বাণী

আমার	দুখের বন্ধু, তোমার কাছে চাইনি ত’ এ সুখ।
আমি	জানিনি ত বুকে পেয়েও কাঁদবে এ মন বুক।।
		আমার শাখায় যবে ফোটেনি ফুল
		আমি চেয়েছি পথ আশায় আকুল,
আজ	ফোটা ফুলে কাঁদে কেন কুসুম ঝরার দুখ।।
প্রিয়	মিলন-আশায় ছিনু সুখে ছিলে যবে দূর,
আজ	কাছে পেয়ে পরান কাঁদে বিদায়-ভয়াতুর।
		এ যে অমৃতে গরল মিশা
		প্রাণে কেবলি বাড়িছে তৃষা,
আমার	স্বর্গে কেন মলিন ধরার বেদন জাগরূক।।

বাণী

	যাও যাও তুমি ফিরে এই মুছিনু আঁখি
	কে বাঁধিবে তোমারে হায় গানের পাখি॥
মোর	আজ এত প্রেম আশা এত ভালোবাসা
	সকলি দুরাশা আজ কি দিয়া রাখি॥
	তোমার বেঁধেছিল নয়ন শুধু এ রূপের জালে
	তাই দুদিন কাঁদিয়া হায় এ বাঁধন ছাড়ালে।
	আমার বাঁধিয়াছে হিয়া আমি ছাড়াব কি দিয়া
	আমার হিয়া তো নয়ন নহে ও সে ছাড়ে না কাঁদিয়া,
	ওগো দুদিন কাঁদিয়া।
	এই অভিমান জ্বালা মোর একেলারি কালা
	ম্লান মিলনেরি মালা দাও ধূলাতে ঢাকি॥

বাণী

দোলে নিতি নব রূপের টেউ-পাথার ঘনশ্যাম তোমারি নয়নে।
আমি হেরি যে নিখিল বিশ্বরূপ-সম্ভার তোমারি নয়নে॥
		তুমি পলকে ধর নাথ সংহার-বেশ
		হও পলকে করুণা-নিধান পরমেশ।
নাথ ভরা যেন বিষ অমৃতের ভান্ডার তোমার দুই নয়নে॥
		ওগো মহা-শিশু, তব খেলা-ঘরে
		একি বিরাট সৃষ্টি বিহার করে,
সংসার চক্ষে তুমিই হে নাথ, সংসার তোমারি নয়নে॥
		তুমি নিমেষে রচি নব বিশ্বছবি
		ফেল নিমেষে মুছিয়া হে মহাকবি,
করে কোটি কোটি ব্রহ্মান্ড ভুবন-সঞ্চার তোমারি নয়নে॥
		তুমি ব্যাপক ব্রহ্ম চরাচরে
		জড় জীবজন্তু নারী-নরে,
কর কমল-লোচন, তোমার রূপ বিস্তার হে আমারি নয়নে॥

বাণী

বরষ গেল, আশ্বিন এলো, উমা এলো কই
শূন্য ঘরে কেমন করে পরান বেঁধে রই।।
‌	ও গিরিরাজ! সবার মেয়ে
	মায়ের কোলে এলো ধেয়ে,
আমারই ঘর রইল আঁধার, আমি কি মা নই?
নাই শাশুড়ি ননদ উমার, আদর করার নাই (কেহ)
মা অনাদরে কালী সেজে বেড়ায় নাকি তাই।
	মোর গৌরী বড় অভিমানী,
	সে বুঝবে না মার প্রাণ-পোড়ানী;
আনতে তারে সাধতে হবে তার যে স্বভাব ঐ।।

বাণী

(মা)		আয় মা উমা! রাখ্‌ব এবার ছেলের সাজে সাজিয়ে তোরে।
(ওমা)		মা’র কাছে তুই রইবি নিতুই, যাবি না আর শ্বশুর ঘরে।।
				মা হওয়ার মা কী যে জ্বালা
				বুঝবি না তুই গিরি-বালা
		তোরে না দেখলে শূন্য এ বুক কী যে হাহাকার করে।।
		তোরে টানে মা শঙ্কর-শিব আসবে নেমে জীব-জগতে,
		আনন্দেরই হাট বসাব নিরানন্দ ভূ-ভারতে।
				না দেখে যে মা, তোর লীলা
				হ’য়ে আছি পাষাণ-শীলা
		আয় কৈলাসে তুই ফির্‌বি নেচে বৃন্দাবনের নূপুর প’রে।।

বাণী

মরম-কথা গেল সই মরমে ম’রে।
শরম বারণ যেন করিল চরণ ধ’রে।।
ছল ক’রে কত শত সে মম রুধিত পথ
লাজ ভয়ে পলায়েছি সে ফিরেছে ব্যথাহত
অনাদরে প্রেম-কুসুম গিয়াছে ম’রে।।
কত যুগ মোর আশে ব’সে ছিল পথ-পাশে
কত কথা কত গান জানায়েছে ভালোবেসে
শেষে অভিমানে নিরাশে গিয়াছে স’রে।।