বল প্রিয়তম বল
বাণী
বল প্রিয়তম বল — মোর নিরাশা-আঁধারে আলো দিতে তুমি কেন দীপ হ’য়ে জ্বল॥ যত কাঁটা পড়ে মোর পথে যেতে যেতে, কেন তুমি তাহা লহ বঁধু বুক পেতে। যদি ব্যথা পাই বুঝি পথে তাই তুমি ফুল বিছাইয়া চল॥ বল হে বিরহী, তুমি আমারে অমৃত এনে দাও কেন নিজে উপবাসী রহি’। মোর পথের দাহন আপন বক্ষে নিয়ে, মেঘ হয়ে চল সাথে সাথে ছায়া দিয়ে। মোর ঘুম না আসিলে কেন কাঁদ চাঁদ হয়ে ঢলঢল॥
গভীর ঘুম ঘোরে স্বপনে শ্যাম-কিশোরে
বাণী
গভীর ঘুম ঘোরে স্বপনে শ্যাম-কিশোরে হেরে’ প্রেমময়ী রাধা। রাধারে ত্যজিয়া আঁধার নিশীথে চন্দ্রার সাথে বাঁধা।(শ্যাম-চাঁদ) যেন চাঁদের বুকে কলঙ্ক গো নির্মল শ্যাম-চাঁদের বুকে চন্দ্রা যেন কলঙ্ক গো।। অরুণ নয়ানে মলিন বয়ানে জাগিল অভিমানিনী (ভাবে) রাধার হৃদয় আধার যাহার সে কেন ভজে কামিনী। শ্রীরাধার মান ভয়হীন, তাই শ্রীরাধা অভিমানিনী, পরমশুদ্ধ প্রেম শ্রীরাধার, নির্ভয় অভিমানিনী।। কৃষ্ণকেও সে ভয় করে না, নির্ভয় অভিমানিনী রাধা বুঝতে নারে গো চির-সরল অমৃতময় গরল কেন হয় বুঝতে নারে গো কাঁপে থরথর সারা কলেবর, ভাবে রাধা একি বিপরীত। প্রেম ভিক্ষু কহে, বুঝি বুঝিবার নহে চঞ্চল শ্যামের রীত।। বোঝা যে যায় না চঞ্চল শ্যামের রীত অবুঝ মনের বোঝা যায় না তাতে তবু কখন সে রাধার, কখন সে চন্দ্রার।।
গীতিচিত্র: ‘অভিমানিনী’
বদ্না গাড়ুতে বসে মুখোমুখী
বাণী
বদ্না গাড়ুতে বসে মুখোমুখী দিব্বি হয়েছে ভাব! বদনা চাহিছে শুক্তুনী আর – চাহিছে গাড়ু কাবাব।। গাড়ু বলে এসো বদনা ভাইটি হোক শুভ চোখাচোখি। তুমি মোর হাতে পেঁয়াজ দাও আর আমি দিই হরতকি।। [শুনে বদনা ভাবে গদগদ হয়ে বলছেন ‘গাড়ুদাদা দাড়িতে একবার টিকিতে বুলাও না’] ও গাড়ু দাদা দাড়িতে বুলাও টিকি – ছুরি ও নাদ্না রাখি দোঁহে এসো আস্নাই করা শিখি।। [গাড়ু তখন ভাব জমিয়ে বলছেন] পাখিদের মাঝে বামুন যে রাম পাখি। কেননা মাথায় উহার জবা-ফুল বাঁধা টিকি দেখ নাকি তাহা দেখ নাকি? [বদনা তখন বদন ব্যাদন করে বলছেন] ও তো টিকি নয় দাদা ও যে তুর্কী ফেজ্। পাখিদের মাঝে উনি মোল্লাজী হ্যাঁদু নয় হরগেজ।। [গাড়ু তখন বদনার পিঠে নল বুলিয়ে বলছেন] হাতে দিব ক্ষীর নাড়ু ভাই, ছেড়ে দাও খাওয়া ঐ বড়টা। [শুনে বদনা অবাক – বল্লে] রে মদনা তাহলে কি দিয়ে খাইব পরটা? গাড়ু বলে, আহা দোস্তীর তরে ছাড়িতে হয়। এসা দাদা এসো জড়াজড়ি করি বদ্না গড়ায়ে কয়।। জড়াজড়ি থেকে গড়াগড়ি দুই নলে প্রেমবারি ঝরে। সেই ভাব দেখে বিদেশী কেটলী রাগে টগবগ করে।।
‘ভাই ভাই এক-ঠাঁই’
ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার গাইব কি আর
বাণী
ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার গাইব কি আর এমন গান! সেদিন দুয়ার ভেঙে আসবে জোয়ার মরা গাঙে ডাকবে বান।। তোরা স্বার্থ-পিশাচ যেমন কুকুর তেমনি মুগুর পাস রে মান। সেই কলজে চুঁয়ে গলছে রক্ত দলছে পায়ে ডলছে কান।। ওরে তোরা করিস লাঠালাঠি সিন্ধু-ডাকাত লুটছে ধান! তাই গোবর-গাদা মাথায় তোদের কাঁঠাল ভেঙে খায় শেয়ান।। ছিলি সিংহ ব্যাঘ্র, হিংসা-যুদ্ধে আজকে এমন ক্ষিন্ন প্রাণ। মুখের গ্রাস ঐ গিলছে শেয়াল, তোমরা শুয়ে নিচ্ছ ঘ্রাণ।। তোরা বাঁদর ডেকে মানলি সালিশ ভাইকে দিতে ফাটলো প্রাণ! সালিশ নিজেই, ‘খা ডালা সব’, বোকা তোদের এই দেখান।। তোরা নাক কেটে নিজ পরের যাত্রা ভঙ্গ করিস বুদ্ধিমান তোদের কে যে ভালো কে যে মন্দ সব শিয়ালই এক সমান।। শুনি আপন ভিটের কুকুর রাজা, তার চেয়েও হীন তোদের প্রাণ। তাই তোদের দেশ এই হিন্দুস্থানে নাই তোদেরই বিন্দু স্থান।। আজ সাধে ভারত-বিধাতা কি চোখ বেঁধে ঐ মুখ লুকান! তোরা বিশ্বে যে তার রাখিসনে ঠাঁই কানা গরুর ভীন বাথান।। তোরা করলি কেবল অহরহ নীচ কলহের পরল পান। আজ বুঝলি নে হায় নাড়ি-ছেড়া মায়ের পেটের ভায়ের টান।।
আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে
বাণী
আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে। সকলি দিয়াছি মোর ঠাকুরের রাঙা চরণের তলে॥ মোর দেহ-প্রাণ, জাতি কুল মান, লজ্জা ও গ্লানি আর অভিমান; (আমি) দিছি চিরতরে জলাঞ্জলি গো কালো যমুনার জলে॥ মোরে যদি কেহ ভালোবাসে আজ জল আসে আঁখি ভ’রে। মোর ছল ক’রে সে যে ভালোবাসে মোর শ্যামসুন্দরে। মোরে না বুঝিয়া কেহ করিলে আঘাত কেঁদে বলি, ওরে ক্ষমা করো নাথ্ বৃন্দাবনে যে প্রেম মধুর হয় আঘাত নিন্দাছলে॥