বাণী

আমি নূতন ক’রে গড়ব ঠাকুর কষ্টি পাথর দে মা এনে।
দিব হাতে বাঁশি মুখে হাসি ডাগর চোখে কাজল টেনে।।
মথুরাতে আর যাবে না, মা যশোদায় কাঁদাবে না,
রইবে ব্রজগোপীর কেনা, চলবে রাধার আদেশ মেনে।।
শ্রীচরণ তার গড়ব না মা, গড়লে চরণ পালিয়ে যাবে
নাইবা শুনলে নূপুর-ধ্বনি, ঠাকুরকে তো কাছে পাবে।
চরণ পেলে দেশে দেশে, কুরুক্ষেত্র বাঁধাবে সে —
গন্ধমালা দিসনে মাগো, ভক্ত ভ্রমর ফেলবে জেনে।।
	দেখে কখন করবে চুরি
	একলা ঘরে মরব ঝুরি,
গন্ধমালা দিসনে মাগো, ভক্ত ভ্রমর ফেলবে জেনে।।

বাণী

পলাশ-মঞ্জরি পরায়ে দে লো মঞ্জুলিকা
আজি রসিয়ার রাসে হবো আমি নায়িকা লো মঞ্জুলিকা।।
কৃষ্ণচূড়ার সাথে রঙ্গনে অশোকে
বুলালো রঙের মোহন তুলিকা লো মঞ্জুলিকা।।
	মাদার শিমুল ফুলে
	রঙিন পতাকা দোলে
জ্বলিছে মনে মনে আগুন শিখা লো মঞ্জুলিকা।।

বাণী

ওরে	শুভ্রবসনা রজনীগন্ধ্যা বনের বিধবা মেয়ে,
	হারানো কাহারে খুঁজিস নিশীথ-আকাশের পানে চেয়ে।।
	ক্ষীণ তনুলতা বেদনা-মলিন,
	উদাস মূরতি ভূষণবিহীন,
	তোরে হেরি ঝরে কুসুম-অশ্রু বনের কপোল বেয়ে।।
	তুইলুকায়ে কাঁদিস রজনী জাগিস সবাই ঘুমায় যবে,
	বিধাতারে যেন বলিস — দেবতা আমারে লইবে কবে।
	করুণ শুভ্র ভালোবাসা তোর
	সুরভি ছড়ায় সারা নিশি ভোর,
	প্রভাত বেলায় লুটাস ধূলায় যেন-কারে নাহি পেয়ে।।

বাণী

দোলে প্রাণের কোলে প্রভূর নামের মালা।
সকাল সাঁঝে সকল কাজে জপি সে নাম নিরালা।।
সেই নাম বসন-ভূষণ আমারি
সেই নামে ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারি,
সেই নাম লয়ে বেড়াই কেঁদে
	সেই নামে আবার জুড়াই জ্বালা।।
সেই নামরেই নামাবলী গ্রহ তারা রবি শশী দোলে গগন কোলে।
	মধুর সেই নাম প্রাণে সদা বাজে,
	মন লাগে না সংসার কাজে
		সে নামে সদা মন মাতোয়ালা।।
আদর-সোহাগ মান -অভিমান আপন মনে তার সাথে;
	কাঁদায়ে কাঁদি, পায়ে ধ'রে সাধি,
	কভু করি পূজা, কভু বুকে বাঁধি,
	আমার স্বামী সে ভুবন-উজালা।।

বাণী

আমার কালো মেয়ে রাগ করেছে (মাকে) কে দিয়েছে গালি –
রাগ ক’রে সে সারা গায়ে মেখেছে তাই কালি।।
যখনরাগ করে মোর অভিমানী মেয়ে
আরো মধুর লাগে তাহার হাসি–মুখের চেয়ে –
কেকালো দেউল ক’রলে আলো অনুরাগের প্রদীপ জ্বালি’।।
পরেনি সে বসন–ভূষণ, বাঁধেনি সে কেশ, -
তারি কাছে হার মানে যে ভুবন–মোহন বেশ।
রাগিয়ে তারে কাঁদি যখন দুখে, (দয়াময়ী মা –)
দয়াময়ী মেয়ে আমার ঝাঁপিয়ে পড়ে বুকে;
আমাররাগী মেয়ে, তাই তারে দিই জবা ফুলের ডালি।।

বাণী

রিম্‌ ঝিম্‌ রিম্‌ঝিম্‌ ঝিম্‌ ঘন দেয়া বরষে।
কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে।।
কদম তমাল ডালে দোলনা দোলে
কুহু পাপিয়া ময়ূর বোলে,
মনের বনের মুকুল খোলে
নট-শ্যাম সুন্দর মেঘ পরশে।।
হৃদয়-যমুনা আজ কূল জানে না গো,
মনের রাধা আজ বাধা মানে না গো।
ডাকিছে ঘর-ছাড়া ঝড়ের বাঁশি
অশনি আঘাত হানে দুয়ারে আসি’,
গরজাক গুরুজন ভবনবাসী —
আমরা বাহিরে যাব ঘনশ্যাম দরশে।।

নাটকঃ ‌‘অর্জুন বিজয়’