বাণী

ওমা	কালী সেজে ফিরলি ঘরে, কচি ছেলের কাজল মেখে।
	একলা আমি কেঁদেছি মা সারাটি দিন ডেকে ডেকে।।
	হাত বাড়ায়ে মা তোর কোলে 
আমি	যাব না আর ‌‘মা’ ‌‘মা’ বলে,
	মা হয়ে তুই ঘুরে বেড়াস্‌ আমায় ধূলায় ফেলে রেখে।।
তোর	আর ছেলেদের অনেক আছে 
	আমার যে মা নাই গো কেহ,
	আমি শুধু তোরেই জানি, যাচি শুধু তোরই স্নেহ। 
তাই	আর কারে যেই ধরিস কোলে —
মোর	দু'চোখ ভ'রে ওঠে জলে (মাগো),
আমি	রাগে-অনুরাগে কাঁদি অভিমানে দূরে থেকে।।

বাণী

নহে নহে প্রিয় এ নয় আঁখি-জল
মলিন হয়েছে ঘুমে চোখের কাজল।।
	হেরিয়া নিশি-প্রভাতে
	শিশির কমল-পাতে
ভাব বুঝি বেদনাতে ফুটেছে কমল।।
	এ শুধু শীতের মেঘে
	কপট কুয়াশা লেগে’
ছলনা উঠেছে জেগে’ এ নহে বাদল।।
	কেন কবি খালি খালি
	হ’লি রে চোখের বালি
কাঁদাতে গিয়া কাঁদালি নিজেরে কেবল।।

বাণী

নাচো শ্যাম-নটবর কিশোর-মুরলীধর অঙ্গ মিশায়ে মম অঙ্গে।
তোমার নাচের শ্রী ফুটুক আমার এই নৃত্য-বিভঙ্গে।।
মম রক্তে বাজুক তব পায়ের নূপুর
আমার কণ্ঠে দাও বাঁশরির সুর,
	তব বাঁশরির সুর।
লীলায়িত হয়ে উঠুক এ তনু তোমার প্রেম-আনন্দ-তরঙ্গে।।
আমার মাঝে হরি, নাচো যবে তুমি আমি নাচি আপনা ভুলি’
			হরি আমি নাচি আপনা ভুলি’
শরম ভরম যায় এই দেহ যমুনায় ছন্দের হিল্লোল তুলি’।
মনে হয় আমি যেন রাসের রাধা জনম জনম আমি নাচি তব সঙ্গে।।

বাণী

আরো কত দূর?
কখন শুনিব তব বাঁশরির সুর?
দেবে কখন ধরা হব স্বয়ম্ভরা
কাঁদাতে জান শুধু তুমি নিঠুর।।

বাণী

নাচে শ্যাম সুন্দর গোপাল নটবর
সুঠাম মনোহর মধুর ভঙ্গে
ঘিরি' সে চরণ ঘুরিছে অগণন
গ্রহ-তারা গোপী সম রঙ্গে।।
হেরিয়া তাহারি নৃত্যের হিল্লোল
পবন উন্মন সাগরে জাগে দোল
সে নাচে বিবশ নিশীথ দিবস
জাগে হিন্দোল আলো-আঁধার তরঙ্গে।।
সে নাচে বৃষ্টি হয় কোটি সৃষ্টি নির্ঝর সম ঝরে ছন্দ
সে নাচ হেরিয়া বন্ধন টুটে গো জাগে অনন্ত আনন্দ।
ষড় ঋতু ঘুরে' ঘুরে' হেরে সেই নৃত্য
প্রেমাবেশে মাতোয়ারা নিখিলের চিত্ত
তাই এ ত্রিভুবন হলো না রে পুরাতন
পেল চির-যৌবন নাচি' তারি' সঙ্গে।।

বাণী

রেশ্‌মি চুড়ির শিঞ্জিনীতে রিমঝিমিয়ে মরম কথা
পথের মাঝে চম্‌কে’ কে গো থম্‌কে’ যায় ঐ শরম-নতা।।
	কাঁখ-চুমা তার কলসি-ঠোঁটে
	উল্লাসে জল উল্‌সি’ ওঠে,
	অঙ্গে নিলাজ পুলক ছোটে
			বায় যেন হায় নরম লতা।।
অ-চকিতে পথের মাঝে পথ-ভুলানো পরদেশিকে
হান্‌লে দিঠি পিয়াস-জাগা পথ্‌বালা এই উর্বশীকে!
	শূন্য তাহার কন্যা হিয়া
	ভর্‌ল বঁধুর বেদ্‌না নিয়া,
	জাগিয়ে গেল পর্‌দেশিয়া
			বিধুর বধূর মধুর ব্যথা।।