কত আর এ মন্দির দ্বার হে প্রিয় রাখিব খুলি
বাণী
কত আর এ মন্দির দ্বার, হে প্রিয়, রাখিব খুলি' বয়ে যায় যে লগ্নের ক্ষণ, জীবনে ঘনায় গোধূলি।। নিয়ে যাও বিদায়-আরতি, হ'ল ম্লান আঁখির জ্যোতি; ঝরে যায় শুষ্ক স্মৃতির মালিকা-কুসুমগুলি।। কত চন্দন ক্ষয় হ'ল হায়, কত ধূপ পুড়িল বৃথায়; নিরাশায় সে পুষ্প কত ও পায়ে হইল ধূলি।। ও বেদী-তলে কত প্রাণ — হে পাষাণ নিলে বলিদান; তবু হায় দিলে না দেখা — দেবতা, রহিলে ভুলি'।।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর
বাণী
তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! ঐনূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড় তোরা সব জয়ধ্বনি কর!! আস্ল এবার অনাগত প্রলয়–নেশায় নৃত্য–পাগল, সিন্ধু–পারের সিংহ–দ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল! মৃত্যু–গহন অন্ধকুপে, মহাকালের চন্ড–রূপে ধূম্র–ধূপে বজ্র–শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর! ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!! দ্বাদশ রবির বহ্নি–জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন–কটায়, দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়! বিন্দু তাহার নয়ন –জলে সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে কপোল–তলে! বিশ্ব –মায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর ‘পর – হাঁকে ঐ “জয় প্রলয়ংকর!” তোরা সব জয়ধ্বনি কর!! মাভৈঃ, ওরে মাভৈঃ, মাভৈঃ, মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে জরায়–মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ–লুকানো ঐ বিনাশে। এবার মহা–নিশার শেষে আসবে ঊষা অরুণ হেসে করুণ্ বেশে! দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু–চাঁদের কর! আলো তার ভরবে এবার ঘর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
বেদনার বেদীতলে পেতেছি আসন
বাণী
বেদনার বেদীতলে পেতেছি আসন, হে দেবতা! সেথা আর কেহ নাই আমরা দু’জন, কহিব কথা।। বাহির ভুবনে তব কত পূজারি সেথায় মনের কথা কহিতে নারি, তাই হৃদয় দেউলে রেখে’ দিয়েছি আগল — সেথা তোমার চরণ-তলে জানাব গোপন প্রাণের ব্যথা।। পূজা-মন্দির হ’তে এসে চুপে চুপে হে দেবতা! সাজায়েছি প্রিয় রূপে! সবার সমুখে তাই মালা দিতে লাজ পাই — প্রেমের বাসর ঘরে পরাব বরণ-মালা, হব প্রণতা।।