বাণী

তোর কালো রূপ লুকাতে মা বৃথাই আয়োজন।
ঢাকতে নারে ও রূপ, কোটি চন্দ্র তপন।।
	মাখিয়ে আলো আমার চোখে
	লুকিয়ে রাখিস তোর কালোকে,
তোর অতল কালো রূপে মাগো বিশ্ব নিমগন।।
আঁধার নিশীথ সে যেন তোর কালো রূপের ধ্যান
তোর গহন কালোয় গাহন ক’রে জুড়ায় ধরার প্রাণ।
হেরি তোর কালো রূপ স্নিগ্ধ-করা
	শ্যামা হ’ল বসুন্ধরা,
নিবল কোটি সূর্য, তোরে খুঁজে অনুক্ষণ।।

বাণী

মা! আমি তোর অন্ধ ছেলে হাত ধ’রে মোর নিয়ে যা মা।
পথ নাহি পাই যেদিকে চাই দেখি আঁধার ঘোর ত্রিযামা।।
	আমি নিজে পথ চলিতে যাই
	বারে বারে পথ ভুলি মা তাই
মায়া-কূপে পড়ে কাঁদি কোথায় দয়াময়ী শ্যামা।।
মা তুই যবে হাত ধ’রে চলিস্ রয় না পতন-ভয়,
তুই যবে পথ দেখাস্ মা গো সে পথ জ্যোতির্ময়।
	কি হবে জ্ঞান-প্রদীপ নিয়ে সাথে
	বৃথা এ দীপ জন্মান্ধের হাতে
তুই যদি হ’স নির্ভর মোর পথের ভয় আর রবে না মা।।

বাণী

কে	ডাকিলে আমারে আঁখি তুলে'।
	এই প্রভাতে তটিনী-কূলে কূলে।।
ঐ	ঘুমায়ে সকলি, জাগেনি কেউ 
	জল নিতে এখনো আসেনি বউ, 
	শুধু তব নদীতে জেগেছে ঢেউ — 
	মেলেছ নয়ন কানন-ফুলে।।
	যে সুবাস ঝরে ও-এলোকেশে 
	কমলে তা' দিলে নাহিতে এসে', 
	তব তনু-মন দীঘিতে ভেসে' —
	মাতাইছে, মধুপ পথ ভুলে।
ও	শিশির-কপোল-স্বেদ বারি 
	পড়িল ঝরি' নয়নে আমারি, 
	জাগিয়া হেরি রূপ-মনোহারী —
	দাঁড়ায়ে উষসী তোরণ-মূলে।।

বাণী

আমি বাউল হ’লাম ধূলির পথে ল’য়ে তোমার নাম।
আমার একতারাতে বাজে শুধু তোমারই গান, শ্যাম।।
	নিভিয়ে এলাম ঘরের বাতি
	এখন তুমিই সাথের সাথি,
আমি যেখানে যাই সেই সে এখন আমার ব্রজধাম।।
আমি আনন্দ-লহরি বাজাই নূপুর বেঁধে পায়ে,
শ্রান্ত হ’লে জুড়াই তনু বন-বীথি বটের ছায়ে।
	ভাবনা আমার তুমি নিলে
	আমায় ভিক্ষা-পাত্র দিলে
কখন তুমি আমার হবে পূরবে মনস্কাম।।

১. শ্রান্ত হলে জুড়াই তবু বংশী-বটের ছায়ে।

বাণী

তুমি আমার সকাল বেলার সুর
হৃদয় অলস–উদাস–করা অশ্রু ভারাতুর।।
ভোরের তারার মত তোমার সজল চাওয়ায়,
ভালোবাসার চেয়ে সে যে কান্না পাওয়ায়
রাত্রি–শেষের চাঁদ তুমি গো বিদায়–বিধুর।।
তুমি আমার ভোরের ঝরা ফুল
শিশির–নাওয়া শুভ্র–শুচি পূজারিণীর তুল।
অরুণ তুমি, তরুণ তুমি, করুণ তারো চেয়ে
হাসির দেশে তুমি যেন বিষাদ–লোকের মেয়ে
তুমিইন্দ্র–সভার মৌন–বীণা নীরব নূপুর।।

বাণী

হে নট-ভৈরবী আশাবরি।
ওঠো গো অরুণ গান বিসরি’।।
চেয়ে আছ জলভরা নয়নে,
তীব্র নিদাঘ তাপ কোমল করি’।।
পঞ্চমে কোয়েলিয়া ক’য়ে যায়
প্রথম প্রহর দিবা ব’য়ে যায়,
গুরু গঞ্জনা দিতে আসে ঐ —
মুখ ভার করি’ তব ননদিনী তোড়ি।।