বাণী

ঝড়ের বাঁশিতে কে গেলে ডেকে হে তরুণ অশান্ত।
গুরু গুরু বাজিল মেঘ-মৃদঙ্গ দুলিয়া উঠিল বন-বনান্ত।।
		সাগর তরঙ্গ মাঝে
		তব মণি-মঞ্জির বাজে,
অম্বর ব্যাপিয়া দোলে ধূলি-গৈরিক তব বসন-প্রান্ত।।
		শাওন-ঘন তব লাবনি
		বিন্দু বিন্দু ঝরি’ ভরিল অবনী,
কৃষ্ণ-চূড়ার রাঙা অঞ্জলি ঝরে চঞ্চল তব চরণে হে কান্ত।।

বাণী

দেখলে তোমায় বাসতে ভালো হয় না কারো ভুল।
রূপ-দীপালি দোদুল দেহ প্রেম ঢুল্ ঢুল্।।
	সোহাগ কথার মায়ার ফাঁদে
	ব্যাকুল হিয়া সদাই কাঁদে,
রই চেয়ে ঐ বদন-চাঁদে চকোর আকুল।।
সুনীল চোখের মায়া দেখি সজল আকাশে,
কাজল-কালো অলক-লতা মেঘেতে ভাসে।
	গোলাপ বনে গেলে সখি
	তোমায় যবে পাশে দেখি,
আমার ভুল হয়ে যায় কোন্‌টি তুমি, কোন্‌টি গোলাপ ফুল।।

বাণী

এসো মা দশভুজা
দশহাতে কল্যাণ আন দশভুজা
মৃত্যুঞ্জয় ঘরনী! মৃতজনে অমৃত দান।
নিরাশ প্রাণে দাও আশা
মূকজনে দাও ভাষা
আঁধার মহিষাসুর বুকে আলোর ত্রিশূল হান॥
দেও জয় বরাভয়, শক্তি, তেজ, প্রেম, প্রীতি
দনুজদলনী! শাপ মুক্ত কর ক্ষিতি,
এলে যদি আর বার মাগো
ভক্তের হৃদি মাঝে জাগো
দুঃখ শোক আর দিও না গো 
		তারিণী সন্তানে ত্রাণ॥

বাণী

একেলা গোরী জল্‌কে চলে গঙ্গাতীর
অঙ্গে ঢুলিয়া পড়ে লালসে অলস সমীর।।
কাঁকনে কলসে বাজে
কত কথা পথ মাঝে
		আঁচল চুমিছে শিশির।।
তটিনীতে চলে কি গো
সোনার বরণ মায়া-মৃগ
		নয়নে আবেশ মদির।।

বাণী

দুঃখ সাগর মন্থন শেষ ভারতলক্ষ্মী আয় মা আয়
কবে সে ডুবিলি অতল পাথারে উঠিলি না আর হায় মা হায়॥
	মন্থনে শুধু উঠে হলাহল
	শিব নাই পান কে করে গরল
অমৃত ভান্ড লয়ে আয় মাগো জ্বলিয়া মরি বিষের জ্বালায়॥
হরিৎ ক্ষেত্রে সোনার শস্যে দুলে না আর তোর আঁচল
শুকায়েছে মাগো মায়ের স্তন্য গাভীর দুগ্ধ নদীর জল।
	চাই না মোক্ষ চাই মা বাঁচিতে
	অক্ষয় আয়ু লয়ে ধরণীতে
চাই প্রাণ চাই ক্ষুধায় অন্ন মুক্ত আলোকে মুক্ত বায়॥

বাণী

নারায়ণী উমা খেলে হেসে হেসে
হিম-গিরির বুকে পাহাড়ি বালিকা বেশে॥
গিরি-গুহা হতে জ্যোতির ঝরনা ছুটে চলে যেন চল ঝরনা,
তুষার-সায়রে সোনার কমল যেন বেড়া ভেসে।
			— খেলে হেসে হেসে।
মাধবী চাঁদ ওঠে কৈলাস-চূড়ে,
খেলা ভুলিয়া যায়, অনিমেষ চোখে চায়
পাষাণ প্রতিমা প্রায় সেই সুদূরে।
সতী-হারা যোগী পাগল শঙ্করে
মনে পড়িয়া তার নয়নে বারি ঝরে,
শিব-সীমন্তনী পাগলিনী প্রায় ‘শিব শিব’ বলে ধায় মুক্তকেশে॥