও বেঁচে আছে,
আজিও পরম ধৈর্য ও বিশ্বাসে —
তার আশা-দীপ জ্বালিয়া রেখেছে সেই ভাগবত জ্ঞান।।
দেহের জীর্ণ পিঞ্জরে তার প্রাণ কাঁদে নিরাশায়,
‘সম্ভবামি যুগে যুগে’ বাণী ভুলিতে পারে না হায়!
সেই আশ্বাসে আজ নব অনুরাগে
পাষাণ ভারতে বিরাট চেতনা জাগে,
জেগেছে সুপ্ত-সিংহ, এসেছে দিব্য অসি-কৃপাণ।।

বাণী

মন লহ নিতি নাম রাধা শ্যাম গাহো হরি গুণ গান।
তব ধন জন প্রাণ, যাহার কৃপার দান
জপ তারি নাম জয় ভগবান জয় ভগবান।।
জনক-জননীর স্নেহে তাঁহার হেরিস্‌ তুই স্নেহময়,
ভাই ভগিনীর প্রীতিতে যাঁর, শান্ত মধুর পরিচয়।
প্রণয়ী বন্ধুর মাঝে, যাঁর প্রেম রূপ বিরাজে;
পুত্র কন্যা-রূপে সেই জুড়ায় তাপিত পরান।।
তৃষ্ণা ক্ষুধায় সেই কৃষ্ণেরি লীলা,
হাসে শ্যাম শস্যে কুসুমে রঙিলা;
তরঙ্গে ছলছল আঁখি জল-নীলা,
	কল-ভাষা নদী-কলতান।
দেয় দুখ্‌ শোক সেই, পুন সেই করে ত্রাণ।
জয় ভগবান, জয় ভগবান, জয় ভগবান।।

বাণী

আসিলে কে গো বিদেশি দাঁড়ালে মোর আঙিনাতে।
আঁখিতে ল’য়ে আঁখি-জল লইয়া ফুল-মালা হাতে।।
জানি না চিনি না তোমায় কেমনে ঘরে দিব ঠাঁই
অমনি আসে তো সবাই হাতে ফুল, জল নয়ন-পাতে।।
কত সে প্রেম-পিয়াসি প্রাণ চাহিছে তোমার হাতের দান
কাঁদায়ে কত গুলিস্তান আমারে এলে কাঁদাতে।।
ফুলে আর ভোলে না মোর মন, গলে না নয়ন-জলে,
ভুলিয়া জীবনে একদিন আজিও জ্বলি জ্বালাতে।।

বাণী

আমি	সন্ধ্যামালতী বনছায়া অঞ্চলে
	লুকাইয়া রই ঘন পল্লব তলে ॥
	বিহগের গীতি ভ্রমরের গুঞ্জন, নীরব হয় যখন –
আমি	চাঁদেরে তখন পূজা করি আঁখি-জলে ॥
আমি	লুকাইয়া কাঁদি বনের শকুন্তলা
	মনের কথা এ জনমে হ’ল না বলা।
গভীর নিশীথে বন-ঝিল্লির সুরে, ডাকি দূর বন্ধুরে –
আমি	ঝ’ড়ে পড়ি যবে প্রভাতে সবার হৃদয় মুকুল খোলে ॥

বাণী

তোমার গানের চেয়ে তোমায় ভালো লাগে আরো।
(মোর) ব্যথায় আস প্রিয় হয়ে, কথায় যখন হারো।।
	(তব) সুর যবে দূরে য়ায় চ’লে
	তখন আস মোর অঁখির জলে,
ভালোবাসায় যে মধু দাও বঁধু তা কি ভাষায় দিতে পার।।
আমায় যখন সাজাও সুরে ছন্দে অলংকারে,
তখন তুমি থাক যেন কোন্ গগনের পারে।
	গান থামিয়ে একলা ঘরে
	আস যখন আমার তরে,
সেই ত আমার আনন্দ, তাহা ছন্দে দিতে নারো।।

বাণী

ঐ অভ্র-ভেদী তোমার ধ্বজা উড়্‌লে আকাশ-পথে।
মাগো, তোমার রথ আনা ঐ রক্ত-সেনার রথে।।
ললাট-ভরা জয়ের টীকা অঙ্গে নাচে অগ্নি-শিখা,
রক্তে জ্বলে বহ্নি-লিখা,
মা! ঐ বাজে তোর বিজয়-ভেরি,
নাই দেরি আর নাই মা দেরি, মুক্ত তোমার হ’তে।।
আনো তোমার বরণ-ডালা, আনো তোমার শঙ্খ, নারী!
ঐ দ্বারে মা’র মুক্তি-সেনা, বিজয়-বাজা উঠ্‌ছে তারি। ওরে ভীরু!
ওরে মরা! মরার ভয়ে যাস্‌নি তোরা;
তোদেরও আজ ডাক্‌ছি মোরা – ভাই!
ঐ খোলে রে মুক্তি-তোরণ,
আজ একাকার জীবন-মরণ মুক্ত এ ভারতে।।