বাণী

কবি,		সবার কথা কইলে, এবার নিজের কথা কহ।
(কেন)	নিখিল ভুবন অভিমানের আগুন দিয়ে দহ।।
		কে তোমারে হান্‌ল হেলা, কবি!
(হায়!)	সুরে সুরে আঁক কি গো সেই বেদনার ছবি?
		কা’র বিরহ রক্ত ঝরায় বক্ষে অহরহ।।
		কোন্‌ ছন্দময়ীর ছন্দ দোলে আমার গানে গানে,
		তোমার সুরের স্রোত ব’য়ে যায় কাহার প্রেমের টানে গো —
		কাহার চরণ পানে?
		কাহার গলায় ঠাঁই পেল না ব’লে
(তব)		কথার মালা ব্যথার মত প্রতি হিয়ায় দোলে,
(তোমার)	হাসিতে যে বাঁশি বাজে, সে ত’ তুমি নহ।।

১. সবার কথা কইলে কবি নিজের কথা কহ।

বাণী

পুরবের তরুণ অরুণ পুরবে আস্‌লো ফিরে।
কাঁদায়ে মহাশ্বেতায় হিমানীর শৈল-শিরে।।
	কুহেলির পর্দা ডারি’
	ঘুমাত রূপ-কুমারী,
জাগালে স্বপনচারী — তাহারে নয়ন-নীরে।।
তোমার ঐ তরুণ গলার শুনি গান সিন্ধু-পারে,
দুলিছ মধ্যমণি সুরমার কণ্ঠ-হারে।
	ধেয়ানী দিলে ধরা
	হ’ল সুর স্বয়ম্বরা,
এলে কি পাগল-ঝোরা — পাষাণের বক্ষ চিরে’।

বাণী

মুখে তোমার মধুর হাসি হাতে কুটিল ফাঁসি।
সুন্দর চোর, চিনি তোমায় তবু ভালোবাসি।।
	শত ব্রজে কেঁদে মরে
	শত রাধা তোমার তরে,
কত গোকুল ডুবলো অকূল আঁখির নীরে ভাসি'।।
কত নারীর মন গেঁথে, নাথ, পরলে বন-মালা,
যমুনাতে ডুবালে শ্যাম কত কুলের বালা।
	দেখাও আসল হাত দু'খানি-
	করাল গদার চক্রপাণি,
তব এ দু'টি হাত ছলনা, নাথ, বাজাও যে হাতে বাঁশি।।

বাণী

আমার হৃদয়-শামাদানে জ্বালি’ মোমের বাতি।
নবীজী গো! জেগে’ আমি কাঁদি সারা রাতি।।
	আস্‌মানেরই চাঁদোয়া-তলে
	চাঁদ-সেতারার পিদিম জ্বলে,
ওরাও যেন খোঁজে তোমায় আমার দুঃখের সাথি।।
দিনের কাজে পাই না সময় যাই নিরালা রাতে,
তোমায় পাওয়ার পথ খুঁজি গো কোরানের আয়াতে।
	তোমায় পেলে পাব খোদায়
	তাই শরণ যাচি তোমারি পায়,
পাওয়ার আশে জেগে থাকি প্রেমের শয্যা পাতি’।।
	ঝর্‌লে পাতা, ডাক্‌লে পাখি,
	চম্‌কে ভাবি, তুমি নাকি?
মস্‌জিদে যাই গভীর রাতে খুঁজি আঁতিপাঁতি।।
রোজ-হাশরে দেখা পাব মোরে সবাই বলে;
তোমার বিহনে আমার ঘুম নাই নয়নে,
মোর জীবনে রোজ-কিয়ামত আসে প্রতি পলে।
বিষের সমান লাগে আমার দুনিয়ার যশ-খ্যাতি।।

১. চেরাগ ২. ওরা আমার দুখের সাথি

বাণী

আজি প্রথম মাধবী ফুটিল কুঞ্জে মাধব এলো না সই।
এই যৌবন-বরমালা কারে দিব মোর বনমালী বই।।
	সারা নিশি জেগে বৃথাই নিরালা
	গাঁথিলাম নব মালতীর মালা,
অনাদরে হায় সে মালা শুকায় দেখিয়া কেমনে রই।।
	মম অনুরাগ-চন্দন ঘ’ষে,
	লাজ ভু’লে সাঁঝ হ’তে আছি ব’সে,
শুকাইয়া যায় চন্দন হায় রাধিকারমণ কই।।
	চলিলাম আমি যথা মন চায়,
	প্রভাতে আসিলে মোর শ্যামরায়
বলিস্ আঁধারে হারাইয়া হায় গেছে রাধা রসময়ী।।