বাণী

ব্রজ-দুলাল ঘন শ‍্যাম
মোর হৃদে কর বিহার হে।।
নব অনুরাগের জ্বালায়ে বাতি
অঙ্গে অঙ্গে রাখি তব শেজ পাতি’
গাঁথি অশ্রু-মোতিহার হে।।
আরতি-প্রদীপ আঁখিতে জ্বালায়ে রাখি
পথ-পানে চাহি বার বার হে।।
নিবেদন করি নাথ তব চরণে
নিত্য পূজা-উপচার হে
বিরহ-গন্ধ ধূপ বেদনা চন্দন
পূজাঞ্জলি আঁখি-ধার হে
দেবতা এসো, খোল দ্বার হে।।

বাণী

আজি নন্দলাল মুখচন্দ নেহারি
অধীর আনন্দে অন্তর কাঁপে ঝরে প্রেমবারি॥
বকুল-বন হরষে ফলদল বরষে
গাহে রাধা শ্যাম নাম হরি-চরণ হেরি শুকসারি॥

বাণী

সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!
বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ-বেদনা-অশ্রুবারি,
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল,
নারী দিল তাহে রূপ-রস-মধু-গন্ধ সুনির্মল।
তাজমহলের পাথর দেখেছ, দেখিয়াছ তার প্রাণ?
অন্তরে তার মমতাজ নারী, বাহিরেতে শা-জাহান।
জ্ঞানের লক্ষ্মী, গানের লক্ষী, শস্য-লক্ষ্মী নারী,
সুষমা-লক্ষ্মী নারীই ফিরিছে রূপে রূপে সঞ্চারী’।
পুরুষ এনেছে দিবসের জ্বালা তপ্ত রৌদ্রদাহ,
কামিনী এনেছে যামিনী-শান্তি, সমীরণ, বারিবাহ।
দিবসে দিয়াছে শক্তি-সাহস, নিশীথে হয়েছে বঁধু,
পুরুষ এসেছে মরুতৃষা লয়ে, নারী যোগায়েছে মধু।
শষ্যক্ষেত্র উর্বর হল, পুরুষ চালাল হাল,
নারী সেই মাঠে শস্য রোপিয়া করিল সুশ্যামল।
নর বাহে হল, নারী বহে জল, সেই জল-মাটি মিশে’
ফসল হইয়া ফলিয়া উঠিল সোনালী ধানের শীষে।
নর দিল ক্ষুধা, নারী দিল সুধা, সুধায় ক্ষুধায় মিলে’
জন্ম লভিছে মহা-মানবের মহা-শিশু তিলে তিলে।
জগতের যত বড় বড় জয়, বড় বড় অভিযান
মাতা ভগ্নি ও বধুদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান।
কোন্‌ রণে কত খুন দিল নর, লেখা আছে ইতিহাসে,
কত নারী দিল সিঁথির সিদুর, লেখা নাই তার পাশে।
কত মাতা দিল হৃদয় উপড়ি, কত বোন দিল সেবা,
বীরের স্মৃতি-স্তম্ভের গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা?
কোনো কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারী,
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী।

কবিতাঃ নারী (প্রথম খন্ড)

বাণী

তুমি সুন্দর কপট হে নাথ! মায়াতে রাখ বিভোর।
তোমার ছলনা যে বোঝে না নাথ সেই সে দুঃখী ঘোর।।
	কত শত রূপে নিঠুর আঘাতে
	তুমি চাও নাথ তোমারে ভোলাতে
তবু যে তোমারে ভুলিতে পারে না ধরা দাও তারে চোর।।
কাঁদাও তাহারে নিশিদিন তুমি যপে যে তোমার নাম
তোমারে যে চাহে শত বন্ধনে বাঁধ তারে অবিরাম।
	সাগরে মিশাতে চায় বলে নদী
	জনম গোঁয়ায় কেঁদে নিরবধি
ভক্তে তেমনি দিয়াছ যে নাথ অসীম আঁখি - লোর।।

বাণী

(তুমি)	যে-হার দিলে ভালোবেসে সে-হার আমার হ’ল ফাঁসি।
(প্রিয়)	সেই হার আজ বক্ষে চেপে আকুল নয়ন-জলে ভাসি।।
		তুমি জান অন্তর্যামী
		দান তো তোমার চাইনি আমি,
	তোমায় শুধু চেয়েছিলাম সাধ ছিল মোর হ’তে দাসী।।
	দুখের মালা কেড়ে নিয়ে কেন দিলে মতির মালা,
	মালায় শীতল হবে কি নাথ! শূন্য আমার বুকের জ্বালা?
	(মোরে)	রেখো না আর সোনার রথে
			ডাকো তোমার তীর্থ-পথে,
(আমার) সুখের ঘরে আগুন জ্বালো শোনাও বাঁশি সর্বনাশী।।

১. চেয়েছিলাম তোমায় স্বামী

বাণী

দিও ফুলদল বিছায়ে পথে বঁধুর আমার।
পায়ে পায়ে দলি’ ঝরা সে-ফুলদল আজি তার অভিসার।।
	আমার আকুল অশ্রুবারি দিয়ে
	চরণ দিও তার ধোয়ায়ে,
মম পরান পুড়ায়ে জ্বেলো দীপালি তাহার।।