মহাবিদ্যা আদ্যাশক্তি পরমেশ্বরী কালিকা। পরমা প্রকৃতি জগদম্বিকা, ভবানী ত্রিলোক-পালিকা।। মহাকালি মহাসরস্বতী, মহালক্ষ্মী তুমি ভগবতী তুমি বেদমাতা, তুমি গায়ত্রী, ষোড়শী কুমারী বালিকা।। কোটি ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু, রুদ্র মা মহামায়া তব মায়ায়, সৃষ্টি করিয়া করিতেছ লয় সমুদ্রে জলবিম্ব-প্রায়। অচিন্ত্য পরমাত্মারূপিণী, সুর-নর চরাচর-প্রসবিনী। নমস্তে শিরে অশুভ নাশিনী, তারা মঙ্গল চন্ডিকা। নমস্তে শিরে অশুভ নাশিনী, তারা মঙ্গল সাধিকা।।
আমার যাবার সময় হলো, দাও বিদায়। মোছ আঁখি, দুয়ার খোলো, দাও বিদায়।। ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে ঝরে ধূলায় ভোর বেলাতে আমায় তারা ডাকে সাথে - আয় রে আয়। সজল করুণ নয়ন তোলো, দাও বিদায়।। অন্ধকারে এসেছিলাম থাকতে আঁধার যাই চ’লে; ক্ষণিক ভালোবেসেছিলেম চিরকালের না-ই হ’লে। হ’লো চেনা হ’লো দেখা নয়ন-জলে রইলো লেখা দূর বিরহের ডাকে কেকা বরষায় ফাগুন স্বপন ভোলো ভোলো,দাও বিদায়।।
ওরে শুভ্রবসনা রজনীগন্ধ্যা বনের বিধবা মেয়ে, হারানো কাহারে খুঁজিস নিশীথ-আকাশের পানে চেয়ে।। ক্ষীণ তনুলতা বেদনা-মলিন, উদাস মূরতি ভূষণবিহীন, তোরে হেরি ঝরে কুসুম-অশ্রু বনের কপোল বেয়ে।। তুইলুকায়ে কাঁদিস রজনী জাগিস সবাই ঘুমায় যবে, বিধাতারে যেন বলিস — দেবতা আমারে লইবে কবে। করুণ শুভ্র ভালোবাসা তোর সুরভি ছড়ায় সারা নিশি ভোর, প্রভাত বেলায় লুটাস ধূলায় যেন-কারে নাহি পেয়ে।।
বহে বনে সমীরণ ফুল জাগানো এসো গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো এসো আঁধার রাতেরি চাঁদ পাতি মায়ারি ফাঁদ এসো এসো মম স্বপন সাধ॥ হৃদয় তিমিরে এসো হৃদ-সায়র দোল লাগানো সাথি মোর ঘুম ভাঙানো॥ বনে মোর ফুলগুলি আছে তব পথ চেয়ে পরান পাপিয়া পিউ পিউ ওঠে গেয়ে তরুণ অরুণ এসো আলোকেরি পথ বেয়ে এসো আমার তনু মন প্রাণ হৃদয় রাঙানো এসো ভুবন ভোলানো কোথা গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো॥
পুরুষ : এলে তুমি কে, কে ওগো তরুণা অরুণা করুণা সল চোখে। স্ত্রী : আমি তব মনের বনের পথে ঝিরি ঝিরি গিরি-নির্ঝরিণী আমি যৌবন-উন্মনা হরিণী মানসলোকে।। পুরুষ : ভেসে যাওয়া মেঘের সজল ছায়া ক্ষণিক মায়া তুমি প্রিয়া স্বপনে আসি' বাজায়ে বাঁশি স্বপনে যাও মিশাইয়া। স্ত্রী : বাহুর বাঁধনে দিই না ধরা — আমি স্বপন-স্বয়ম্বরা সঙ্গীতে জাগাই ইঙ্গিতে ফোটাই তোমার প্রেমের যুঁই-কোরকে। পুরুষ : আধেক প্রকাশ স্ত্রী : আধেক গোপন পুরুষ : আধো জাগরণ স্ত্রী : আধেক স্বপন উভয়ে : খেলিব খেলা ছায়া-আলোকে।।
