বাণী

স্নিগ্ধ-শ্যাম-বেণী-বর্ণা এসো মালবিকা
অর্জুন-মঞ্জরি-কর্ণে গলে নীপ-মালিকা, মালবিকা।।
ক্ষীণা তন্বী জল-ভার-নমিতা
শ্যাম জম্বু-বনে এসো অমিতা
আনো কুন্দ মালতী যুঁই ভরি থালিকা, মালবিকা।।
ঘন নীল বাসে অঙ্গ ঘিরে
এসো অঞ্জনা রেবা-নদীর তীরে।
পরি’ হংস-মিথুন আঁকা শাড়ি ঝিল্‌মিল্‌
এসো ডাগর চোখে মাখি সাগরের নীল
ডাকে বিদ্যুৎ ইঙ্গিতে দিগ্‌-বালিকা, মালবিকা।।

বাণী

বাদলা রাতে চাঁদ উঠেছে কৃষ্ণ মেঘের কোলে রে।
ব্রজ পুরে তমাল-ডালের ঝুলনাতে দোলে রে।।
	নীল চাঁদ আর সোনার চাঁদে
	বাঁধা বন-মালার ফাঁদে রে
এই চাঁদ হেসে আরেক চাঁদের অঙ্গে পড়ে ঢ’লে রে।।
যুগল শশী হেরি গোপী কহে, বাদলা রাতই ভালো রে,
গোকুল এলো ব্রজে নেমে ধরা হল আলো রে।
	দেব-দেবীরা চরণ-তলে
	বৃষ্টি হয়ে পড়ে গ’লে রে,
বেদ-গাথা সব নূপুর হয়ে রুনুঝুনু বোলে রে।।

বাণী

আমি		কালি যদি পেতাম কালী রইত না এ মনে কালি।
মোর		সাদা মনের পদ্মপাতায় লিখ্তাম তোর শ্রীনাম খালি।।
		(মা)	কালী পেলে সকল কালো
			এই নিমিষে হ’ত আলো,
(মা)		কালো পাতার কোলে যেমন ফুটে থাকে ফুলের ডালি।।
(তোর)		কালো রূপের নীল যমুনা বইত যদি মনের মাঝে,
(শ্যামা!)		দেখ্‌তে পেত এই ত্রিভুবন, কোথায় শ্যামের বেণু বাজে।
		তোর কালো রূপের কৃষ্ণ আকাশ পেলে,
(আমি)		ময়ূর হয়ে নাচতাম মা তারার পেখম মেলে।
		দুঃখে কালো কপালে মোর হাস্‌ত শিশু-চাঁদের ফালি।।

বাণী

গঙ্গা সিন্ধু নর্মদা কারেরী যমুনা ঐ
বাহিয়া চলেছে আগের মতন, কই রে আগের মানুষ কই।।
		মৌনী স্তব্ধ সে হিমালয়
		তেমনি অটল মহিমময়
নাই তার সাথে সেই ধ্যানী ঋষি, আমরাও আর সে জাতি নই।।
		আছে সে আকাশ ইন্দ্র নাই
		কৈলাসে সে যোগীন্দ্র নাই
অন্নদা-সুত ভিক্ষা চাই কি কহিব এরে কপাল বই।।
		সেই আগ্রা সে দিল্লী ভাই
		প’ড়ে আছে, সেই বাদশা নাই
নাই কোহিনুর ময়ূর-তখ্ত নাই সে বাহিনী বিশ্বজয়ী।
		আমরা জানি না, জানে না কেউ
		কূলে ব’সে কত গণিব ঢেউ
দেখিয়াছি কত, দেখিব এও নিঠুর বিধির লীলা কতই।।

বাণী

আঁধার রাতের তিমির দুলে আমার মনে।
দুলে গো আমার ঘুমে -  জাগরণে॥
হতাশ-ভরা বাতাস বহে,
আমার কানে কি কথা কহে;
দিনগুলি মোর যায় যে ঝ’রে যায় —
ওগো যায় যে ঝ’রে ঝরা পাতার সনে॥
গিয়াছে চলিয়া সুখে যাহারা ছিল গো সাথি,
গিয়াছে নিভিয়া জ্বলিতেছিল যে শিয়রে বাতি।
স্মৃতির মালার ফুল শুকাইয়া,
একে একে হায় পড়িছে ঝরিয়া;
বিদায়-বেলা শুনিয়ে বাঁশি ক্ষণে ক্ষণে॥

বাণী

জল দাও, দাও জল!
মরু-পথে মরি তৃষ্ণায় সাহারার মত হৃদি-তল।।
	আঁখিজল পিয়া, পিয়া এতদিন —
	বেঁচেছিনু, সে-আঁখি আজ জলহীন!
সে কি ছল? তব নয়ন সদাই করিত যে ছল ছল।।

সঙ্গীতালেখ্য : ‘কাফেলা’