বাণী

দিনগুলি মোর পদ্মেরই দল যায় ভেসে যায় কালের স্রোতে
ওগো সুদূর ওগো বিধুর তোমার সাগর-তীর্থ -পথে।।
	বিফল দিনের কমলগুলি
	পড়লো ঝ'রে পাপড়ি খুলি'
নিও প্রিয় তদের তুলি দিন শেষের ম্লান আলোতে।।
সঞ্চিত মোর দিনগুলি হায় ছড়িয়ে গেল অযতনে;
তোমার বরণ-মালা গাঁথা হলো না আর এ জীবনে।
	অন্য মনে কখন বেভুল
	ভাসিয়ে দিলাম দলি সে ফুল
বঞ্চিত তাই হবে কি হায় তোমার চরণ-ছোওয়া হ'তে।।

বাণী

গাগরী ভরণে চলে চপলা ব্রজনারী
যৌবন-লাবনি অঙ্গে বিথারি’।
কাজল-কালো নয়ন গরল মাখানো বাণ,
চকিত চাহনি হানে চতুরা শিকারী।।
চঞ্চল-অঞ্চল উড়ায়ে সাঁজের বায়
আধো আলো আধো ছায়া লুকোচুরি খেলে যায়,
রাঙা তপন হেসে লুকায় লতার পাশে কাঁদে দরশ-ভিখারি।।

বাণী

কে এলে হংস-রথে, কোথা যাও?
তার লিপি এনেছ কি? দাও মোরে দাও।।
যা’র বিরহে মোর হৃদয়-কমল
অশ্রু-সরসী-নীরে কাঁপে টলমল,
শুনেছি তার সাথে তুমি কথা কও —
কার কথা হয় সেথা — শোনাও শোনাও।।
আনন্দ-দূত তুমি, লিপি আন নাই?
দেখিতে কি আসিয়াছ — কত দুঃখ পাই?
সে এত প্রেম দিয়ে কেন লুকিয়ে থাকে
কেন দেখা দেয় না এত যে ডাকে,
কেন মোর আর ভালো লাগে না কিছুই?
মনে ক’রে বলো যদি তার দেখা পাও।।

বাণী

		তোর নামেরই কবচ দোলে দোলে আমার বুকে, হে শঙ্করী।
		কি ভয় দেখাস্? আমি তোকেও ভয় করি না, ভয় করি না ভয়ঙ্করী।।
			মৃত্যু প্রলয় তাদের লাগি
			নয় যারা তোর অনুরাগী।
		(মাগো) তোর শ্রীচরণ আশ্রয় মোর (দেখে) মরণ আছে ভয়ে মরি’।।
		তোর যদি না হয় মা বিনাশ, আমিও মা অবিনাশী;
(আমি)	তোরই মাঝে ঘুমাই জাগি, তোরই কোলে কাঁদি হাসি।
			তোর চরণ ছেড়ে পলায় যারা (মা)
			মায়ার জালে মরে তারা
		তোর মায়া-জাল এড়িয়ে গেলাম মা তোর অভয়-চরণ ধরি, মা।।

বাণী

		চোখের বাঁধন খুলে দে মা খেলব না আর কানামাছি।
আমি		মার খেতে আর পারি না মা এবার বুড়ি ছুঁয়ে বাঁচি।।
			তুই পাবি অনেক মেয়ে ছেলে
			যাদের সাধ মেটেনি খেলে খেলে,
তুই		তাদের নিয়েই খেল না মা গো শ্রান্ত আমি রেহাই যাচি।
		দুঃখ-শোক-ঋণ-অভাব ব্যাধি মায়ার খেলুড়িরা মিলে,
		শত দিকে শত হাতে আঘাত হানে তিলে তিলে।
			চোর হয়ে মা আর কত দিন 
			ঘুরব ভবে শান্তিবিহীন,
তোর		অভয় চরণ পাই না কেন মা তোর এত কাছে আছি।।

বাণী

খড়ের প্রতিমা পূজিস্‌ রে তোরা, মাকে ত’ তোরা পূজিস্‌নে!
প্রতি মা’র মাঝে প্রতিমা বিরাজে (ঘরে ঘরে ওরে)
			হায় রে অন্ধ, বুঝিস্‌নে।।
বছর বছর মাতৃ পূজার ক’রে যাস্‌ অভিনয়
ভীরু সন্তানে হেরি লজ্জায় মাও যে পাষাণময়,
মাকে জিনিতে সাধন-সমরে সাধক ত’কেহ বুঝিস্‌নে।
মাটির প্রতিমা গ’লে যায় জলে, বিজয়ায় ভেসে যায়,
আকাশে-বাতাসে মা’র স্নেহ জাগে অতন্দ্র করুণায়।
তোরই আশে-পাশে তাঁর কৃপা হাসে —
			কেন সেই পথে তাঁরে খুঁজিস্‌নে।।

নাটিকাঃ ‌‘বিজয়া’