বাণী

ছন্দের বন্যা হরিণী অরণ্যা
চলে গিরি-কন্যা চঞ্চল ঝর্ণা
নন্দন-পথ-ভোলা চন্দন-বর্ণা।।
গাহে গান ছায়ানটে, পর্বতে শিলাতটে
লুটায়ে পড়ে তীরে শ্যামল ওড়না।।
ঝিরি ঝিরি হাওয়ায় ধীরি ধীরি বাজে
তরঙ্গ-নূপুর বন-পথ মাঝে।
এঁকেবেকে নেচে যায় সর্পিল ভঙ্গে
কুরঙ্গ সঙ্গে অপরূপ রঙ্গে
গুরু গুরু বাজে তাল মেঘ-মৃদঙ্গে
তরলিত জোছনা-বালিকা অপর্ণা।।

বাণী

আমার সুরের ঝর্না-ধারায় করবে তুমি স্নান।
ওগো বধূ! কণ্ঠে আমার তাই ঝরে এই গান।।
	কেশে তোমার পর্‌বে বালা
	তাই গাঁথি এই গানের মালা,
তোমার টানে ভাব-যমুনায় বহিছে উজান।।
আমার সুরের ইন্দ্রাণী গো, উঠ্‌বে তুমি ব’লে,
নিত্য বাণীর সিন্ধুতে মোর মন্থন তাই চলে।
	সিংহাসনের সুর-সভাতে
	বসবে রানীর মহিমাতে,
সৃজন করি’ সেই গরবে সুরের পরীস্থান।।

বাণী

কানে আজো বাজে আমার তোমার গানের রেশ
নয়নে মোর জাগে তোমার নয়নের আবেশ।।
	তোমার বাণী অনাহত
	দুলে কানে দুলের মত
ও গান যদি কুসুম হত সাজাতাম মোর কেশ।।
নদীর ধারে যেতে নারি শুনে তোমার সুর
মনে আনে তোমার গান করুণ বিধুর।
	শুনি বুনো পাখির গীতি
	জাগে তোমার গানের স্মৃতি
পরান আমার যায় যে ভেসে তোমার সুরের দেশ।।

বাণী

সহসা কি গোল বাঁধালো পাপিয়া আর পিকে
গোলাপ ফুলের টুকটুকে রঙ চোখে লাগে ফিকে।।
	নাই বৃষ্টি বাদল ওলো,
	দৃষ্টি কেন ঝাপসা হলো?
অশ্রু জলের ঝালর দোলে চোখের পাতার চিকে।।
পলাশ-কলির লাল আঁখরে বনের দিকে দিকে
গোপন আমার ব্যথার কথা কে গেল সই লিখে।
	মনে আমার পাইনে লো খেই;
	কে যেন নেই, কি যেন নেই।
কে বনবাস দিল আমার মনের বাসন্তীকে।।

বাণী

রুমঝুম্ রুমঝুম্ রুমঝুম্ ঝুম্‌ঝুম্‌
নূপুর বাজে আসিল রে প্রিয় আসিল রে।।
	কদম্ব-কলি শিহরে আবেশে
	বেণীর তৃষ্ণা জাগে এলোকেশে
হৃদি ব্রজধাম রস-তরঙ্গে প্রেম-আনন্দে ভাসিল রে।।
	ধরিল রূপ অরূপ শ্রী হরি
	ধরণী হলো নবীনা কিশোরী
চন্দ্রার কুঞ্জ ছেড়ে যেন কৃষ্ণ চন্দ্রমা-গগনে হাসিল রে।।
	আবার মল্লিকা-মালতী ফোটে
	বিরহ-যমুনা উথলি’ ওঠে
রোদন ভুলে রাধা গাহিয়া ওঠে সুন্দর মোর ভালোবাসিল রে।।

বাণী

	ওকি ঈদের চাঁদ গো! চলে মদিনারই পথে গো!
যেন	হাসিন্ য়ুসোফ্ ফিরে এলো ফিরদৌস হতে গো।।
	যাহারা তার রূপ দেখে তারা ঝুরিছে আস্‌মানে
	গুল্ ভুলে তাই বুল্‌বুলি চেয়ে আছে গুলিস্তানে।
	বুঝি বেহেশ্‌তেরই বাদশাজাদা এলো সোনার রথে গো।।
	সাদা কবুতরের মত চরণ দুটি ছুঁয়ে,
	গোলাপ চাঁপা উঠছে ফুটে ধূলিমাখা ভুঁয়ে গো।
সেই	চাঁদের মুখে জোছনা সম খোদার কালাম ঝরে
তা’র	রূপ দেখে, তা’র গুণ শুনে মোর মন রহে না ঘরে লো,
আমি	উন্মাদিনী সেই মাদানী নবীর মোহব্বতে গো।।