বাণী

কালা		এত ভাল কি হে কদম্ব গাছের তলা।
আমি		দেখ্‌ছি কত দেখ্‌ব কত তোমার ছলাকলা;
আমি		নিতুই নিতুই সবই কত, (কালা) তিন সতিনের জ্বালা॥
আমি		জল নিতে যাই যমুনাতে তুমি বাজাও বাঁশি হে,
		মনের ভুলে কলস ফেলে তোমার কাছে আসি হে,
শ্যাম		দিন-দুপুরে গোকুলপুরে (আমার) দায় হল পথ চলা॥
আমার	চারদিকেতে ননদ-সতীন দু’কূল রাখা ভার,
		আমি সইব কত আর বাঁকা শ্যাম।
ওরা		বুঝছে সবই নিত্যি-নতুন, (নিতি) মিথ্যে কথা বলা॥

বাণী

এসো এসো তব যাত্রা-পথে
শুভ বিজয়-রথে ডাকে দূর-সাথি।
মোরা তোমার লাগি’, হেথা রহিব জাগি’
তব সাজায়ে বাসর জ্বালি’ আশার বাতি।।
হের গো বিকীর্ণ শত শুভ চিহ্ন পথ-পাশে নগর-বাটে,
স-বৎসা ধেনু গো-ক্ষুর-রেণু উড়ায়ে চলে দূর মাঠে।
দক্ষিণ-আবর্ত-বহ্নি, পূর্ণ-ঘট-কাঁখে তম্বী,
দোলে পুষ্প-মালা, ঝলে’ শুক্লা রাতি।।
হের পতাকা দোলে দূর তোরণ-তলে, গজ তুরগ চলে।
শুক্লা ধানের হের মঞ্জরী ঐ, এসো কল্যাণী গো,
		আনো নব-প্রভাতী।।

নাটক : ‘সাবিত্রী’

বাণী

		বন্ধু, আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা।
		আম কুড়াইবার যাইতাম দুইজন নিশি-ভোরের বেলা।।
		জোষ্ঠি মাসের গুমোঁট রে বন্ধু আস্‌ত নাকো নিদ
					রাত্রে আস্‌ত নাকো নিদ্
		আম-তলায় এক চোর আইস্যা কাঁট্ত প্রাণে সিঁদ্
(আর)	নিদ্রা গেলে ফেল্‌ত সে চোর আঙিনাতে ঢেলা।।
		আমরা দুইজন আম কুড়াইতাম, ডাক্‌ত কোকিল গাছে,
		ভোলো যদি — বিহান বেলার সূয্যি সাক্ষী আছে,
(তুমি)	পায়ের কাছে আম ফেইল্যা গায়ে দিতে ঠেলা।।
		আমার বুকের আঁচল থাইক্যা কাইড়া নিতে আম,
		বন্ধু, আজও পাই নাই দাসী সেই না আমের দাম,
(আজ)	দাম চাইবার গিয়া দেখি তুমি দিছ মেলা।।
		নিশি জাইগ্যা বইস্যা আছি, জোষ্ঠি মাসের ঝড়ে
		সেই না গাছের তলায় বন্ধু এখনো আম পড়ে
		তুমি কোথায় আমি কোথায় দুইজনে একেলা।।

বাণী

	যে পেয়েছে আল্লার নাম সোনার কাঠি,
	তার কাছে ভাই এই দুনিয়া দুধের বাটি॥
	দীন দুনিয়া দুই-ই পায় সে মজা লোটে,
	রোজা রেখে সন্ধ্যাবেলা শিরনি জোটে,
সে	সদাই বিভোর পিয়ে খোদার এশ্‌ক খাঁটি॥
সে	গৃহী তবু ঘরে তাহার মন থাকে না,
	হাঁসের মতন জলে থেকেও জল মাখে না;
তার	সবই সমান খাঁটি সোনা এঁটেল্ মাটি॥
	সবই খোদার দান ভেবে সে গ্রহণ করে,
	দুঃখ-অভাব সুখের মতই জড়িয়ে ধরে,
	ভোগ করে সে নিত্য বেহেশ্‌ত্‌ পরিপাটি॥

বাণী

আমার উমা কই গিরিরাজ, কোথায় আমার নন্দিনী।
এ যে দেবী দশভুজা এ কোন্ রণ-রঙ্গিণী॥
	মোর লীলাময়ী চঞ্চলারে ফেলে
	এ কোন দেবীমূর্তি নিয়ে এলে,
এ যে মহীয়সী মহামায়া বামা মহিষ-মর্দিনী॥
মোর মধুর স্নেহে জ্বালতে আগুন আন্‌লে কারে ভুল ক’রে,
এরে কোলে নিতে হয় না সাহস ডাকতে নারি নাম ধ’রে।
	কে এলি মা দনুজ-দলন বেশে
	কন্যারূপে মা ব’লে ডাক হেসে হেসে,
তুই চিরকাল যে দুলালী মোর মাতৃস্নেহে বন্দিনী॥

বাণী

মা, মা গো —
আমার অহঙ্কারের মূল কেটে দে কাঠুরিয়ার মেয়ে,
কত নিরস তরু হ'ল মঞ্জুরিত তোর চরণ-পরশ পেয়ে।।
রোদে পুড়ে জলে ভিজে মা দিয়েছি ফুল ফল
শাখায় আমার, নীড় বেঁধেছে বিহঙ্গের দল।
বটের মত সারা দেহ মাগো মায়ার জটে আছে ছেয়ে।।
ও মা মূল আছে তাই বৈতরণীর কূলে আছি পড়ি
নইলে হ'তাম খেয়াঘাটের পারাপারের তরী।
	তুই খড়গের ভয় দেখাস মিছে
	মুক্তি আছে এরি পিছে মাগো
তোর হাসির বাঁশি শুনতে পাবো অসির আঘাত খেয়ে।।