বাণী

	ঝর্ঝর নির্ঝর ধারা বহে, পাহাড়ি পথে।
যেন	বন-দেবীর বীণা বাজে ভোর আলোতে।।
	ঝিকিমিকি ঝিকিমিকি প্রভাতী তারা
	শোনে সেই জল-ছলছল সুর তন্দ্রাহারা,
	গ’লে পড়ে আনন্দে তুষার ধারা গিরি-শিখর হ’তে।।
	রঙিন প্রজাপতি অলস মনে,
	হাল্‌কা, পাখায় ফেরে দোপাটি-বনে।
	শোনে মঞ্জীর বনলক্ষ্মীর, কঙ্কণ চুড়ি বাজে নুড়ির তালে,
	পাষাণ-জাগানো ঝরনা-স্রোতে।।

বাণী

	গানগুলি মোর আহত পাখির সম
	লুটাইয়া পড়ে তব পায়ে প্রিয়তম।।
		বাণ–বেঁধা মোর গানের পাখিরে
		তু’লে নিও প্রিয় তব বুকে ধীরে,
	লভিবে মরণ চরণে তোমার সুন্দর অনুপম।।
তারাসুখের পাখায় উড়িতেছিল গো নভে —
তবনয়ন–শায়কে বিঁধিলে তাহাদের কবে।
		মৃত্যু আহত কন্ঠে তাহার
	‌‌একি এ গানের জাগিল জোয়ার —
	মরণ বিষাদে অমৃতের স্বাদ আনিলে নিষাদ মম।।

বাণী

আমার মা ত্বং হি তারা
তুমি ত্রিগুণধরা পরাৎপরা
মা ত্বং হি তারা।
আমি জানি মা ও দীনদয়াময়ী
তুমি দুর্গমেতে দুঃখহরা,
মা ত্বং হি তারা।
তুমি জলে তুমি স্থলে তুমি আদ্যমূলে গো মা,
আছ সর্বঘটে অর্ঘ্যপুটে সাকার আকার নিরাকারা
মা ত্বং হি তারা।
তুমি সন্ধ্যা তুমি গায়ত্রী তুমি জগদ্ধাত্রী গো মা
অকুলের প্রাণকর্ত্রী সদা শিবের মনোহরা।
মা ত্বং হি তারা।।

বাণী

চাঁপার কলির তুলিকায়, কাজল লেখায় শ্রীমতী শ্রীহরির ছবি আঁকে।
রাই ছবি আঁকে পটে গো, যারে হেরে নিতি গোঠে যেতে
যমুনার তটে গো, সে বংশী বাজায়ে মঞ্জির পায়ে
নাচে ছায়া বটে গো, রাই ছবি আঁকে পটে গো।
আঁকিয়া শ‍্যামের মূরতি আঁকিল না রাধা শ্রীচরণ ,
রাধা চরণ আঁকে না, তুলি তুলিয়া রাখে চরণ আঁকে না।
তখন ললিতা বলে- ‘রাধা! রাধা! রাধা!
তুই আঁকলি না কেন চরণ রাধা!’
‘জীবন মরণ যে চরণে বাঁধা, আঁকলি না কেন চরণ রাধা —
বিশ্বের ত্রাণ বৃন্দাবনের ধ‍্যানজ্ঞান ব্রজগোপী সাধা’ —
‘আঁকলি না কেন চরণ রাধা’ —!
তখন রাধা কেঁদে বলে- ‘ওগো ললিতা —
সখি আঁকিলে চরণ যাবে সে পালায়ে আমি হব পদদলিতা।
পলায়ে যাবে গো মথুরায়, আবার পালায়ে যাবে গো —
চির চপল সে মথুরায় আবার পালায়ে যাবে গো —
থাক লুকানো হৃদয়ে শ্রীচরণ।’

বাণী

বৃন্দাবনী কুমকুম আবির রাগে যেন মোর অন্তর বাহির রাঙ্গে।।
		রস-যমুনা যেন বহে
		কভু মধুর মিলনে কভু বিধুর বিরহে,
রস-তৃষাতুরা ব্রজ-নাগরী যেন গাগরিতে সেই রস মাগে।।
যেন মোর কুঞ্জ-দুয়ারে,
ভাব-বিলাসিনী শ্রীমতী আসে অভিসারে।
		যেন মোর নিবিড় ধ্যানে
		মুরলী-ধ্বনি শুনি কানে,
বিরহের বরষায় আশা-নীপ-শাখায় যেন ঝুলনের দোলা লাগে।।

বাণী

(মা)	ওমা তোর ভুবনে জ্বলে এত আলো
	আমি কেন অন্ধ মাগো দেখি শুধু কালো॥
মা	সর্বলোকে শক্তি ফিরিস নাচি
	ওমা আমি কেন পঙ্গু হয়ে আছি
	ওমা ছেলে কেন মন্দ হল জননী যার ভালো॥
	তুই নিত্য মহা প্রসাদ বিলাস কৃপার দুয়ার খুলি
	চির শুন্য রইল কেন আমার ভিক্ষা ঝুলি।
	বিন্দু বারি পেলাম না মা সিন্ধুজলে রয়ে
মা	ও তোর চোখের কাছে পড়ে আছি চোখের বালি হয়ে
	মোর জীবন্মৃত এই দেহে মা চিতার আগুন জ্বালো॥