বাণী

প্রিয় কোথায় তুমি কোন গহনে
কোন ধ্রুবলোকে কোন দূর গগনে।।
খোঁজে কানন তোমায় মেলি' কুসুম-আঁখি,
'তুমি কোথায়' বলি' ডাকে বনের পাখি।
আছ ঠকুর হয়ে কোন দেবালয়ে
কোন শ্রাবন-মেঘে দখিনা পবনে।।
সিন্ধু-বুকে মুখে লুকায়ে নদী
'তুমি কোথায়' বলি' কাঁদে নিরবধি।
	জ্বালি' তারার বাতি
	খোঁজে আঁধার রাতি,
তোমায় খুঁজিয়া নিভিল জ্যোতি মোর নয়নে।।

বাণী

আধো আধো বোল্ লাজে-বাধো-বাধো বোল
				ব’লো কানে কানে।
যে কথাটি আধো রাতে মনে লাগায় দোল
				ব’লো কানে কানে।।
যে কথার কলি সখি আজও ফুটিল না, হায়
শরমে মরম-পাতে দোলে আন্‌মনা, হায়
যে কথাটি ঢেকে রাখে বুকের আঁচল
				ব’লো কানে কানে।।
যে কথা লুকায়ে থাকে লাজ-নত চোখে
না বলিতে যে কথাটি জানাজানি লোকে
যে কথাটি ধ’রে রাখে অধরের কোল
লুকিয়ে ব’লো নিরালায় থামিলে কলরোল।
যে কথাটি বলিতে চাও বেশভূষার ছলে
যে কথা দেয় ব’লে তব তনু পলে পলে
যে কথাটি বলিতে সই গালে পড়ে টোল্ —
				ব’লো কানে কানে।।

বাণী

বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে
তার বাঁশির সুর শুনি পবনে॥
	রাঙা সে চরণের নূপুর-রোলে রে
	আকুল এ হৃদয় পুলকে দোলে রে
সে নূপুর শুনি’ নাচে ময়ূর কদম তমাল-বনে॥
	বুঝি সেই শ্যামের পরশ লাগিল
	আমার চরণে তাই নাচন জাগিল —
ঘিরি শ্যামে দখিন-বামে নেচে বেড়াই আপন মনে॥
	এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায়
	জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায়
খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥

বাণী

		তোর নামেরই কবচ দোলে দোলে আমার বুকে, হে শঙ্করী।
		কি ভয় দেখাস্? আমি তোকেও ভয় করি না, ভয় করি না ভয়ঙ্করী।।
			মৃত্যু প্রলয় তাদের লাগি
			নয় যারা তোর অনুরাগী।
		(মাগো) তোর শ্রীচরণ আশ্রয় মোর (দেখে) মরণ আছে ভয়ে মরি’।।
		তোর যদি না হয় মা বিনাশ, আমিও মা অবিনাশী;
(আমি)	তোরই মাঝে ঘুমাই জাগি, তোরই কোলে কাঁদি হাসি।
			তোর চরণ ছেড়ে পলায় যারা (মা)
			মায়ার জালে মরে তারা
		তোর মায়া-জাল এড়িয়ে গেলাম মা তোর অভয়-চরণ ধরি, মা।।

বাণী

ওরে		আয় অশুচি আয়রে পতিত এবার মায়ের পূজা হবে।
যেথা		সকল জাতির সকল মানুষ নির্ভয়ে মা’র চরণ ছোবে।
		(সেথা) এবার মায়ের পূজা হবে॥
সেথা		নাই মন্দির নাই পূজারি নাই শাস্ত্র নাইরে দ্বারী,
সেথা		মা বলে যে ডাকবে এসে মা তাহারেই কোলে লবে॥
মা		সিংহ-আসন হ’তে নেমে বসেছে দেখ্ ধূলির তলে
মার		মঙ্গল ঘট পূর্ণ হবে সবার ছোঁওয়া তীর্থ জলে।
মোরা		জননীকে দেখিনি, তাই ভাইকে আঘাত হেনেছে ভাই,
আজ		মাকে দেখে বুঝবি মোরা এক মা’র সন্তান সবে।
এবার		ত্রিলোক জুড়ে পড়বে সাড়া মাতৃ মন্ত্র মাভৈঃ রবে॥

বাণী

কে দুরন্ত বাজাও ঝড়ের ব্যাকুল বাঁশি
আকাশ কাঁপে সে সুর শুনে সর্বনাশী।।
	বন ঢেলে দেয় উজাড় ক'রে
	ফুলের ডালা চরণ' পরে,
নীল গগনে ছুটে আসে মেঘের রাশি।।
বিপুল ঢেউয়ের নাগর-দোলায় সাগর দুলে
বান ডেকে যায় শীর্ণা নদীর কুলে কূলে
	তোমার প্রলয় মহোৎসবে
	বন্ধু ওগো, ডাকবে কবে?
ভাঙবে আমার ঘরের বাঁধন কাঁদন হাসি।।