সখি যায়নি ত শ্যাম মথুরায়
বাণী
সখি যায়নি ত শ্যাম মথুরায়, আর আমি কাঁদব না সই। সে যে রয়েছে তেমনি ঘিরে আমায়। মোর অন্তরতম আছে অন্তরে অন্তরালে সে যাবে কোথায়? আছে ধেয়ানে স্বপনে জাগরণে মোর নয়নের জলে আঁখি-তারায়।। কে বলে সখি অন্ধকার, এ বৃন্দাবনে কৃষ্ণ নাই, সখি গো – আমি অন্তরে পেয়েছি লো, বাহিরে হারিয়ে তায়, যাক্ না সে মথুরায়, যেথা তা’র প্রাণ চায়।। শ্যামে হেরিয়াছি যমুনার কালো জলে, সাগরে, আষাঢ়ের ঘন মেঘে হেরিয়াছি নাগরে। হেরিয়াছি তায় শ্যাম-শস্যে হেমন্তে, পীত-ধড়া হেরি তায় কুস্মি বসন্তে।। এঁকেছিলাম শ্যামের ছবি সেদিন সখি খেলার ছলে, আঁকিনি লো চরণ তাহার, পালায়ে সে যাবে ব’লে। আনিয়া দে আজ সে চিত্রপট আঁকিব লো আজ চরণ তা’র, সে যায়নি মথুরা কাঁদিস নে তোরা আছে আছে শ্যাম হৃদে আমার।।
সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল
বাণী
সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল আমরা কলগীতি চঞ্চল॥ তুফান ঝঞ্ঝা কল্লোল ছলছল ঊর্ধ্বে আমি ঝড় বহি শন্শন্ মম বক্ষে তব মঞ্জির তোলে গো রণন্ আনন্দ চিত্তে মেতে উঠি নৃত্যে গুরু গুরু গুরু বাজে বাদল মাদল॥ তুমি গগন তলে উঠি মেঘের ছলে জল-বিম্বমালা বালা পরাও গলে। তুমি বাদল হাওয়ায় কর আদন যখন মোরে কান্না পাওয়ায়। ধুলি গৈরিক ঝড়ে সাগর নীলাম্বরী জড়াইয়া অপরূপ করে ঝলমল॥
হে বিধাতা হে বিধাতা হে বিধাতা
বাণী
হে বিধাতা! হে বিধাতা! হে বিধাতা! দুঃখ-শোক-মাঝে, তোমারি পরশ রাজে, কাঁদায়ে জননী-প্রায়, কোলে কর পুনরায়, শান্তি-দাতা।। ভুলিয়া যাই হে যবে সুখ-দিনে তোমারে স্মরণ করায়ে দাও আঘাতের মাঝারে। দুঃখের মাঝে তাই, হরি হে, তোমারে পাই দুঃখ-ত্রাতা।। দারা-সুত-পরিজন-রূপে হরি, অনুখন তোমার আমার মাঝে আড়াল করে সৃজন। তুমি যবে চাহ মোরে, লও হে তোদের হ’রে ছিঁড়ে দিয়ে মায়া-ডোর, ক্রোড়ে ধর আপন। ভক্ত সে প্রহ্লাদ ডাকে যবে ‘নারায়ণ’, নির্মম হয়ে তার পিতারও হর জীবন। সব যবে ছেড়ে যায় দেখি তব বুকে হায় আসন পাতা।।
কৃষ্ণ-প্রিয়া লো কেমনে যাবি
বাণী
কৃষ্ণ-প্রিয়া লো! কেমনে যাবি অভিসারে? সে বিরহী রসে মানস সুরধুনী ’পারে।। সে এ পারে রহে না পারাপারের অতীত সে, এ পারে রহে না, এ পারে না, ও পারেও রহে না, কোন পারে রহে না।। গগনে গুরু গুরু মেঘ গরজে অবিরল বাদল ঝর ঝর ঝরে, আঁখি-জলে আঁখি তোর টলমল সই অন্তর দুরুদুরু করে। পথ দেখিবি কেমনে আঁখি-জলে পিছল আঁখি, পথ দেখিবি কেমনে। তোর আঁখি পিছল পথও পিছল পথে যাবি কেমনে, তোর অন্তরে মেঘ, বাহিরে মেঘ পথ দেখিবি কেমনে। একে কুহু-যামিনী তাহে কুল-কামিনী পথে পথে কালনাগিনী (লো), আছে আড় পেতে শাশুড়ি ননদিনী লো। তুই চাতকীর মত কেতকীর মত রাই মেঘ দেখে মত্ত হইলি ভয় নাই, যার প্রেমের পথে বাধা বিধির অভিশাপ — সাপেরে সে ভয় করে না।।
দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে
বাণী
দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে বিশ্বরমা দোলে বিশ্বপতি-কোলে।। গগনে রবি-শশী গ্রহ-তারা দুলে, তড়িত-দোলনাতে মেঘ ঝুলন ঝুলে। বরিষা-শত-নরী দুলিছে মরি মরি, দুলে বাদল-পরী কেতকী-বেণী খোলে।। নদী-মেঘলা দোলে, দোলে নটিনী ধরা, দুলে আলোক নভ-চন্দ্রাতপ ভরা। করিয়া জড়াজড়ি দোলে দিবস-নিশা, দোলে বিরহ-বারি, দোলে মিলন-তৃষা। উমারে লয়ে বু’কে শিব দুলিছে সুখে, দোলে অপরূপ রূপ-লহর তোলে।।