বাণী

সৃজন ছন্দে আনন্দে নাচো নটরাজ
হে মহকাল প্রলয়–তাল ভোলো ভোলো।।
	ছড়াক তব জটিল জটা
	শিশু–শশীর কিরণ–ছটা
উমারে বুকে ধরিয়া সুখে দোলো দোলো।।
মন্দ–স্রোতা মন্দাকিনী সুরধুনী–তরঙ্গে
সঙ্গীত জাগাও হে তব নৃত্য–বিভঙ্গে।
	ধুতরা ফুল খুলিয়া ফেলি’
	জটাতে পর চম্পা বেলী
শ্মশানে নব জীবন, শিব, জাগিয়ে তোলো।।

বাণী

সে চ'লে গেছে ব'লে কি গো স্মৃতিও হায় যায় ভোলা
ওগো মনে হ'লে তারি কথা আজো মর্মে সে মোর দেয় দোলা।।
	ঐ প্রতিটি ধূলি কণায়
	আছে তার ছোঁওয়া লেগে হেথায়,
আজো তাহারি আসার আশায়, রাখি মোর ঘরেরই সব দ্বার খোলা।।
	হেথা সে এসেছিল যবে
	ঘর ভরেছিল ফুল-উৎসবে,
মোর কাজ ছিল শুধু ভবে তার হার গাঁথা আর ফুল তোলা।।
	সে নাই ব'লে বেশি ক'রে
	শুধু তার কথাই মনে পড়ে,
হেরি তার ছবি ভুবন ভ'‌রে তারে ভুলিতে মিছে বলা।।

বাণী

ঐ হের রসুলে খোদা এলো ঐ।।
গেলেন মদিনা যবে হিজরতে হজরত
মদিনা হলো যেন খুশিতে জিন্নত,
ছুটিয়া আসিল পথে মর্দ ও আওরত
লুটায়ে পায়ে নবীর, গাহে সব উম্মত
ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ।।
হাজার সে কাফের সেনা বদরে,
তিন শত তের মমিন এধারে;
হজরতে দেখিল যেই, কাঁপিয়া ডরে
কহিল কাফের সব তাজিমের স্বরে
ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ।।
কাঁদিয়া কেয়ামতে গুনাহগার সব,
নবীর কাছে শাফায়তী করিবেন তলব,
আসিবেন কাঁদন শুনি সেই শাহে আরব
অমনি উঠিবে সেথা খুশির কলরব
ঐ হের রসুলে খোদা এলো ঐ।।

বাণী

স্বদেশ আমার! জানি না তোমার শুধিব মা কবে ঋণ।
দিনের পরে মা দিন চ’লে যায় এলো না সে শুভদিন।।
		খাই দাই আর আরামে ঘুমাই
		পাগলের যেন ব্যথা-বোধ নাই
ললাট-লিখন বলিয়া এড়াই ভীরুতা, শক্তি ক্ষীণ।
অভাগিনী তুমি, সন্তান তব সমান ভাগ্যহীন।।
কত শতাব্দী করেছি মা পাপ মানুষেরে করি ঘৃণা
জানি মা মুক্তি পাব না তাহার প্রায়শ্চিত্ত বিনা।
		ক্ষুদ্র ম্লেচ্ছ কাঙাল ভাবিয়া
		রেখেছি যাদেরে চরণে দাবিয়া
তাদের চরণ-ধূলি মাখি যদি আসিবে সে শুভদিন
নূতন আলোকে জাগিবে পুলকে জননী ব্যথা-মলিন।।

বাণী

ওমা দনুজ-দলনী মহাশক্তি নমো অনন্ত কল্যাণ-দাত্রী (নমো)।
পরমেশ্বরী মহিষ-মর্দিনী চরাচর-বিশ্ব-বিধাত্রী (নমো নমঃ)।।
		সর্বদেব-দেবী তেজোময়ী
		অশিব-অকল্যাণ-অসুর-জয়ী,
দশভুজা তুমি মা, ভীতজন-তারিণী জননী জগৎ-ধাত্রী।।
দীনতা ভীরুতা লাজ গ্লানি ঘুচাও, দলন কর মা লোভ দানবে;
রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও, মান দাও, দেবতা কর ভীরু মানবে।
		শক্তি বিভব দাও, দাও মা আলোক
		দুঃখ-দারিদ্র্য অপগত হোক্‌,
জীবে জীবে হিংসা, এই সংশয় (মাগো) দূর হোক পোহাক এ দুর্যোগ রাত্রি।।

বাণী

	মমতাজ মমতাজ তোমার তাজমহল —
যেন 	ফিরদৌসের একমুঠো প্রেম,
	বৃন্দাবনের একমুঠো প্রেম, আজো করে ঝলমল।।
	কত সম্রাট হ’ল ধূলি স্মৃতির গোরস্তানে —
	পৃথিবী ভুলিতে নারে প্রেমিক শাহ্‌জাহানে,
	শ্বেত মর্মরে সেই বিরহীর ক্রন্দন –মর্মর গুঞ্জরে অবিরল।।
	কেমনে জানিল শাজাহান – প্রেম পৃথিবীতে ম’রে যায়,
তাই	পাষাণ প্রেমের স্মৃতি রেখে গেল পাষাণে লিখিয়া হায়!
যেন	তাজের পাষাণ অঞ্জলি ল’য়ে নিঠুর বিধাতা পানে
	অতৃপ্ত প্রেম বিরহী আত্মা আজো অভিযোগ হানে!
বুঝি	সেই লাজে বালুকায় মুখ লুকাইতে চায় শীর্ণা যমুনা জল।।