বাণী

মালঞ্চে আজ কাহার যাওয়া আসা।
ঝরা পাতায় বাজে
মৃদুল তাহার পায়ের ভাষা।।
আসার কথা জানায়
ঐ যে ফুলের আখর সবুজ পাতায়,
ঐ দোয়েল শ্যামার কূজন কয় যে বাণী
ঐ ঐ তার ভালোবাসা।।
মদির সমীরণে
তনুর সুবাস পাই যে ক্ষণে ক্ষণে,
সবুজ বসন ফেলি’
পরল ঐ বন কুস্‌মী রাঙা চেলি।
তাই বসুন্ধরায় জাগে অরুণ আশা —
ঐ ঐ যে আলোকের পিপাসা।।

বাণী

কে পাঠালে লিপির দূতী গোপন লোকের বন্ধু গোপন।
চিন্‌তে নারি হাতের লেখা মনের লেখা চেনে গো মন।।
	গান গেয়ে যাই আপন মনে
	সুরের পাখি গহন বনে,
সে সুর বেঁধে কার নয়নে — জানে শুধু তা’রি নয়ন।।
	কে গো তুমি গন্ধ-কুসুম
	গান গেয়ে কি ভেঙেছি ঘুম,
তোমার ব্যথার নিশীথ নিঝুম — হেরে’ কি মোর গানের স্বপন।।
	নাই ঠিকানা নাই পরিচয়
	কে জানে ও-মনে কি ভয়,
গানের কমল ও-চরণ ছোঁয় — তাইতে মানি ধন্য জীবন।।
	সুরের গোপন বাসর-ঘরে
	গানের মালা বদল করে,
সকল আঁখির অগোচরে — না দেখাতে মোদের মিলন।।

বাণী

ওগো পূজার থালায় আছে আমার ব্যথার শতদল।
হে দেবতা রাখ সেথা তোমার পদতল।।
	নিবেদনের কুসুম সহ
	লহ হে নাথ, আমায় লহ
যে আগুনে আমায় দহ সেই আগুনে
	আরতি-দীপ জ্বেলেছি উজল।।
যে নয়নের জ্যোতি নিলে কাঁদিয়ে পলে পলে,
মঙ্গল-ঘট ভরেছি নাথ, সেই নয়নের জলে।
	যে চরণে করো আঘাত
	প্রণাম লহ সেই পায়ে নাথ
রিক্ত তুমি করলে যে হাত, হে দেবতা!
	লও সে হাতে অর্ঘ্য-সুমঙ্গল।।

বাণী

চম্পক-বরণী
চলমল তরণী,
চলে শ্যামা তরুণী
		যৌবন-গরবী।।
ডাকে দূর পারাবার
ডাকে তা’রে বন-’পার,
লালসে ঝরে তার —
		পায়ে রাঙা করবী।।
চলে বালা দুলে দুলে
এলো-খোঁপা পড়ে খুলে,
চাহে ভ্রমর কুসুম ভুলে’ —
		তনুর তার সুরভি।।
নাচের ছন্দে দোদুল
টলে তা’র চরণ চটুল,
হরিণী চায় পথ-বেভুল —
মায়া-লোক-বিহারিণী রচি’
		চলে ছায়া-ছবি।।

বাণী

	কেন ঝুলনাতে একেলা দোলে রাইকিশোরী।
	বুঝি মেঘের মাঝে হারিয়ে গেল মেঘ-বরণ হরি।।
	সই	দধির মাঝে ননী থাকে
	মোরা	মথন করে আনি তাকে,
মোরা	নিঙ্‌ড়ে মেঘের সাগর, শ্যামে আনব বাহির করি’।।
ঐ	কালাকে সই ভালো জানি, জানি তাহার ঢং,
তার	কৃষ্ণ রূপের আঁধার খরা শুধু রাধার রং।
	যে	না থাকিলে রাধার মাঝে
		দোলনাতে রাই দুলত না যে
সই	মেঘ যদি না থাকে সই কেন চমকায় বিজরী।।

গীতি-আলেখ্য : ‌‘হিন্দোলা’

বাণী

সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
১ম		:	তোর ঘরে আজ কি রান্ন হায়েছে?
২য়		:	ছেলে দুটো ভাত পায়নি, পথ চেয়ে রয়েছে।
৩য়		:	আমিও ভাত রাঁধিনি, দেখ্ না চুল বাঁধিনি
			শাশুড়ি মান্ধাতার বুড়ি মন্দ কথা কয়েছে।
৪র্থ		:	আমার ননদ বড় দজ্জাল বজ্জাত গো।
সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
১ম		:	এত খায় তবু ওদের বউগুলো সুঁট্‌কো
২য়		:	ছেলেগুলো প্যাঁকাটি, বাবুগুলো মুট্‌কো।
৩য়		:	এরা কাগজের ফুল, এরা চোখে চাঁদ দেখে না।
৪র্থ		:	ইটের ভিতরে কীটের মত কাটায় এরা রাত গো।
সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥

চলচ্চিত্রঃ ‘চৌরঙ্গী’